ফসল ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: আমাদের দেশে প্রায় ২৭৫০ হাজার হেক্টর জমিতে কুল চাষ হয় এবং উৎপাদন প্রায় ৭২০০০ মেট্রিক টন। বর্তমানে আপেল কুল, বাউ কুল, বারি কুল-১, বারি কুল-২, বারি কুল-৩ ব্যাপকভাবে চাষ করা হচ্ছে।কুল গাছের ফল ছিদ্রকারী উইভিল পোকা দমনে যা করবেন।

ফল ছিদ্রকারী উইভিল কুল গাছের মারাত্মক ক্ষতিকারক পোকা। কয়েক বছর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে কুলের উন্নত জাতে এ পোকার আক্রমণ দেখা যাচ্ছে। পোকার সদ্যজাত লার্ভা হালকা হলুদ বর্ণের এবং এদের পা থাকে না। পূর্ণ বয়স্ক পোকা গাঢ় বাদামি থেকে কালো বর্ণের হয়। পূর্ণ বয়স্ক পোকা কচি ফলে ডিম পাড়ে এবং ডিম ফুটে লার্ভা ও পিউপা থেকে পূর্ণ রূপ ধারণ করে।

ফল ছিদ্রকারী উইভিল পোকা যেভাবে কুলের ক্ষতি করে থাকে-

সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বগুড়ার সূত্র মতে, সদ্য জাত লার্ভা কচি ফলের বীজে আক্রমণ করে এবং সম্পূর্ণ বীজ খেয়ে ফেলে। আক্রান্ত ফলের নিচে কাল দাগ পড়ে এবং বীজের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়, ফল ছোট গোলাকার হয় এবং ফ্যাকাশে ও হলুদ বর্ণ ধারণ করে। আক্রান্ত ফল গাছ থেকে ঝরে পড়ে বা গাছ শুকিয়ে যায়। আক্রান্ত ফলে পোকার লার্ভা বা পিউপা বা পূর্ণ বয়স্ক পোকার মল দেখা যায়।

ফলের ভেতরের অংশ খাওয়ার পর গোলাকার ছিদ্র করে পোকা বের হয়ে আসে। আক্রমণের মাত্রা বেশি হলে বাগানের সব গাছের ফল আক্রান্ত হয়। তবে আপেল কুল ও বাউ কুলে আক্রমণ বেশি হয়। সাধারণত গাছে ফুল আসার পর এ পোকার আনাগোনা দেখা যায় এবং পরাগায়নের পর গাছে ফল ধরা শুরু হলে পোকার আক্রমণ শুরু হয়।

আরোও পড়ুন: কুলের টিউব স্পিটল বাগ রোগের লক্ষণ ও দমন কৌশল

এ পোকা দমনের জন্য যা করতে হবে-
কুল বাগানের আশপাশের ঝোপ-জঙ্গল ও আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।
কুল গাছে অসময়ে আসা ফুল ও কুড়ি নষ্ট করে ফেলতে হবে।
গাছ ও মাটিতে পড়ে যাওয়া আক্রান্ত ফলগুলো সংগ্রহ করে লার্ভা বা পিউপা বা পূর্ণ বয়স্ক পোকাসহ ধ্বংস করতে হবে।

বেশি আক্রান্ত এলাকায় ফুল ধরার আগেই সব বাগান ও এলাকা অনুমোদিত কার্বারাইল জাতীয় কীটনাশক বা ডাইমেথোয়েট জাতীয় কীটনাশক সঠিক মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে।

যেহেতু পোকাটি ফলে ডিম পাড়ে এবং লার্ভা ফলের ভেতর বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয় সেজন্য আক্রমণের আগেই পোকা দমনের ব্যবস্থা নিতে হবে। এজন্য পরাগায়নের পর ফল ধরা শুরু হলে সাইপারমেথ্রিন জাতীয় কীটনাশক সঠিক মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে।

কুল গাছের ফল ছিদ্রকারী উইভিল পোকা দমনে যা করবেন সংবাদের তথ্য কৃষি তথ্য সার্ভিস থেকে নেওয়া হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ