ইউসুফ আলী সুমন, নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগরে আতব ধানের শীষ মরা রোগে দিশেহারা কৃষক। ধানের শীষ মরা রোগ প্রতিরোধে ওষুধ ছিটিয়েও কাজ হচ্ছে না। ফলে ফলন বির্পযয়ের শঙ্কা করছেন কৃষকরা। অপরদিকে শীষ মরা রোগে ফলন বিপর্যয়ের কোন আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র মতে, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলায় ১৮ হাজার ১৪০ হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপন করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার প্রতিটি জমিতে আমন ধান খুব ভাল হয়েছে। ইতোমধ্যে আগাম জাতের প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমির ধান কর্তণ করেছেন কৃষকরা। এই ১৮ হাজার ১৪০ হেক্টর জমিতে রোপনকৃত ধানের মধ্যে ১০ হাজার ৩  শত হেক্টর জমিতে চিনি আতব ধান রোপন করা হয়েছে।

কৃষকরা বলছেন আর মাত্র কয়েক দিন পরেই হয়তো আতব ধান কাটা শুরু হবে।এরই মধ্যে হঠাৎ করেই উপজেলার হরিপুর, আবাদপুকুর, করজগ্রাম, মাধাইমুড়ি, ভান্ডারা, আমগ্রাম, ভেবড়া, দামুয়া, জলকৈসহ বিভিন্ন মাঠে আতব ধানে ব্যপক হারে শীষ মরা রোগ দেখা দিয়েছে। কৃষকদের দাবি ধানের শীষ মরা রোগ প্রতিরোধ করতে বিভিন্ন কোম্পানীর কীটনাশক ওষুধ ছিটিয়েও কোন ফল হচ্ছে না। ফলে আতব ধানে ফলন বির্পযয় দেখা দিতে পারে। এতে করে ধান রক্ষায় এবং লোকসানের আশংকায় দিশে হারা হয়ে পরেছেন তারা।

আরোও পড়ুন: আউশ ধানে মাজরা পোকা দমনে করণীয়

ধানের ভুয়াঝুল রোগ দমনে করণীয়

হরিপুর গ্রামের কৃষক গৌর চন্দ্র,করজগ্রামের কৃষক ওহিদুর রহমান, মাধাইমুড়ি গ্রামের কৃষক রুঞ্জু এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, শুরু থেকে মাঠের ধান ভাল থাকলেও ধানের শীষ বের হবার পর থেকে শীষ মরে যাচ্ছে। প্রথমে জমিতে দু-একটি মরা শীষ দেখা গেলেও বর্তমানে তা ব্যপক আকার ধারণ করেছে।

কালীগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসরাম বাবলু মন্ডল এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে জানান, তাঁর বিআর ৫১ জাতের প্রায় ৬ বিঘা জমির ধান সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।বিভিন্ন কোম্পানীর ওষুধ ছিটিয়েও কোন লাভ হচ্ছে না। ফলে ধানের ফলন বির্পযয় হতে পারে। আগাম জাতের মোটা ধান ভাল থাকলেও প্রতি বছর আতব ধান পাকার আগেই মাজরা, কিংবা ব্লাষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে শীষ মরে যায়। এতে ফলন বিপর্যয়ের কারণে লোকসান হয়। এবারও একই রকম অবস্থা দেখা দিয়েছে।

আতব ধানের শীষ মরা রোগে দিশেহারা কৃষক। কৃষকদের শঙ্কা বিষয়ে রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, উপজেলা জুড়ে চলতি মৌসুমে কৃষকদের বিভিন্ন ভাবে ধান চাষে পরামর্শ দিয়েছি। বিভিন্ন সেমিনার, মিটিং করে কৃষকদের সচেতন করা হয়েছে। ফলে কোথাও ব্লাষ্ট এবং কারেন্ট পোকার নজির নেই। তবে দু-একটি জমিতে মাজরা পোকার কারণে কিছু ধানের শীষ মরে যাচ্ছে যা পরিমানে খুবই অল্প । এতে ধানের ফলন বিপর্যয়ের কোন আশঙ্কা নেই।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ