উৎপাদনশীলতা দ্বিগুণ করতে ধানের

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: উৎপাদনশীলতা দ্বিগুণ করতে ধানের আরও উন্নত জাত উদ্ভাবনের আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। ধানবিজ্ঞানী ও গবেষকদের তিনি এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, আমাদের জনসংখ্যা প্রতিবছর ২২ থেকে ২৩ লাখ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু নানা কারণে কমছে চাষের জমি। তাই বিষ্যতের খাদ্য নিরাপত্তার মূল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হলে ২০৩০ সালের মধ্যে উৎপাদনশীলতা দ্বিগুণ করতে হবে। আর উৎপাদন বাড়াতে আরও উন্নত জাত ও প্রযুক্তির উদ্ভাবন করতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি, ২০২১) বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) ২০১৯-২০ বছরের গবেষণা পর্যালোচনা বিষয়ে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আহ্বান জানান। গাজীপুরে ব্রি’র মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এ কর্মশালা। এতে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো: জাহিদ আহ্‌সান রাসেল ও কৃষিসচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম।

ব্রি উদ্ভাবিত শতাধিক জাতের ধানের প্রসঙ্গে টেনে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এই জাতগুলো থেকে সেরাগুলো নিয়ে সকল সংস্থার সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে যাতে করে কৃষকের নিকট এগুলো জনপ্রিয় হয়, কৃষকের নিকট সহজে পৌছানো হয়।

একাধিক পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ জাত উদ্ভাবনের আহ্বান জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, বহু পুষ্টিউপাদান সমৃদ্ধ জাতের ধান উদ্ভাবন করতে হবে। এছাড়া, মোটা চালের চাহিদা দিন দিন কমছে, সেজন্য চিকন চাল এবং কৃষক ও ভোক্তার চাহিদা বিবেচনা করে জাত উদ্ভাবনে এগিয়ে আসতে হবে।

ফসল উৎপাদনের পরিসংখ্যানের উল্লেখ করে ড. রাজ্জাক আরও বলেন, বিবিএস ও কৃষি বিভাগের পরিসংখ্যান মিলে না। কৃষি সম্প্রসারণের পরিসংখ্যানে মাঠ থেকে ফসল উৎপাদনের প্রকৃত তথ্য উঠে আসছে কিনা সেটি ক্রস চেক করা দরকার। মন্ত্রণালয় ও ব্রিসহ অন্যান্য সংস্থাকে উৎপাদনের তথ্য ক্রস চেক করতে হবে।

কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো:  শাহজাহান কবীর। গত এক বছরের গবেষণার অগ্রগতি তুলে ধরেন ব্রির পরিচালক (গবেষণা) ড. কৃষ্ণ পদ হালদার।

এছাড়া কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো: জাহাঙ্গীর আলম, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কমলারঞ্জন দাশ, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মো: সায়েদুল ইসলাম, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এম এ সাত্তার মন্ডল, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: আসাদুল্লাহ, সাবেক মহাপরিচালক মো: হামিদুর রহমান, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক নাজিরুল ইসলাম, আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ইরি) বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. হোমনাথ ভান্ডারি, খাদ্য ও কৃষি সংস্থার(এফএও) বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি. সিম্পসন।

ব্রির সাফল্য ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা তুলে ধরে মহাপরিচালক ড. মো:  শাহজাহান কবীর জানান, এখন পর্যন্ত ব্রি ১০৫টি উচ্চফলনশীল জাত ও ২৫০টি লাগসই কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন অভিঘাত সহনশীল জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনেও গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে ব্রি। এরই মধ্যে উদ্ভাবন করা হয়েছে লবণাক্ততাসহিষ্ণু ১২টি, খরাসহিষ্ণু ৩টি, জলমগ্নতাসহনশীল ৪টি ও ঠান্ডাসহনশীল ৪টি জাত।

জনগণের পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুষ্টিসমৃদ্ধ নিরাপদ জাত উদ্ভাবনে বিশ্বের সর্বাধুনিক বায়োফর্টিফিকেশন ও জিএম প্রযুক্তি ব্যবহার করছে ব্রি বিজ্ঞানীরা। ইতোমধ্যে জিঙ্কসমৃদ্ধ ৫টি ও প্রিমিয়াম গুণসম্পন্ন ১১টি জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে।

মুজিব শতবর্ষের উপহার হিসাবে হাইজিংক সমৃদ্ধ ব্রিধান ১০০ কারিগরি কমিটির অনুমোদন শেষে জাতীয় বীজ বোর্ডে অনুমোদনের জন্য জমা দেয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়।

উৎপাদনশীলতা দ্বিগুণ করতে ধানের আরও উন্নত জাত উদ্ভাবনের আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক শিরোনামের সংবাদটির তথ্য কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে নিশ্চিত করা হয়।