নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: কৃষি উন্নয়নের ধারাকে ধরে রাখতে হলে বিজ্ঞান সম্মত ও আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয় ও ব্যবহারে উদ্যোগী হতে হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

এ সময় তিনি নিজ মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধিত ১ লাখ ৭৫ হাজার সমবায় সমিতিকে কাজে লাগানো যেতে পারে বলে উল্লেখ করেন। আজ শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) প্রথমবারের মতো ‘জাতীয় কৃষি যন্ত্রপাতি মেলা ২০১৮’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা জানান মন্ত্রী।

কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহারে, অর্থ-শ্রম-সময় বাঁচবে’ প্রতিপাদ্য নিয়ে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) চত্বরে এ তিনদিনব্যাপি মেলা শুরু হয়েছে।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী বলেন, নগরায়ন ও শিল্পায়নের কারণে কৃষি জমির পরিমান কমছে। দেশের উন্নয়নের সাথে সাথে কৃষি শ্রমিকরা দিন দিন অন্য পেশায় নিয়োজিত হচ্ছে। যার ফলে কৃষিকাজে শ্রমিক সংকট দেখা দিচ্ছে।

তিনি জানান, সরকার গ্রামীণ হাট বাজারের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করছে।  দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মডেল হাট-বাজার স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। এতে কৃষিপন্যের বাজারজাতকরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের সকল সুবিধা এখন জনগনের নাগালে রয়েছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, দিন দিন আমাদের কৃষিতে কায়িক শ্রম দেয়ার শ্রমিকের অভাব দেখা দিচ্ছে। ফলে কৃষিতে উৎপাদনে সময়ও বেশি লাগছে। এক সময়ে কৃষক আগে অনেকটা বাধ্য হয়ে কৃষিকাজ করতো। এখন অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে।

তিনি বলেন, এজন্য কৃষিতে যন্ত্রের ব্যবহার নিয়ে আমাদের নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। কৃষি যন্ত্রপাতিতে ভূর্তুকির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, সরকার হাওর ও এক ফসলী এলাকায় শতকরা ৭০ ভাগ ও অন্যান্য এলাকায় শতকরা ৫০ ভাগ ভূর্তুকি দিচ্ছে। আমাদের ধানের কিছু জাত আছে যেগুলোর ছড়া নুইয়ে পড়ে। এ ধরনের ধান কাটার কোনো যন্ত্র আমাদের নেই।

এসময় মন্ত্রী সরকারি, বেসরকারি, আমদানিকারক ও গবেষকদের এ ধরনের নুইয়ে/হেলে পড়া ধান কর্তনের যন্ত্রপাতি  বা প্রযুক্তি আনার আহ্বান জানান। 

বেসরকারি খাতের উদ্দেশ্যে মতিয়া চৌধুরী বলেন, আমাদের জমি ছোট। কৃষিকে কীভাবে লাভজনক করা যায়, বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কৃষকের কথা মাথায় রেখে স্লিম, স্মার্ট ও ইফেকটিভ যন্ত্রপাতি উদ্ভাবন করতে হবে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের প্রফেসর ড. মো. মঞ্জুরুল আলম। মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. ওয়ায়েস কবীর।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ মহসীন। সভাপতিত্ব করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পিপিসি) মোহাম্মদ নজমুল ইসলাম।

মেলায় সরকারি ও বেসরকারি ২১ টি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন প্রকার আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি প্রদর্শন করছে। সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত এ মেলা কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো আয়োজন করেছে ডিএই’র খামার যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প। এ মেলার মাধ্যমে কৃষক ও কৃষি সংশ্লিষ্টরা ব্যয় সাশ্রয়ী, লাভজনক ও আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

 

বাংলাদেশ সময়: ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৮