জলাভূমির জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে প্রয়োজন

ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: জলাভূমির জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে প্রয়োজন সরকারী-বেসরকারী সংস্থাগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলছেন, বিশেষ করে ভুমি মন্ত্রণালয়, বন বিভাগ, মৎস্য অধিদপ্তর, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও হাওর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমন্বিত প্রয়াস প্রয়োজন।

জলাভূমি, খাল-বিল, নদী-নালা, সমুদ্র তীরবর্তি অঞ্চল অবৈধ দখল, অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ নির্মান, জলবায়ুর প্রভাব প্রতিরোধে এবং পরিবেশ বিপর্যয়রোধে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার পক্ষে মতামত প্রদান করেন বক্তারা।

বাংলাদেশ প্রাণিবিজ্ঞান সমিতির ২১তম আন্তর্জাতিক দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন ও বার্ষিক সাধারণ সভায় এসব কথা বলেন সংশ্লিষ্টরা। গত ৭-৮ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সভা ও সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী মো: নূরুল ইসলাম সুজন।

বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারতের প্রাণিবিজ্ঞান সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. বি.এন পান্ডে; মো: আমানুল্লাহ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান, র‌্যাংগস গ্রুপ; মো: শফিউল আলম চৌধুরী, প্রধান বন সংরক্ষক, বন বিভাগ; এবং ড. মিহির কান্তি মজুমদার, চেয়ারম্যান, পল্লি সঞ্চয় ব্যাংক; এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু।

অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান,  উপাচার্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সন্মোলনের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়  “Conservation  of Wetland Biodiversity in Bangladesh” উপস্থাপনা করেন বিশিষ্ট প্রাণিবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. মো: আব্দুর রব মোল্লা।

বক্তব্য রাখেন প্রাণিবিজ্ঞান সমিতির সভাপতি প্রফেসর গুলশান আরা লতিফা, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর হুমায়ুন রেজা খান ও সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. তপন কুমার দে।

বাংলাদেশ প্রাণিবিজ্ঞান সমিতির সারাদেশের কলেজ ও বিশ্বাবিদ্যালয় পর্যায়ে ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে ৬ষ্ঠ বারের মত প্রানিবিদ্যা অলিম্পিয়াড সফলতার সাথে সম্পন্ন করেন প্রফেসর খান হাবিবুর রহমান, আহবায়ক, প্রানিবিদ্যা অলিম্পিয়াড কমিটি।

এছাড়াও সম্মেলনে চারটি মূল প্রতিপাদ্য বিষয় অধীনে দেশে বিদেশের প্রথিতযশা বিজ্ঞানীগণ ৬২ টি গবেষণা প্রবন্ধ ও আমন্ত্রিত বিজ্ঞানীগণ ৮টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। প্রফেসর ডঃ নিয়ামুল নাসের, আহবায়ক, সেমিনার কমিটি। সম্মেলনে দেশ-বিদেশের পাঁচশতাধিক প্রাণিবিজ্ঞানী ও গবেষক উপস্থিত ছিলেন।

বক্তারা বলেন, মানুষের হস্তক্ষেপ, জবরদখল, কৃষিজমির সম্প্রসারণ, ব্যাপকভাবে মৎস্য আহরণ, বাঁধ ও রাস্তাঘাট নির্মাণ, বনভূমি উজাড়, বন্যপ্রাণী শিকার ও পাচার এবং পরিবেশ দূষণের কারণে জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ জলাভূমির অস্তিত্ব আজ হুমকির সম্মুখীন।

তারা বলেন, কৃষি জমি ও জলাভূমি পরস্পরের সম্পুরক ও পরিবেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কৃষি জমিতে অধিক ফসল উৎপাদনের জন্য যথেচ্ছভাবে রাসায়নিক সার ও ক্ষতিকর কীটনাশক প্রয়োগ করা হচ্ছে।

কল-কারখানার প্লাস্টিক, রাসায়নিক তরল ও কঠিন বর্জ্য জলাভূমিতে ফেলা হচ্ছে। এত করে জলাভূমির জীববৈচিত্র্য দারুনভাবে ধ্বংস হচ্ছে।

জলাভূমি ধ্বংসের কারণে অনেক প্রজাতির মাছ, পাখী, স্তন্যপায়ী, সরীসৃপ ও উভচর প্রাণী বিলুপ্ত ও মহাবিপন্ন হয়ে পড়ছে। পরিবেশ দূষণ ও জলাভূমি ধ্বংসের কারণে মাছের পাশাপাশি পরিযায়ী পাখির সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। সবশেষে সম্মেলনে একাধিক সুপারিশ তুলে ধরা হয়।

জলাভূমির জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে প্রয়োজন সরকারী-বেসরকারী সংস্থাগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ এমন মন্তব্যের সাথে সম্মেলনে উপস্থিত সবাই একমত পোষণ করেন।