নিজস্ব  প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ফলমূল ও শাকসবজিতে আর কীটনাশক ও ফরমালিনের ভয় নেই। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে বাজারে মিলছে কার্বন গ্রিণ। যা ফলমূল ও শাকসবজির উপরিভাগে লেগে থাকা কীটনাশক ও ফরমালিনের ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ মুক্ত করে খাবার করবে নিরাপদ।

আজ ১৪ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) রাজধানীর ডেইলী স্টার ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে এমন তথ্য তুলে ধরেন লাইফ অ্যান্ড হেলথ লিমিটেড এর চেয়ারম্যান ডা. শক্তি পাল।

তিনি জানান, লবণ পানি, ভিনেগার কিংবা পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট ব্যবহারে ফলমূল ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ কীটনাশক ও রাসায়নিক মুক্ত হয়, যা খাওয়ার জন্য নিরাপদ নয়।

১৮০ মিলিয়ন বাংলাদেশীর খাদ্য নিশ্চিতে উচ্চ ফলনের দরকার উল্লেখ করে ড. শক্তি বলেন, বেশি ফলনের জন্য খাদ্য-শস্যে ব্যবহার করা হয় কীটনাশক। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, গত ১০ থেকে ১২ বছরে বাংলাদেশের কৃষি-পণ্যে কীটনাশকের ব্যবহার ৩২৮ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।

তিনি জানান, সাধারণত কীটনাশকগুলোর মধ্যে অর্গানোফসফেট (প্যারাথিওন, ম্যাল্যাথিয়ন, ডায়াজিনন), কার্বামেট্স (এলডিকার্ব, কার্বোফুরান), পাইরিথ্রয়ড্স (এলাথ্রিন, রেসমেথ্রিন, প্যারমেথ্রিন, সাইফ্লথ্রিন) এবং অর্গানোক্লোরাইডস (ডিডিটি, এলড্রিন) বেশি ব্যবহার হয়।

জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ফুড সেফটি ল্যাবরেটরি, ফসল ভেদে কখনো কখনো সহনশীল মাত্রার চেয়ে ৫ থেকে ৩১ গুণ বেশি কীটনাশক এবং কীটনাশক জাতীয় পদার্থের অস্থিত্ব পেয়েছে।

লাইফ অ্যান্ড হেলথ লিমিটেড সামাজিক প্রচারণা ও গণসংযোগের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ এবং যেসব সংস্থা স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রচারনা এবং রোগ প্রতিরোধ নিয়ে কাজ করে, তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে এই অবস্থার পরিবর্তন করতে চায়, বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, আমরা নিরাপদ ও কম খরচে কীটনাশক এবং ফরমালিন দূষণের প্রতিকার হিসেবে নিয়ে এসেছি কার্বন গ্রিণ ।

কার্বন গ্রিণের কার্যকারিতা ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে তিনি জানান, সোডিয়াম বাই কার্বনেট এবং অত্যন্ত সক্রিয় কার্বনের সঠিক অনুপাতের সংমিশ্রনে কার্বন গ্রিন তৈরি হয়। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান ‘এস.জি.এস, ‘এন.আই.এফ’এবং ‘ও.এম.আই.সি’ এর পরীক্ষাগারে কীটনাশক যুক্ত খাদ্যদ্রব্য ও সবজিতে নির্দিষ্ট মাত্রায় কার্বনগ্রিন প্রয়োগে খাদ্যদ্রব্য ৯৪ শাতংশ পর্যন্ত বিষমুক্ত হয়েছে। ’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, থাইল্যান্ড থেকে আমদানিকৃত কার্বন গ্রিণ বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) দ্বারা পরীক্ষিত এবং ‘বি.এস.টি.আই’ অনুমোদিত।

ফলমূল ও শাকসবজিতে অতিমাত্রায় কীটনাশক ও ফরমালিন ব্যবহারের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা সৃষ্টির জন্য গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানান লাইফ অ্যান্ড হেলথ লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. নিলাঞ্জন সেন।

তিনি বলেন, আমরা যদি কার্বন গ্রিণ দিয়ে নির্দিষ্ট নিয়মে ফলমূল, শাকসবজি পরিস্কার করি তাহলে এসব খেতে আর আমাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। খোলাবাজার থেকে ফরমালিন ও কীটনাশকযুক্ত ফলমূল কিনলে আমরা দেখি অনেকক্ষেত্রেই তা দীর্ঘদিনেও পঁচে না। কিন্তু কার্বন গ্রিণ ব্যবহার করলে ওই একই ফল তিন থেকে চার দিনে পঁচে যাবে। এতে প্রমাণিত হয় যে কার্বন গ্রিণ কাজ করে।

সংবাদ সম্মেলনে ডা. এনামুল হক, ফয়সাল আনোয়ার, রাসেল মাহমুদ খান, সামসুল আরেফিনসহ লাইফ অ্যান্ড হেলথ লিঃ এর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনের শেষ পর্যায়ে কার্বন গ্রিন দিয়ে কীটনাশক ও ফরমালিনযুক্ত ফল ও সবজি  পরিস্কারের পদ্ধতি দেখানো হয়।