নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: করোনা পরিস্থিতিতে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমনে এ বছরের আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ২৫ হাজার ৮০০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৮৭ হাজার ৭২০ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য আমনে উচ্চফলনশীল হাইব্রিড জাতের ধান চাষ ও লাগসই প্রযুক্তি ব্যবহারের উপর গুরুত্ব দিয়ে কার্যক্রম চলছে বলে জানিয়েছে কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক।

আজ শনিবার (২২ আগস্ট ২০২০) মেহেরপুর জেলা প্রশাসন এবং কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ আয়োজিত মেহেরপুর জেলার সদর উপজেলার কালাচাঁদপুর গ্রামে আউশ ধান কর্তণ উদ্বোধনকালে অনলাইনে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: নাসিরুজ্জামান। সভায় সভাপতিত্ব করেন মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: আবদুল মুঈদ, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো: শাহজাহান কবীর, মেহেরপুরের পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলী প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, আউশ আবাদ বৃদ্ধির জন্য কৃষকদেরকে বীজ, সার, সেচসহ বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়েছে সরকার। সারের দাম কমানো হয়েছে। অন্যদিকে, কৃষি বিজ্ঞানীরা অনেকগুলো উচ্চফলনশীল জাতের উদ্ভাবন করেছে, যেগুলো চাষের ফলে গড় ফলনও বেড়েছে। আজকের ক্রপ কাটিংয়ে দেখা যাচ্ছে, প্রতি বিঘা জমিতে এখন ১৮-১৯ মণ ধান হচ্ছে যেটি অত্যন্ত গর্বের ও অহংকারের। অথচ, এক সময় আউশ উৎপাদন সবচেয়ে কম হতো। বিঘাতে মাত্র ২-৩ মণের মতো। ফলে, এবছর অনেক উৎসাহ ও আগ্রহ নিয়ে কৃষকেরা আউশ চাষ করেছেন। সারা দেশে আউশের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে।

উল্লেখ্য, মেহেরপুর জেলায় ক্রমাগত আউশ ধানের আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ১০ বছরে আউশ আবাদ বেড়েছে দ্বিগুণ। ২০১০-১১ সালে আউশ আবাদ হয়েছিল ১০ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে, চলতি বছরে আবাদ হয়েছে ২০ হাজার ৮৩০ হেক্টর জমিতে। আর গতবছরের তুলনায় এবছর ৩০ ভাগ বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। ফলন ভাল হওয়ায় এ বছরের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৭০ হাজার ৮২২ মেট্রিক টন অর্জিত হবে আশা করছে মেহেরপুর কৃষি বিভাগ।

আউশ আবাদ বৃদ্ধিসহ সকল ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বীজ, সার, সেচসহ কৃষি উপকরণে বিভিন্ন প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। মেহেরপুরে এবছর আউশের, মাসকলাই ও পেঁয়াজের উৎপাদন বৃদ্ধি জন্য ৮ হাজার ৫৫০ জন কৃষকের মাঝে ৩৮ লাখ টাকার প্রণোদনা বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া, সেচের পানির কম ব্যবহারের ফলে উৎপাদন খরচ কম হওয়া এবং কৃষি বিভাগের নিরলস উৎসাহ-সহযোগিতার ফলে কৃষকেরা আউশ আবাদে আগ্রহী হচ্ছেন।

করোনাকালেও আমনের লক্ষ্যমাত্রা ২৫ হাজার ৮০০ হেক্টর শিরোনামে সংবাদের তথ্য নিশ্চিত করেছেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অফিসার মো. কামরুল ইসলাম ভূইয়া।

এছাড়া, বাজার দর ভাল হওয়ায় মেহেরপুর জেলায় ক্রমাগত ভূট্টা চাষ বাড়ছে। গত ১০ বছরে আবাদ বেড়েছে প্রায় ১০ গুণ। ২০১৯-২০ বছরে ১৬ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে ভূট্টার আবাদ হয়েছে, উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন।