নওগাঁ প্রতিনিধি, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁয় আমের সাথে সাথী ফসল সরিষা চাষে বাড়তি আয়ের আশা দেখছেন চাষিরা।

জানা যায়, বর্তমানে জেলার ১১টি উপজেলার মধ্যে আমের জন্য বিখ্যাত পোরশা উপজেলা। আমের জন্য বিখ্যাত হলেও উপজেলার বাগানে বাগানে আম গাছের ফাঁকে ফাঁকে শোভা ছড়াচ্ছে হলুদ সরিষার ফুল। এক জমিতে একসাথে দুই ফসল হওয়ায় বাড়তি অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে কৃষকদের মাঝে। অল্প সময়ে স্বল্প খরচে বাড়তি ফসল করে বাড়তি আয়ের আশা চাষিরা।

স্থানীয় উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় সরিষার আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ৪ শত ১০ হেক্টর জমিতে। মিশ্র আম-বাগানের যদিও সঠিক হিসাব নেই কৃষি অফিসের। তবে ধারণা করা হচ্ছে আম বাগানে মিশ্র চাষ হিবাবে সরিষা চাষ হয়েছে এক হাজার ৭শত ৭৫ হেক্টর জমিতে। আর আমারে আবাদ হয়েছে ১০হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে।

জেলার কয়েকজন কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিকল্প চাষ হিসেবে আম বাগানের ভিতর সরিষার চাষের দিকে ঝুঁকছেন তারা।

পোরশা উপজেলার সরাইগাছী গ্রামের চাষি জিয়ারুল ইসলাম বলেন, চলতি বছর ১০বিঘা জমিতে আমের আবাদ করেছি। এছাড়া এই বাগানের অবশিষ্ঠ ফাঁকা জায়গায় সরিষার আবাদ করেছি। এর আগে কখনো এমনভাবে আবাদ করিনি। এই প্রথম আম বাগানে সরিষার আবাদ করলাম। কোন ধরনের সমস্যা হয়নি।

একই এলাকার মেজবাউল হক নামের আরেক চাষি বলেন, আম বাগানে সরিষার আবাদ এই প্রথম করলাম। সরিষার ফলনও ভালো হয়েছে। তেমন কোন রোগবালাই নাই। আমি ১৫বিঘা জমিতে আম ও সরিষার আবাদ করেছি। পরিক্ষামূলক ভাবেই এবার আম বাগানে সরিষার আবাদ করেছি। এর আগে এমন উদ্যোগ কেউ নেয়নি। এবার এক জমি এক সাথে দুই ফসল পাচ্ছি। সরিষার চাষ থেকে বাড়িতে আয়ের সম্ভাবনা দেখতেছি। এতে আম এবং সরিষা থেকে আমরা বাড়তি আয় করতে পারবো বলে আসা করছি।

উপজেলার নিতপুর গ্রামের মোবারক হোসেন বলেন, ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার কৃষি অফিসের পরামর্শে আমার ৫বিঘা আম বাগানের ফাঁকে পরিত্যক্ত জায়গায় সরিষার আবাদ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। আমাদের এখানে বৃষ্টি নির্ভর আমান আবাদ ছাড়া তেমন কোন ফসল হতোনা।

গত কয়েক বছর আমের আবাদ হচ্ছে অন্যান্য আবাদ ও ভালো হচ্ছে। আর এই বার আমরা আমের পাশাপাশি বাগানে সরিষারও আবাদ করেছি। ফুল ধরেছে। রোগবালাই হয়নি। আম গাছেরও কোন ক্ষতি হয়নি। আশা করছি আম ও সরিষার দুই আবাদই ভালো হবে।

কথা হলে পোরশা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার বলেন, এবার উপজেলায় সরিষার আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ৪ শত ১০ হেক্টর জমিতে। মিশ্র ফসলের জন্যে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ফলে এখন আম-বাগানে সরিষা করেছে। এর মধ্যে আম বাগানে চাষ হয়েছে এক হাজার ৭শত ৭৫ হেক্টর জমিতে।

ভোজ্য তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কারনে কৃষকদের আম বাগানের ফাঁকে জায়গাগুলোতে সরিষার আবাদ করতে চাষিদের উদ্বদ্ধ করা হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। তেমন কোন রোগবালাই নেই। মাঠ পর্যায়ে চাষিদের আমরা পরামর্শ ও সাধ্যমত সহায়তা করে থাকি।

তিনি আরও বলেন, আগামীতে আম বাগনে যেন সরিষার আবাদ বৃদ্ধি পায় সেজন্য চাষিদের নিয়ে মাঠদিবস, উঠান বৈঠকসহ নানার ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ