নিজস্ব প্রতিবেদক: সাতক্ষীরায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আমন ধানের চাষ হলেও কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। ফলে বাম্পার ফলনেও কৃষকের মাথায় হাত। শেষ মুহূর্তে কারেন্ট পোকার আক্রমণে ধান গাছে পচন ধরে শুকিয়ে মারা যাচ্ছে।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, চলতি ২০২৩-২৪ মৌসুমে জেলার সাতটি উপজেলায় ২ লাখ ৫২ হাজার ৫৯০ টন চাল উৎপাদন লক্ষ্য নিয়ে ৮৮ হাজার ৭৬৮ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ করা হয়েছে। যা গত মৌসুমের তুলনায় ২৪৩ হেক্টর পরিমান বেশি। গেল মৌসুমে জেলায় রোপা আমনের আবাদ হয়েছিলো ৮৮ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমিতে। যা থেকে ২ লাখ ৪৯ হাজার ২৫৭ টন আমন উৎপাদন হয়।

কৃষকরা জানায়, বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার করেও তেমন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। তাছাড়া পাকা ধানে এমন কারেন্ট পোকার আক্রমণ আগে কখনো দেখেননি তারা। এদিকে কারেন্ট পোকা দমনের জন্য জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আমন চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আমন ধান চাষি রানা ইসলাম ও জাকির হোসেন জানান, তারা চলতি মৌসুমে ৮ বিঘা পরিমান জমিতে রোপা আমন চাষ করেছেন। ধানের ফলনও খুবই ভালো। কিন্ত ক্ষেতে ধান পাকা শুরু হওয়ার সাথে সাথে কারেন্ট পোকার আক্রমণে অধিকাংশ ধান নষ্ট হয়ে গেছে।

তারা আরও জানান, গত দুই দিনে প্রায় ২০ শতাংশ জমির ধান কর্তন করেছেন। কিন্তু কারেন্ট পোকা লেগে ৫০ থেকে ৫৫ শতাংশ ধান চিটা হয়ে গেছে। এতে চলতি মৌসুমে ১০০ মণ ধান পাবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। জমি চাষ, বীজতলা, চারা রোপণ, সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের মজুরি দিয়ে প্রতি বিঘাতে ৮ থেকে সাড়ে ৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ হিসাব অনুযায়ী চলতি মৌসুমে ১৫ বিঘাতে ১ লাখ ২০ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা উৎপাদন খরচ হয়েছে। কিন্তু ধানের যে অবস্থা তাতে উৎপাদন খরচটা হয়তো কোনো রকম উঠে আসবে।

কৃষকরা জানান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুযায়ী পোকা দমনের জন্য প্লেনাম, তড়িত ও মিমসিনসহ বিভিন্ন প্রকার কীটনাশক ব্যবহার করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, সাতক্ষীরা জেলার বেশ কিছু এলাকাতে বিচ্ছিন্নভাবে কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। তবে সকল উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মাঠ পর্যায়ে যেয়ে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়ার জন্য।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ/২০২৩