করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে

স্বাস্থ্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: যে কোন রোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে দরকার সচতেনতা ও নিয়ম মেনে চলা। সম্প্রতি মরণঘাতি সংক্রমণ রোগ করোনাভাইরাস বিশ্ব জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এই করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে ডব্লিউএইচও’র সতর্কতা ও পরামর্শ নিচে তুলে ধরা হলো।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এর পরামর্শগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমাদের সবার মেনে চলা উচিত। কেননা ইতিমধ্যে বাংলাদেশেও এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তিনজন।

করোনাভাইরাসের লক্ষণ: সাধারণ ফ্লুর মত উপসর্গ দেখিয়ে শুরু হলেও নতুন ধরনের করোনাভাইরাস পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছে আতঙ্ক। প্রতিদিনই কেড়ে নিচ্ছে একাধিক প্রাণ। নতুন এ করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়।

লক্ষণগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মত। শুরুটা হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্টও।

ডব্লিউএইচও বলছে, সঙ্কটের এই সময়ে আতঙ্কিত না হয়ে বরং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে নিজেকে ও আশেপাশের মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে হবে।

সতর্কতা ও সচেতনতা: স্বাস্থ্যবিধিতে বলা হয়েছে, সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকতে সাবান ও পানি দিয়ে ঘন ঘন হাত ধুতে হবে। মাংস ও ডিম অবশ্যই যথাযথ তাপে ও ভালোমত রান্না করে খেতে হবে।

হাঁচি ও কাশির সময় অবশ্যই হাত বা টিস্যু দিয়ে মুখ ও নাক ঢেকে রাখতে হবে। এরপর টিস্যু ফেলে দিতে হবে এবং অবশ্যই হাত ধুয়ে নিতে হবে।

যে কোনো অসুস্থ ব্যক্তির সেবা করার পর হাত ধুতে হবে। কোনো প্রাণির যত্ন নিলে বা স্পর্শ করলে ও প্রাণিবর্জ্য ধরার পরও হাতে ধুতে হবে। শরীরে যে কোনো সংক্রমণ এড়াতে রান্না ও খাওয়ার আগে ও পরে হাত ধুয়ে নিতে হবে।

করণীয়: ব্যবহার করা টিস্যু খোলা ঝুড়ি বা ডাস্টবিনে না ফেলে ঢাকনা রয়েছে এমন ঝুড়িতে ফেলতে হবে। হাতে গ্লাভস না পরে বা নিজে সুরক্ষিত না থেকে কোনো অসুস্থ ব্যক্তির মুখ ও দেহ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। একইভাবে গবাদিপশু ও বন্যপশুকে ধরার আগেও নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে।

রান্নাঘর ও বাজারে যেসব যেসব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে: কাঁচা মাংস, সবজি, রান্না করা খাবার কাটার জন্য ভিন্ন চপিং বোর্ড ও ছুরি ব্যবহার করতে হবে। কাঁচা মাংস, সবজি ও রান্না করা খাবার হাতে ধরার আগে অবশ্যই প্রত্যেকবার হাত ধুয়ে নিতে হবে।

রোগে ভুগে মারা যাওয়া বা অসুস্থ প্রাণীর মাংস একেবারেই খাওয়া চলবে না। তবে রোগের প্রাদুর্ভাব রয়েছে এমন এলাকাতেও উপযুক্ত তাপে ও ভালোভাবে সিদ্ধ করা মাংস খেলে ঝুঁকি নেই।

কাঁচা বাজারে গিয়ে কোনো প্রাণী ও প্রাণীর মাংস হাতে ধরলে দ্রুত হাত ধুয়ে ফেলতে হবে। কাঁচা বাজারে অবস্থানের সময় অযথা মুখে-চোখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

কাজের জায়গাটি দিনে অন্তত একবার হলেও পরিষ্কার বা জীবাণুমুক্ত করতে হবে। পরিধেয়টি অবশ্যই প্রতিদিন বদল করতে হবে এবং ধুতে হবে। সংক্রমণ এড়াতে হাতে গ্লাভস ব্যবহার করা ভালো।

ভ্রমণ বিষয়েও সচেতন থাকার পরামর্শ ডব্লিউএইচও বলছে, যদি জ্বর-সর্দি অনুভূত হয়, তাহলে যে কোনো ভ্রমণ বাতিল করাই ভালো। পাশাপাশি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে স্বাস্থ্যপরীক্ষা ও ওষুধ খেতে হবে। জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন এমন কারো সঙ্গে ঘনিষ্ট হওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

মাস্ক ব্যবহারে সতর্কতা: যদি মাস্ক ব্যবহার করা হয়, তবে নাক ও মুখ ভালোভাবে ঢেকে রাখতে হবে। একবার মাস্ক পরলে তা বার বার স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

একবার মাস্ক ব্যবহারের পর ফেলে দিতে হবে। মাস্ক ধরার পর হাতে ধুয়ে নিতে হবে। যদি ভ্রমণের সময় অসুস্থ বোধ হয়, তবে সঙ্গে সঙ্গে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে। এর আগে রোগের ইতিহাস থাকলে সেটাও চিকিৎসককে জানাতে হবে। যেখানে সেখানে বা জনসমাগমের স্থানে থুথু ফেলা যাবে না। অসুস্থ প্রাণী ধরা থেকে সতর্ক থাকতে হবে।

সার্স ও মার্স ভাইরাস পরিবারের এই করোনাভাইরাসের নাম দেওয়া হয়েছে ২০১৯-এনসিওভি। পরিস্থিতি মোকাবিলায় চীন ও বিশ্বের অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে ডব্লিউএইচও।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো করোনা ভাইরাসে তিনজন শনাক্ত

করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে ডব্লিউএইচও’র সতর্কতা ও পরামর্শ শিরোনামের সংবাদটি তৈরিতে বিডি নিউজ এর তথ্য সহযোগিতা নেয়া হয়েছে।