মেহেদী হাসান, জেলা প্রতিনিধি, রাজশাহী, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: উত্তরাঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম আমের বাজার রাজশাহীর বানেশ্বরে। এই বাজার ফজলি আমের হিসেবে বিখ্যাত হলেও এখন দেখা নেই ফজলি আমের। বেঁচাকেনা হচ্ছে গোপালভোগ, হিমসাগর (খিসারিপাত), ল্যাংড়া, লখনাসহ বিভিন্ন গুটি জাতের আম। মানভেদে এসব আমের দাম ঠিক থাকলেও দামে ধ্বস নেমেছে গুটি জাতের আমে।২৫ কেজির এক ক্যারেট গুটি জাতের আম ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা।
মঙ্গলবার ৯ জুন ২০২০ বানেশ্বর বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় আমের মোকামগুলো থেকে আম কিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। আমচাষি ও ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারে আসতে শুরু করেছে ল্যাংড়া ও হিমসাগর আম। বিগত বছরের তুলনায় চলতি বছরে আমের দাম বেশ ভালো। অনলাইনেও আম বিক্রি করছেন তারা। এসব আমের মধ্যে, ল্যাংড়া প্রতি মন (৪০ কেজি) ১৫০০ থেকে ১৭০০ টাকা, হিমসাগর ২০০০ থেকে ২২০০ টাকা, গোপালভোগ ২৭০০ থেকে ২৮০০ টাকা, লখনা ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, গুঠি জাতের আম ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
রাজশাহীর দূর্গাপুরের আম ব্যবসায়ী সাহেব আলী এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে বলেন, আমের দাম ভালোই আছে। কিন্তু আঁঠি জাতের আম কেউ কিনতে চাচ্ছে না। প্রতিবছর প্রাণ কোম্পানি আম কিনত, এবার আসেনি। আমি ২০ ক্যারেট আঁঠি আম নিয়ে আসছি, বিক্রি হয়নি পাঁচ ক্যারেটও। ২৫ কেজির এক ক্যারেট আম দাম বলছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। ল্যাংড়া, গোপালভোগ, হিমসাগর,লখনা আমের দাম আগের তুলনায় ভালো’। ল্যাংড়া ১৭০০ টাকা মন ১০ মন বিক্রি করলাম’।
দূর্গাপুরের আমচাষি জাহিদুল ইসলাম এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে জানান, আগের বছরের তুলনায় আমের দাম ভালোই পাচ্ছি। করোনায় ভেবেছিলাম আম কেনার লোক থাকবে না, লোকসান হবে। কিন্তু, সে ভয় কেটে গেছে। পুলিশ রাস্তায় ধরেনা, বরং সহযোগিতা করছে।
তিনি আরোও বলেন, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গার বড় বড় পাইকাররা তেমন আসছেন না। এখন বিক্রির পরিমান তুলানামূলক হারে কম। এই সপ্তাহের মধ্যেই বাজারে ল্যাংড়া আমের পরিমান বৃদ্ধি পাবে। হিমসাগর আম ২০০০ টাকা মন হিসেবে কয়েকমন বিক্রি করলাম। গাছে আরো আছে, আস্তে আস্তে বাজারে আনব’।
বানেশ্বর আম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব সাইফুল ইসলাম এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে বলেন, চাঁপাইয়ের কানসাটের পরেই বানেশ্বর বাজার। প্রতিবছর কয়েক কোটি টাকার আম বেঁচাকেনা হয় এখানে। করোনার কারণে বাজার সেভাবে জমেনি। বাজারে আমচাষি, ব্যবসায়ীরা সবাই ৩ ফুট দুরত্ব বজায় রেখে চলছে। পুলিশ প্রশাসন যদি সহায়তা না করেন তাহলে আম শিল্প বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শামসুল হক এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে জানান, বাজারে সর্বপ্রথম গুটি জাতের আম আগে আসে। পর্যায়ক্রমে গোপালভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি, আশ্বিনা আম বাজারে আসে। এখন বাজারে অল্প পরিমাণে উঠতে শুরু করেছে খিরসাপাত, হিমসাগর ও লখনা।