সাতক্ষীরায় ঘের ভেসে ক্ষতিগ্রস্ত মাছ চাষিরা
সাতক্ষীরায় ঘের ভেসে ক্ষতিগ্রস্ত মাছ চাষিরা

ভারি বৃষ্টিতে মাছের ঘের ভেসে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাতক্ষীরার কয়েক হাজার মাছ চাষি। একইসাথে বাজারে মাছের সরবরাহ কমায় বেড়েছে সব ধরনের মাছের দাম। উৎপাদন কমায় এবার প্রভাব পড়তে পারে চিংড়ি রপ্তানিতেও। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করছে মৎস্য বিভাগ।

সাতক্ষীরার বিনেরপোতা মাছ বাজার। এখানকার শতাধিক মাছের আড়তে তালা, কলারোয়া, সদর, আশাশুনি ও দেবহাটা উপজেলা থেকে মাছ বিক্রি করতে আসেন ঘের মালিকরা। তেমনি ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশালসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্রেতারা আসেন মাছ কিনতে।

প্রতিদিন সকাল থেকে এই মাছ বাজারে হাক ডাকে বিক্রি হয় কয়েক কোটি কোটি টাকার মাছ। ক্রেতা-বিক্রেতার উপচে পড়া ভিড়ে সরগরম থাকে এই বাজার। তবে বর্তমানে আড়তগুলোতে মাছ কম আসায় ব্যস্ততা কমেছে আড়তের কর্মীদের।

আড়তের এক কর্মী বলেন, ‘এখন আমরা অধিকাংশ সময় বসে থাকি। এবং বসে বসে আমাদের সময় পার করতে হয়। এ বছর যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, চাষিদের এই ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ছয় থেকে সাত বছর সময় লাগবে।’

একই অবস্থা জেলার অধিকাংশ মাছ বাজারগুলোতে। বাজারে মাছের সরবরাহ কমায় বেড়েছে দাম। গত মাস থেকে অতিবৃষ্টি ও বেতনা নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় জেলার তিন উপজেলার ৪০টি গ্রাম। এসব এলাকার অধিকাংশ ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন হাজার হাজার মাছ চাষি।

একজন মাছ চাষি বলেন, ‘আগে প্রতিদিন আমার এখান ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা বেচাকেনা করতাম। এখন আমাদের এক থেকে দেড় লাখ টাকাই শেষ। কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছি না। এভাবে চললে তাদের না খেয়ে মরতে হবে।’

জেলা মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তা জানালেন, ক্ষতিগ্রস্ত মাছ চাষিদের তালিকা করা হচ্ছে। নতুন করে মাছ চাষে পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।

সাতক্ষীরার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা চাষিদের তালিকা করেছি। তালিকা করে ওপরে পাঠানো হয়েছে। যদি সরকার থেকে তাদের কোনো ধরনের আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করা হয় তাহলে যেসকল চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারা পাবে।’

জেলা মৎস্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর মাসে অতিবৃষ্টিতে ভেসে গেছে পাঁচ হাজারের বেশি মৎস্য ঘের ও তিন হাজার পুকুর। আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৬৬৩কোটি টাকা। এই ক্ষতি পুশিয়ে উঠতে চাষিদের কয়েক বছর সময় লাগবে।

এখন টিভি

আআ/এগ্রিকেয়ার