সিআইপি কার্ডের মতো কৃষি

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: সিআইপি কার্ডের মতো কৃষি খাতে অবদানে দেয়া হবে এআইপি; কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান এ তথ্য জানিয়েছেন।

‘সাংবাদিকদের আধুনিক কৃষি তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার’ শীর্ষক তিনদিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯) রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষি তথ্য সার্ভিসের কনফারেন্স রুমে শুরু হয়েছে এ কর্মশালা।



কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান বলেছেন, ব্যবসায়ীদের মতো কৃষি সেক্টরে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা ব্যক্তিদের এআইপি (এগ্রিকালচারাল ইম্পরট্যান্ট পারসন) দেয়া হবে।

কৃষি কাজ ও উৎপাদনে আগ্রহ বাড়াতে এই প্রণোদনা দেয়া হবে। সিআইপির (কমার্শিয়াল ইম্পরট্যান্ট পারসন) মতো এআইপিরাও ভিআইপি জোনে সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। এ ব্যাপারে নীতিমালা তৈরির কাজ চলছে।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে ফসলের উৎপাদন দ্বিগুণ করতে হবে  বলে মন্তব্য করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের এ ঊর্ধতন কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, বর্তমানে হেক্টরে উৎপাদন হয় ২ দশমিক ৬৬ মেট্রিক টন। যা ২০৩০ সালের মধ্যে ৫ দশমিক ৩২ মেট্রিক টনে উন্নীত করতে হবে। এ লক্ষ্য অর্জনে তিন ফসলি জমিকে চার ফসলি করার পরিকল্পনা নিচ্ছে সরকার।

মো. নাসিরুজ্জামান বলেন, কিন্তু এ লক্ষ্য পূরণে বর্তমানে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। কৃষক উৎপাদিত পণ্যে সঠিক দাম পাচ্ছে না এটা দ্বিবালকের মতো সত্য।

তিনি বলেন, উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত না হলে কৃষি থাকবে না। কৃষক কম দামে পণ্য বিক্রি করেন অথচ বেশি দাম দিয়ে কেনেন। অনেক সময় দেখা যায় কৃষকদের পণ্য ধনীরা কিনে গুদামজাত করে।

তিনি জানান, ফলে কৃষক লাভবান না হয়ে অন্য কেউ লাভবান হয়। যখন ঘরে ধান উঠে তখন ৩০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি করে কৃষক। পরবর্তীতে সে চাল কৃষক ৩০ টাকার পরিবর্তে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় কেনেন। বছরে ৩ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের ভোজ্যতেল আমদানি করতে হয়।

জমি সংকটের কারণে দেশে চাহিদা অনুযায়ী ভোজ্যতেল উৎপাদন হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভোজ্যতেল করতে হলে গম ও আলু উৎপাদন কমে যাবে। কৃষি জমি হারিয়ে যাচ্ছে দাবি করে কৃষি সচিব বলেন, বিশ্বের সব জায়গায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেই কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

প্রতিনিয়তই জমি হারিয়ে যাচ্ছে। দেশে নদীভাঙ্গন বেড়েছে। এক সময় ১ কিলোমিটার ক্যাচমেন্ট নিয়ে যমুনা প্রবাহিত হয়েছে, সেই নদী এখন ১৪ কিলোমিটার ক্যাচমেন্ট নিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে কৃষকের জমি বিলীন হচ্ছে। নদী খনন করা জরুরি।

কৃষিতে সুবিধা দিতে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ নীতিমালা তৈরি হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এটি পাস হলে কৃষক বিনা সুদে ঋণ পাবেন। কৃষক কেবল ঋণের আসল ব্যাংককে পরিশোধ করবেন। সুদ দেবে সরকার।

আমরা চাই লাভজনক ও নিরাপদ কৃষি। এনিয়ে কাজ চলছে। ঢাকার মার্কেট টার্গেট করে রাজধানীর আশপাশে নিরাপদ ফসলের মার্কেট গড়ে তোলা হবে।

কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালক ড. মো. নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন কৃষি বিপণন অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. ইউসুফ, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক আবুল কালাম আযাদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইংয়ের পরিচালক চন্ডী দাস কুন্ডু। প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের ৩০ জন সাংবাদিক অংশ নেন।

সিআইপি কার্ডের মতো কৃষি খাতে অবদানে দেয়া হবে এআইপি; কৃষি সচিব এর তথ্যে কৃষি উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ীরা আরও বেশি অনুপ্রাণিত হবেন।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ফসলের বীজ সম্পসারণে সহযোগিতা চায় চীনের হাইটেক সিড