নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, প্রযুক্তি আবিষ্কারের পর তা যদি মাঠ ও চাষী পর্যায়ে না যায় তাহলে উদ্ভাবনে কোন লাভ নেই। এ দায়িত্বটি কৃষি বিজ্ঞানীদেরকেই নিতে হবে। উদ্ভাবিত প্রযুক্তির কতটা চাষী পর্যায়ে গিয়েছে তা দেখা উচিত।

রোববার (১০ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, গাজীপুরে দুই দিনব্যাপী ‘বারি প্রযুক্তি প্রদর্শনী ২০১৯’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেছেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ভুট্টা এক সময় দেশের কোন ফসল ছিল না, বর্তমানে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ  ফসলে পরিণত হয়েছ। কৃষি বিজ্ঞানীদেরকে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে  যেতে হবে। আমরা আগামী তিন বছর পর এক টন ভুট্টাও আমদানি করব না।

বারি’র মহাপরিচালক ড. আবুল কালাম আযাদ এর সভাপতিত্বে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য কৃষিবিদ আব্দুল মান্নান ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএআরআই এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক (অব) ও এমেরিটাস সায়েন্টিস্ট ড. কাজী এম বদরুদ্দোজা।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, সেবা ও সরবরাহ বিভাগের পরিচালক ড. মদন গোপাল সাহা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন গবেষনা পরিচালক ড. মো. আব্দুল ওহাব।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ‘কৃষি প্রযুক্তি হাতবই ২০১৯’ এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এছাড়া প্রদর্শনী উদ্বোধনের আগে বারি ক্যাম্পাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ম্যুরাল উদ্বোধন ও গাছের চারা রোপণ করেন কৃষিমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা কার্যক্রম, সাফল্য, উদ্ভাবিত প্রযুক্তি ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনার উপর সংক্ষিপ্ত উপস্থাপনা উপস্থাপন করেন, পরিচালক (তৈলবীজ গবেষণা কেন্দ্র) ড. মো. লুৎফর রহমান।

তিনি বলেন, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করে নিরাপদ খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, কৃষকের আয় বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বারি দানা ফসল, কন্দাল ফসল, তেল ফসল, ডাল ফসল, সবজি, ফুল ও ফল, মসলা ফসল ইত্যাদির উচ্চ ফলনশীল জাত ও এসব জাতের উন্নত উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে তা সম্প্রসারণকর্মী, কৃষির সাথে সংশ্লিষ্ট এনজিও কর্মী ও কৃষকের নিকট হস্তান্তরের জন্য নানা ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করে আসছে।

ড. আবুল কালাম আযাদ বলেন, বারি জাত উদ্ভাবনের পাশাপাশি ফসল, পানি, সার ও মৃত্তিকা ব্যবস্থাপনা, রোগ ও পোকা মাকড় দমন, জীব প্রযুক্তি, হাইড্রোপোনিক, আইপিএমসহ ফসল, মৃত্তিকা, পানি, রোগ ও পোকা মাকড় দমন ও উৎপাদন ব্যবস্থাপনা বিষয়ক  প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে।

এ সকল প্রযুক্তি প্রতিকূল পরিবেশে বিশেষ করে, লবণাক্ত, খরা, জলাবদ্ধতা, পাহাড়ী এলাকা ও চরাঞ্চলে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে। বিএআরআই কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে উদ্ভাবিত এসকল প্রযুক্তি প্রদর্শীত হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) দেশের সর্ববৃহৎ বহুবিধ ফসলের গবেষণা প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি এ পর্যন্ত ২০৮ টিরও বেশি ফসলের ৫৩১ টি উচ্চ ফলনশীল (হাইব্রিডসহ), রোগ প্রতিরোধক্ষম ও বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশ প্রতিরোধী জাত উদ্বাবন করেছে।

পাশাপাশি ফসল উৎপাদন ব্যবস্থাপনা বিষয়ক ৫০৫ টি প্রযুক্তিসহ মোট ১ হাজার ৩৬ টিরও বেশি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। এসব প্রযুক্তি দ্রুত কৃষকের কাছে পৌছাতে হবে। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন আজ ১১ ফেব্রুয়ারি সোমবার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষক ও কৃষাণীসহ প্রায় ৪০০ জন অংশগ্রহণ করবেন।