দিনাজপুরে আগাম জাতের আমন ধান কাটা শুরু, কৃষকেরা লাভবান
দিনাজপুরে আগাম জাতের আমন ধান কাটা শুরু, কৃষকেরা লাভবান

দিনাজপুর জেলার ১৩টি উপজেলায় কৃষকেরা উৎসবমুখর পরিবেশে আগাম জাতের আমন ধান কাটার কাজ শুরু করেছেন। জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ নুরুজ্জামান মিয়া জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত জেলার ৮ ভাগ ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। তিনি সরজমিনে বীরগঞ্জ, কাহারোল, খানসামা ও বিরল উপজেলাগুলোতে ধান কর্তনের অগ্রগতি পরিদর্শন করেছেন।

তিনি বলেন, চলতি বছর আমন মৌসুমে ২ লক্ষ ৭২ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে এ ধান চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে আগাম জাতের হাইব্রিড ব্রি-ধান অর্জিত হয়েছে ৩৭ হাজার ৭’শ হেক্টর জমিতে।

গত এক সপ্তাহ থেকে ১৩ টি উপজেলাতেই আগাম জাতের আমন ধান কর্তন কৃষকেরা মহা উৎসবে শুরু করেছে। কৃষকেরা আগাম জাতের ধান কর্তন করে ওই জমিতে পুনরায় সরিষা ও আলু চাষ করবেন। ধান কর্তনের পর, ওই জমিতে সরিষা ও আলু লাগানোর প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়ে গেছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মীদের সাথে পরামর্শ করে জেলার অনেক উপজেলাতে আগাম জাতের আলু রোপন শুরু হয়ে গেছে। সেই সাথে সরিষার চাষ করা হচ্ছে। উঁচু মানের জমি গুলোতে আলু এবং কিছুটা নিচু জমিতে সরিষার চাষ করছেন কৃষকেরা।

জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান জানান, জেলার সবচেয়ে দূরবর্তী উপজেলা ঘোড়ারহাট। এ উপজেলায়, চলতি আমন মৌসুমে ২ হাজার ৪২৬ হেক্টর জমিতে হাইব্রীড সহ আগাম জাতের আমন ধানের আবাদ হয়েছে।মাঠ থেকে ধান কাটা মাড়াই সহ বাজার জাত করনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।

আরো পড়ুন:  এক হাজার বস্তায় আদা চাষে খরচ ৪৪ হাজার টাকা, বিক্রি ২ লাখের বেশি

দেশের খাদ্যে স্বয়ংসর্ম্পূণ ও উদ্বৃত্ত কয়েকটি জেলার মধ্যে দিনাজপুর একটি। উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে উচ্চ ফলনশীল ফসল উপাদনে ও উদ্বৃত্ত কয়েকটি উপজেলার মধ্যে ঘোড়াঘাট উপজেলা এগিয়ে রয়েছে। এবার অন্যান্য ফসলের ন্যায় আগাম জাতের ধান আবাদ ভাল হয়েছে। অতিরিক্ত ফসল হিসেবে এসব জমিতে সরিষা, আলুও শাক সবজী আবাদের জন প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন কৃষকেরা। বন্যা ও প্রাকৃতিক দূর্যোগ এবং আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার আগাম জাতের আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।

আগাম জাতের ধান কাটায় খাদ্য চাহিদা পূরণে বাজারে অধিক মূল্য ও কাঁচা খড় বিক্রিতে অধিক দামের মাধ্যমে কৃষকরা লাভ বান হচ্ছেন। একই জমিতে শীত কালীন শবজি,ভুট্টা ও আলু আবাদের প্রস্তুতি নিয়ে কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। উপজলার সিংড়া ইউনিয়নের র্ভনাপাড়া গ্রামের কৃষক মো. মাসুদ জানান, তিনি এক একর জমিতে লাল তীর,জটাপাড়ী, আগাম জাতের আমন ধান রোপন করেছেন। বিঘা প্রতি ১৮ থেকে ২০ মন ধানের ফলন পেয়েছেন। গুয়াগাছী গ্রামের মো. আ. হামিদ জানান, তিনি দেড় একর জমিতে লাল তীর জাতের আমন ধান রোপন করেছেন।তিনি বিঘা প্রতি ২০ মন করে ধানের ফলন পেয়েছেন।

কৃষকরা বলেন, আগাম জাতের ধান ঘরে তুলতে পেরে খাদ্য চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বাজারে ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা মন দরে কাঁচা ধান বিক্রি করতে পারছেন।আগাম জাতের ধান বিক্রি করে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছে। ধানের কাঁচা খড় বিক্রি করে ভালো মূল্য পাচ্ছেন। ধান কর্তনের পর ওই জমিতে ভুট্টা,আগাম জাতের আলু, ফুল কপি,বাধাকপি সহ শীত কালীন সবজি রোপনের প্রস্তুতি শুরু করেছেন।

বাসস

আআ/এগ্রিকেয়ার