ফসল ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ঠাকুরগাঁওয়ে প্রতিমণ আলু বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়। আলুর কেজি ছয় টাকা হিসেবে বিক্রি করায় বিপাকে পড়েছে চাষিরা। চাষিরা বলছেন, প্রতিকেজি আলুর উৎপাদন খরচ হয়েছে ১০ টাকা। ফলে লোকসান গুণতে হচ্ছে তাদের।

জানা গেছে, গত বছর অধিক দামে আগাম আলু বিক্রি হয়। ফলে এবারও আগাম আলু চাষে ঝুঁকেছিলেন চাষিরা। কিন্তু এবার আলুর দাম না থাকায় লোকসান গুনছেন তারা। গত বছর যে আলু মাঠেই কেজি বিক্রি করেছিলেন ২৫-৩০ টাকায়। এবার সেই আলু একই সময় বিক্রি হচ্ছে মাত্র ছয় টাকায়।

কৃষি বিভাগ বলছে, গত বছরের কিছু আলু মজুত থাকায় এবার দাম কম। পুরোনো আলু শেষে হলেই নতুন আলুর দাম কিছুটা বাড়তে পারে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এবার জেলার ২৭ হাজার ৬৪৭ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। ইতিমধ্যে দুই হাজার ৭৭০ হেক্টর জমির আলু বাজারে উঠেছে। প্রতি হেক্টরে (২৪৭ শতক) আলুর উৎপাদন ধরা হয়েছে ২৪ মেট্রিক টন। এতে উৎপাদন খরচ হয়েছে প্রায় দুই লাখ টাকা। প্রতি হেক্টরে দাম পাচ্ছেন ৯০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা।

সদর উপজেলার ফকদনপুর এলাকার আলু চাষি এন্তাজুল ইসলাম বলেন, গত বছর আলুর দাম বেশি ছিল। সে কারণে কম ফলনেও ভালো লাভ হয়েছে। এবার লাভ তো দূরের কথা আসলও উঠছে না। কম দামে আলু বিক্রি করে বড় ধরনের লোকসানে পড়তে হচ্ছে। এরপরও নগদ টাকার ক্রেতা নেই।

আলুর মাঠে বর্তমানে এখন গ্র্যানোলা সাদা ও এস্টারিক্স জাতের লাল আলু পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয় বাজারে লাল আলুর চাহিদা বেশি থাকায় দামও একটু বেশি। সাদা আলুর বাজার রাজধানীসহ অন্যান্য জেলায়। ফলে অন্যান্য জেলার চাহিদার ওপর নির্ভর করে দাম পায় চাষিরা। সাদা আলু ছয় ও লাল আলু ১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

সদর উপজেলার পটুয়া এলাকার আলু চাষি রকিবুল ইসলাম বলেন, সাড়ে পাঁচ একর জমিতে আলু চাষ করেছিলাম। খরচ হয়েছে প্রায় পাাঁচ লাখ টাকা। ছয় টাকা দরে আলু বিক্রি করে দাম পাচ্ছি দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা। এ টাকায় আসলও ওঠে না।

উপজেলার বিমানবন্দর এলাকার আলু চাষি শাহজাহান আলী বলেন, প্রথমবার ৪০ একর জমিতে আলু রোপণের কয়েকদিন পরে বৃষ্টি হয়। ফলে বীজ আলু মাটিতেই পচে যায়। পরে সেই জমিতে আবারও আলু রোপণ করা হয়। আলুর ফলন ভালো হয়েছে। ব্যবসায়ীরা ৬ টাকা কেজি বলছে বিক্রি করিনি। এ দামে বিক্রি করলে অনেক টাকা লোকসান হবে।

ঠাকুরগাঁও রোড এলাকার আলু ব্যবসায়ী সোহাগ আলী বলেন, বিভিন্ন জেলার আলু একসঙ্গে বাজারে আসায় চাহিদা কিছুটা কম। রাজধানীর আড়ত থেকে কোনো অর্ডার পাচ্ছি না। সে কারণে দাম নেই।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক আবু হোসেন বলেন, গত বছরের আলুর বাড়তি মজুত শেষে হলে বাজার ঠিক হবে। চাষ করা আলু এখন পর্যন্ত ভালো অবস্থায় আছে। চাষিদের যে কোনো পরামর্শের জন্য কৃষি বিভাগ মাঠ পর্যায়ে রয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ