বাঙ্গি

বাসস: পুষ্টিসমৃদ্ধ বাঙ্গি চাষে কুমিল্লা অঞ্চলের কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। ভালো ফলন পাওয়ায় তারা ভীষণ খুশি। রমজান মাস ও গরম হওয়ার কারণে বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছেন বলে জানান কৃষকেরা।

কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার গুনাইঘর (দঃ) ইউনিয়নের শাকতলা এবং ধামতী উত্তর পাড়া মাঠ জুড়ে গত ৪০ বছর ধরে এবং দেবিদ্বারের আনাচে-কানাচে প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে বাঙ্গি চাষ করছেন প্রায় শতাধিক কৃষক।

স্থানীয় বাঙ্গি চাষিরা জানায়, কম পুঁজিতে বেশী মুনাফা ও প্রচুর ফলন হওয়ার কারণে প্রতি বছর তারা বাঙ্গির চাষ করে আসছে। এ দুটি গ্রাম এখন মৌসুমী ফল বাঙ্গির জন্য বিখ্যাত অঞ্চলে পরিণত হয়েছে।

পাশাপাশি ধামতী ও আশপাশের এলাকার কৃষি জমি বাঙ্গির চাষের জন্য খুবই উপযোগী। তাই জীবন জীবিকার জন্য প্রধান ফসল হিসেবে এখানে ৪০ বছর ধরে বাঙ্গি চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন অনেক কৃষক।

অনেকে কাঁচা বাঙ্গি সবজি হিসেবে রান্না করে খেয়ে থাকে। ফল পাকলে হলুদ রঙ ধারণ করে। বাঙ্গি মূলত পাকা ফলের সুমিষ্ট সৌরভের কারণে বিখ্যাত। একটু বেশি পেকে গেলে বাঙ্গি ফেটে যায়। তাই অধিকাংশ বাঙ্গিকে ফাটা দেখতে পাওয়া যায়। ফলের ওজন এক থেকে চার কেজি পর্যন্ত হতে পারে।

এটি চাষের খরচ তুলনামূলক কম, আয় বেশি। তাই চাষিরা বাঙ্গি চাষে বেশ আগ্রহী। বাঙ্গি চাষের জন্য শুষ্ক ও উষ্ণ জলবায়ু সবচেয়ে উপযোগী। উর্বর বেলে দোআঁশ ও পলি মাটি বাঙ্গি চাষের জন্য সর্বোত্তম।

৬০ বছর বয়সী কৃষক কেরামত আলী বলেন, এবার চার বিঘা জমিতে বাঙ্গির চাষ করেছি। সবমিলিয়ে প্রায় চল্লিশ হাজার টাকা মতো খরচ হয়েছে। এখন পর্যন্ত এক লক্ষ বিশ হাজার টাকার বাঙ্গি বিক্রি করেছি। আরো প্রায় ৮/১০ হাজার টাকার বাঙ্গি এখনো মাঠে রয়েছে।

অপর কৃষক ধামতী উত্তর পাড়া মনিরুজ্জামান বলেন, আমাদের বাঙ্গি বীজ নিজেরাই সংগ্রহ করে রাখি পরবর্তী বছরের জন্য। গতবছর বৃষ্টি ও শীল পড়াতে বাঙ্গি চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। তবে চলতি বছরে বাঙ্গির উৎপাদন থেকে প্রচুর লাভ হয়েছে।

এ বিষয়ে দেবিদ্বার উপজেলরা কৃষি কর্মকর্তা সইদুজ্জামান জিহাদ বলেন, এতো পরিমানে বাঙ্গি চাষ এর আগে দেবিদ্বারে দেখা যায়নি এবং এবার যেহেতু ফলন ভালো আর কৃষকরা লাভের মুখ দেখছেন সেহেতু আগামীতে এর চাষের ব্যপ্তি স্বাভাবিক ভাবেই বাড়বে।