কক্সবাজার টেকনাফে গরুর মাংসের কেজি ১০০০ হাজার টাকায় ঠেকেছে। স্বাভাবিকভাবে প্রতিকেজি মাংসের দাম ছিল ৬৫০ টাকা। তবে, একলাফে প্রথমে ২০০ টাকা, পরে ৩০০ টাকা বেশি হওয়ায় বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ।

টেকনাফ সদর পল্লানপাড়ার এক বাসিন্দা আসেন গরুর মাংস কিনতে। এসেই দেখেন ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। মাংসের দাম শুনে বাসায় ফিরে যান সেই বাসিন্দা। ছেলে-মেয়েরা গরুর মাংস খাওয়ার আবদার করলে স্ত্রী সাবিনার কাছ থেকে আরও কিছু টাকা নিয়ে বাজারে যান রমজান আলী। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতাও বেড়ে যায়। দাঁড়াতে হয় লাইনে। মাংস কিনতে গেলে কসাই বলেন একদাম এক হাজার টাকা।

পড়তে পারেন: এককেজি মাংসের দাম ৯০০ টাকা!

টেকনাফের ইয়াবা কারবারিদের কাছে টাকার মূল্যয়ন বা মান কম তাই তারা যেই দামেই হোক মাংস কিনতে গায়ে বাঁধছে না বলে অভিযোগ সেই বাসিন্দার। তিনি জানান, একজন ১০ কেজি করে মাংস নিয়ে যাচ্ছে। যার কারণে মাংসের সংকট হচ্ছে। এই সুযোগে মাংস ব্যবসায়ীরা মাংসের কেজি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি করছে। এতে আমাদের মতো দিনমজুররা মাংস কেনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে টেকনাফের বাজারে গরুর মাংসের দাম কেজিতে ৩০০ টাকা বেড়েছে । শুক্রবার ৯০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়েছে গরুর মাংস। ব্যবসায়ীরা জানান, মিয়ানমার থেকে গরু আমদানি বন্ধ থাকায় ও মাংসের চাহিদা বেশি হাওয়ায় দাম বেড়েছে।

পড়তে পারেন: আন্তর্জাতিক বাজারে গরুর মাংসের দাম সর্বোচ্চ, বেড়েছে দুধেরও

টেকনাফের হ্নীলার মাংস ব্যবসায়ী কুরবান আলী বলেন, দুই দিন আগে গরুর মাংসের কেজি ছিল ৬০০ টাকা। চাহিদা বাড়লে এখানে দাম কিছুটা বাড়ে। প্রথমে ২০০ টাকা, পরে ৩০০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস।

মাংস কিনতে এসেছেন স্কুলশিক্ষক শহিদুল ইসলাম। শবে বরাত উপলক্ষে আত্মীয়দের দাওয়াত দেওয়ায় বেশি মাংস কিনতে হচ্ছে তাকে। পাঁচ কেজি মাংস কিনতে তার প্রতি কেজিতে ২৫০ টাকা বেশি খরচ হওয়ায় চটেছেন দোকানদারের ওপর।

আরেক মাংস ব্যবসায়ী মো. মুরাদ বলেন, আগে এক কেজির কম মাংস কিনতে আসা ক্রেতা ছিল না। এখন এ সংখ্যা বেড়েছে। অনেকে লজ্জায় আসেন না।

পড়তে পারেন: ফের দাম বাড়লো ব্রয়লার-গরুর মাংস, চাল, তেল, চিনি, ডিমের

টেকনাফের হোয়াইক্যং বাজারে আধা কেজি মাংস কিনতে এসেছেন বাজারের পাহারাদার নাগু মিয়া। তিনি বলেন, গত কোরবানির ঈদে (ঈদুল আজহা) মাংস উপহার পেয়েছিলাম। এরপর আর গরুর মাংস খাইনি। বাচ্চাদের কথা চিন্তা করে আধা কেজি কেনার চেষ্টা করছি। কিন্তু কসাই আধা কেজি বিক্রি করতে চান না।

তিনি বলেন, স্ত্রী ও দুই ছেলে–মেয়ে মিলে চারজনের সংসার আমার। ইয়াবা কারবারিদের কাছে অনেক টাকা থাকায় তাদের গায়ে লাগে না। কিন্তু আমরা সারাদিন মাথার ঘাম মাটিতে ফেলে টাকা উপার্জন করি। তাদের গায়ে না লাগলেও আমাদের মতো দিনমজুরদের গায়ে লাগে।

পড়তে পারেন: চলুন জেনে নিই মাংস বিরিয়ানি রেসিপি

বাজারের ভেতর একটি মাংসের দোকান আছে। বাজারের বাইরের দোকানগুলোয় ৮৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও নামবিহীন ওই দোকানে এক হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। দোকানের বিক্রয়কর্মী বলেন, আমাদের দোকানের মাংসে পানি নেই। ওজনেও সঠিক পাবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজ চৌধুরী বলেন, আমাদের টিম প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিং করে যাচ্ছে। আমাদের কাছে সঠিক অভিযোগ আসলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।

সূত্র: ঢাকা পোস্ট

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ