অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ভারত থেকে আমদানি বাড়ায় দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম কমেছে। একদিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজে কমেছে ৪ টাকা। কয়েকদিনের মধ্যে আরোও কমবে বলে বলছেন বন্দরের ব্যবসায়ীরা।

হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ জানান, দেশীয় কৃষকের উৎপাদিত পেঁয়াজের মূল্য নিশ্চিতে সরকার গত ডিসেম্বর থেকে পেঁয়াজের ইমপোর্ট পারমিট (আইপি) দেয়া বন্ধ করে রেখেছে। আগের আইপির মাধ্যমে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত। বর্তমানে এসব আইপি শেষের দিকে। প্রতি বছর রমজানকে সামনে রেখে দেশে পেঁয়াজের বাড়তি চাহিদা থাকে বলে সবজিটির দাম বাড়ে।

পড়তে পারেন: পেঁয়াজ উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয় বাংলাদেশ

হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বন্দর দিয়ে নাসিক ও ইন্দোর এ দুই জাতের পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। তবে আগের চেয়ে আমদানি কিছুটা বাড়ায় দাম কমতে শুরু করেছে। একদিন আগেও যে নাসিক জাতের পেঁয়াজ ৪০-৪২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল, বর্তমানে তা কমে ৩৫-৩৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ইন্দোর জাতের পেঁয়াজ ৩৫-৩৬ টাকা বিক্রি হলেও বর্তমানে তা কমে ৩২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী তোজাম হোসেন বলেন, বাজারে দেশীয় মুড়িকাটা পেঁয়াজের ভালো সরবরাহ ও দাম কম থাকায় দেশে আমদানীকৃত পেঁয়াজের চাহিদা কমে গিয়েছিল। যার কারণে পেঁয়াজ আমদানি করে লোকসান গুনতে চায়নি বন্দরের আমদানিকারকরা। সম্প্রতি মাঘের হঠাৎ বৃষ্টিতে পাবনা মেহেরপুরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পেঁয়াজ ক্ষেত নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া পেঁয়াজ মৌসুম শেষ হওয়া ও বাজারে সরবরাহ কমায় দাম বাড়তির দিকে ছিল।

পড়তে পারেন: দেশীর কাছে হার ভারতীয় পেঁয়াজের

উল্লেখ্য পেঁয়াজ উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয় বাংলাদেশ। এমনই তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) গাজীপুর আঞ্চলিক মসলা গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা ।

বিজ্ঞানীরা জানান, বারি-৫ পেঁয়াজ আগাম ও নাবি খরিপ মৌসুমে আবাদ উপযোগী। এটি স্বল্পমেয়াদি গ্রীষ্মকালীন হলেও সারা বছর চাষের উপযোগী উচ্চ ফলনশীল জাত। তাঁরা আরও জানান, দেশে পেঁয়াজের হেক্টরপ্রতি জাতীয় গড় ফলন ১০ দশমিক ৫৬ টন হলেও বারি পেঁয়াজ-৫ হেক্টরপ্রতি ১৬-২২ টন উৎপাদিত হয়। এই জাতের পেঁয়াজ চাষ হলে আমাদের দেশ একদিন পেঁয়াজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করবে।

তারা বলেন, ‘প্রতি বছর দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ৩৫-৩৬ লাখ মেট্রিক টন। সেখানে গত বছর উৎপাদন হয়েছে ৩২ লাখ মেট্রিক টন। গত এক বছরে দেশে পেঁয়াজ উৎপাদন বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় আট লাখ মেট্রিক টনে।

বিজ্ঞানীরা বলেন, ‘দেশের কৃষকরা নতুন জাতের পেঁয়াজ সঠিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে পেঁয়াজ উৎপাদনে খুব শিগগিরই আমাদের দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করবে।’

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ