অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: কৃষ্ণ সাগরের বন্দর দিয়ে ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি করতে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে রাশিয়া-ইউক্রেন। তুরস্কের ইস্তানবুলে হয় এ চুক্তি। এ চুক্তির কারণে ২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। অন্যদিকে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন দেশে গমের বিপদ কেটে যাবে। ফিরে আসবে স্বস্তি।

গত চার বছরে বাংলাদেশের গমের আমদানি ১৪ লাখ টন বেড়ে ২০২১–২২ অর্থবছরে ৭৫ লাখ টনে দাঁড়ায়। বাংলাদেশ পরিণত হয় বিশ্বের পঞ্চম গম আমদানিকারক দেশে।

রাশিয়া-ইউক্রেন চুক্তি স্বাক্ষরের খবরে ২০ মিলিয়ন টন ইউক্রেনীয় শস্যের অবরোধ মুক্ত করার সম্ভাবনা ইতোমধ্যেই শুক্রবার বিশ্ববাজারে গমের দাম কমেছে। বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

ইউক্রেনে হামলা করার পর দেশটির গুরুত্বপূর্ণ বন্দরগুলোর বেশিরভাগই দখল করে রাশিয়া। এরপর সেগুলো বন্ধ করে দেয় তারা। ফলে বন্ধ হয়ে যায় ইউক্রেনের শস্য রপ্তানিও। এতে করে বিশ্বে খাদ্য সংকটের শঙ্কা দেখা দেয়। কারণ বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম গম উৎপাদনকারী ও রপ্তানিকারক দেশ হলো ইউক্রেন।

এ চুক্তির মাধ্যমে আটকে থাকা ইউক্রেনের বন্দরগুলো আবার খুলে যাবে। শুধু গমই নয়, ইউক্রেনের উৎপাদিত গম এবং সূর্যমুখী তেল, বার্লি এবং ভূট্টা রপ্তানির দ্বারও খুলে গেল এই চুক্তির ফলে।

চুক্তি অনুযায়ী ইউক্রেনের তিনটি বন্দর ব্যবহার করে শস্য রপ্তানি করবে ইউক্রেন। এর মধ্যে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ওডেসা বন্দরও। আশা করা হচ্ছে চুক্তি হওয়ায় রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ বিরাজমান থাকলেও শস্য নিয়ে কোনো ঝামেলা হবে না।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে গত এক বছরে দেশে আটা–ময়দার দাম ৫০ থেকে ৫৬ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। গত মে মাসে ভারত গম রপ্তানি বন্ধ করার পর গম ও চালের দাম প্রায় সমান হয়ে গেছে। বিশ্ববাজার থেকে বাংলাদেশের বাজারে এক কেজি গমের আমদানি খরচ ৩৮ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত হয়েছে। আর চালও আনতে হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।

খাদ্যসচিব মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে ভারতের বাইরে বিকল্প রাষ্ট্রগুলো থেকে গম আমদানির চেষ্টা করেছি। এরই মধ্যে বুলগেরিয়া, কানাডাসহ বেশ কিছু রাষ্ট্রের সঙ্গে এ নিয়ে কথা হয়েছে। রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে গম রপ্তানির চুক্তি হওয়ার পর সেখান থেকে আনার ব্যাপারেও চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।’

অন্যদিকে চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিবিষয়ক সংস্থা ইউএসডিএ থেকে প্রকাশ করা বৈশ্বিক দানাদার খাদ্যের বাজার পরিস্থিতি প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেশি দামের কারণে এ বছর বাংলাদেশের গম আমদানি ৭৫ লাখ টন থেকে কমে ৭০ লাখ টনে দাঁড়াতে পারে।

সংস্থাটির হিসাবে, এ অর্থবছরে বাংলাদেশে চালের ভোগ প্রায় ৮ লাখ টন বেড়ে ৩ কোটি ৬৮ লাখ টন হতে পারে। গমের দাম বেড়ে যাওয়ায় চালের ওপরে এ চাপ বেড়েছে বলে সংস্থাটি মনে করছে। অন্যদিকে বিশ্ববাজারেও চালের দাম বাড়ছে। চালের আমদানির ওপর সরকার আমদানি শুল্ক কমানোর পরও আশানুরূপ আমদানি হচ্ছে না।