আবু খালিদ, জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, ফল মেলা থেকে: পায়েস, নুডলস, শুকনা বড়া পিঠা, ঝিনুক পিঠা, রস বড়া, আচার, চিপস এসব খাদ্যপণ্যের মূল উপকরণ কাঁঠাল। শুধু এগুলো নয় কাঁঠাল দিয়ে এরকম মজাদার ও ‍মুখরোচক প্রায় শতাধিক পদের (রকমের) খাদ্য তৈরি সম্ভব।

প্রথমে শুনলে অবাক বনেই যেতে হবে। কিন্তু রাজধানীর ফার্মগেট সংলগ্ন আ. কা. মু. গিয়াস উদ্দীন মিলকী অডিটরিয়াম চত্বরে চলা জাতীয় ফল মেলায় কাঁঠাল কর্ণারে প্রবেশ করলেই বাস্তব চিত্র দেখা যাবে। পাওয়া যাবে কাঠাল দিয়ে তৈরি ১০০ পদের বেশি খাবারের দেখা।

দর্শনার্থীরাও প্রথমে কাঠাল কর্ণারে প্রবেশ করে এ দৃশ্য দেখে অবাকই হচ্ছেন। কাঁঠাল দিয়ে এতো ধরণের খাবার তৈরি সম্ভব তার স্বাক্ষী হতে পেরেও যেন তাদের ভালো লাগছে। মুগ্ধ হয়ে প্রতি পদের খাবার দেখছেন তারা।

অনেকেই তো এসব খাদ্যপণ্য তৈরির রেসিপি নিতে ব্যস্ত হয়ে পরেছেন। রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে আসা গৃহিণী সালমা বেগম এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে বলেন, কাঁঠাল দিয়ে এতো ধরণের খাবার তৈরি সম্ভব তা না দেখলে বিশ্বাষ করা অনেক কঠিন।

তিনি জানান, সত্যিই আমি খুবই খুশি। খুবই ভালো একটা অভিজ্ঞতা হলো। আমার তো এখনই ইচ্ছে করছে কিছু খাবার তৈরি করতে। আয়োজকদের ধন্যবাদ।

তবে এসব খাবারের রেসিপিগুলো সবার মাঝে সহজলভ্য করার তাগিদ দিলেন একাধিক দর্শনার্থী ও ভোজনরসিকেরা। তারা জানান, ‍কাঁঠাল দিয়ে এতো ধরণের খাবার তৈরি সম্ভব এটা তো এখন বাস্তব। তাই এগুলোর রেসিপি যেন সবার কাছে সহজলভ্য হয় সে পদক্ষেপ নিতে হবে। তাহলে কাঠালের ব্যবহার যেমন বাড়বে ঠিক কাঠালের পুষ্টিও সবাই পাবেন।

অনেক দর্শনার্থীর মত এসব খাবার পণ্যে খাওয়ার সুযোগ করে দিলে ভালো হতো। সেটা বিক্রির মাধ্যমেও করা যেতে পারে। ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে আসা দর্শনার্থী আবু সাঈদ এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে বলেন, এসব খাবারের স্বাদ নেয়া সম্ভব হলে খুব ভালো হতো। তাহলে এগুলোর প্রতি আরও আগ্রহ বৃদ্ধি পেতো।

পেশায় ব্যবসায়ী এ দর্শনার্থী জানান, শিশুদের জন্যেও অনেক খাবার রয়েছে। মেলায় যদি তাদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা থাকতো তাহলে তারা এর ওপর আগ্রহ বেশি দেখাতো।

সরেজমিনে কাঠাল কর্ণার ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন জাতের কাঁঠাল দিয়ে সাজানো হয়েছে কর্ণারটি। আর কাঠাল দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ধরণের খাবার পণ্য প্যাকেট করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। প্রতিটি প্যাকেটের ওপরে লেখা আছে খাবার আইটেমটির নাম।

এখানে বিভিন্ন জাতের কাঁঠাল এর গাছের চারা বা চারা কলম কেনার সুযোগও রয়েছে। এছাড়া আমাদের দেশে উৎপাদিত বিভিন্ন জাতের কাঠালের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে এ কাঠার কর্ণারে। কাঠালের ব্যবহার, পুষ্টিসহ নানা বিষয়ে তথ্যও মিলছে।

কৃষি বিপণন অধিদফতর, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, গাজীপুর ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর এ তিন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে প্রায় ১০০ পদের কাঁঠাল দিয়ে এসব খাবার পণ্য প্রদর্শন করা হচ্ছে। কৃষি বিপণন অধিদফতরের কাঠালের তৈরি খাবার পণ্যের রেসিপি পাওয়া গেলেও অন্য দুই প্রতিষ্ঠানের নেই।

এ বিষয়ে তারা জানান, নতুন আইটেম করায় এখনো রেসিপি সবগুলোর করা সম্ভব হয় নি। তবে শিগগিরই তা করা হবে। এছাড়া ওয়েবসাইটেও এ নিয়ে তথ্য পাওয়া যাবে।

গত শুক্রবার (২২ জুন) রাজধানীর ফার্মগেট সংলগ্ন আ. কা. মু. গিয়াস উদ্দীন মিলকী অডিটরিয়াম চত্বরে শুরু হয়েছে এ ফলদ বৃক্ষ রোপণ পক্ষ ও জাতীয় ফল প্রদর্শনী ২০১৮। আজ রোববার সন্ধ্যায় শেষ হবে মেলাটি।

এবারের ফল মেলায় ৯টি সরকারি ও ৫১টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মোট ৮১টি স্টল রয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এ জাতীয় ফল মেলার প্রতিপাদ্য ‘অপ্রতিরোধ্য দেশের অগ্রযাত্রা, ফলের পুষ্টি দেবে নতুন মাত্রা’। প্রচলিত, অপ্রচলিত নানা ধরণের ফলের সাথে পরিচিতি হওয়ার সুযোগ মিলছে এ মেলায়।