মোফাজ্জল বিদ্যুৎ, রাজশাহী, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: রাজশাহীতে এবার রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো ফলনের সঙ্গে এবার দামও মিলছে ভালো। ভালো দাম পাওয়ায় খুশি রাজশাহীর চাষিরা।

কৃষকরা বলছেন, এ বছর আমনের ভালো ফলনের পাশাপাশি ভালো দামও পাওয়া যাবে। ইতোমধ্যেই বাজারে যারা আমন ধান বিক্রি করতে নিয়েছেন তারা ভালো দাম পেয়েছেন। তারা বলছেন, সরকার নিজের জন্য আমন ধান ও চাল কেনার যে দাম দিয়েছেন, সে কারণেই এবার আমনের ভালো দাম পাচ্ছেন কৃষকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় , এবার রাজশাহীতে রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭৬ হাজার ৫০০ হেক্টর। তবে চলতি মৌসুমে ৭৭ হাজার ৫৭০ হেক্টর যা লক্ষ্যমাত্রা থেকে ১ হাজার ৭০ হেক্টর বেশি জমিতে রোপা আমনের আবাদ করা হয়েছে। জেলার বরেন্দ্র অঞ্চলখ্যাত গোদাগাড়ী উপজেলায় চলতি মৌসুমে সব চেয়ে বেশি রোপা আমন ধানের চাষ হয়েছে। এ পর্যন্ত ৫৮ হাজার ৬৭৫ হেক্টর জমির আমন ধান কাটা-মাড়াই সম্পন্ন হয়েছে। যা শতকরা ৭৭% জমির ধান মাড়াইয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ বছর প্রতি বিঘা জমিতে ১৭ মণ হারে ধান হয়েছে।

গোদাগাড়ী উপজেলার ধান চাষি আব্দুল্লাহ আল মামুন এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে জানান, অল্প পরিমাণ জমির ধান কাটা মাড়া সম্পন্ন হয়েছে। বাকি প্রায় সাড়ে ৬ বিঘা জমির ধান মাড়াইয়ের জন্য উঠানে রেখেছি। পাশের জমিগুলোতে প্রতি বিঘা ১৭ থেকে ১৯ মণ হাওে ধানের ফলন হয়েছে।’

তিনি জানান, এবছর জমিতে কারেন্ট পোকাসহ বিভিন্ন পোকার সংক্রণ তেমন একটা দেখা যায়নি। গত বছরের চেয়ে ধানের ফলনও ভালো হবে। এছাড়া ধানের দামও রয়েছে ভালো।

একই উপজেলার ধান চাষি আব্দুস সামাদ বলেন, বন্যায় আউশের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবার পাঁচ বিঘা জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ করেছিলাম। সব জমির ধান কাটা মাড়াই শেষ। আবহাওয়া অনূকলে থাকায় এবং কোন ধরনের পোকামকড়ের সংক্রমণ না হওয়ায় ভালো ফলন হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে ১৭ থেকে ১৮ মণ হারে ধান হয়েছে।

গোদাগাড়ী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো: মতিয়র রহমান এগ্রিকেয়ার.কমকে বলেন, উপজেলায় ২৪ হাজার ৬৯৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের আবাদ হয়েছে। এ পর্যন্ত ২১ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমির ধান কাটা মাড়াই সম্পন্ন হয়েছে। শতকরা ৮৭% জমির ধান কাটা মাড়াইয়ের কাজ শেষ। বিঘা প্রতি ১৬ থেকে ১৯ মণ হারে ধানের ফলন হয়েছে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামছুল হক এগ্রিকেয়ার.কমকে বলেন, রাজশাহীর অধিকাংশ চাষির ধান কাটা হয়ে গেছে। আবহওয়া অনুকূলে থাকায় চাষিরা জমিতে রেখেই ধান শুকিয়ে নিচ্ছেন। অনেক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে ধান গোলায় তুলছেন চাষিরা।

তিনি বলেন, ধানের বিভিন্ন রোগবালাই এবং পোকামাকড় দমন ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে প্রত্যেক উপজেলাতে কৃষি কর্মকর্তাদের দ্বারা কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ফলে এ বছর ধানের ভালো ফলন হয়েছে। এছাড়া দাম ভালো পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন কৃষক। শতকরা ৭৬% জমির আমন ধান কাটা মাড়াই সম্পন্ন হয়েছে। বাকি জমির ধান ঘরে তোলা এবং পরবর্তী রবি ফসল লাগানোর জন্য কৃষকদের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ