চলতি বছরে কৃষি ঋণের

ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: করোনা মহামারির কারণে সরকার ঘোষিত কৃষিখাতের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ প্রণোদনা পুন:অর্থায়ন তহবিলের ঋণ বিতরণের পরিমান খুবই সামান্য। প্রণোদনা তহবিল গঠনের মেয়াদ ইতিমধ্যে চার মাস অতিক্রম করলেও তহবিলের ঋণ বিতরণ অত্যন্ত ধীর গতিতে চলছে। তাই কৃষকদের প্রণোদনা ঋণ বিতরণ মেয়াদ চলতি বছরের ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিতরণ বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ব্যাংকগুলোকে চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঋণ বিতরণের সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া আছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন মোতাবেক, গ্রামাঞ্চলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি স্তরের কৃষকরা ফুল, ফল, শস্য, মাছ, হাঁস, মুরগি, দুগ্ধ খামার এবং প্রাণিসম্পদ উৎপাদনের জন্য পুন:অর্থায়ন তহবিল থেকে বিশেষ ঋণ পাওয়ার যোগ্য।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে পুন:অর্থায়ন তহবিলের আওতায় চলতি বছরের জুলাই শেষে ব্যাংকগুলো মাত্র ৫০০ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। কৃষিখাতের জন্য বিশেষ প্রণোদনা তহবিলের আওতায় ৫ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করা হয়েছে। করোনা ভাইরাসের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য চলতি বছরের এপ্রিল মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষিখাতের জন্য ৫ শতাংশ সুদে এই তহবিল ঘোষণা করেন।

পরবর্তী সময়ে উপকারভোগীদের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষ পুন:অর্থায়ন তহবিলের ঋণের সুদ ৪ শতাংশ নির্ধারণ করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। জুলাই শেষে ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল থেকে ঋণ বিতরণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ৪৩টি ব্যাংক চুক্তিবদ্ধ হয়।

চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, বিশেষ প্রণোদনা তহবিলের আওতায় অংশগ্রহণকারী ব্যাংকসমূহ বাংলাদেশ ব্যাংক হতে নির্ধারিত ১ শতাংশ সুদে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই পর্যন্ত ব্যাংকগুলো ১৮ হাজার ৩৭৭টি আবেদন গ্রহন করেছে। এরমধ্যে ১৭ হাজার ৯৮০টি আবেদন অনুমোদন দিয়েছে। এসব আবেদনের বিপরীতে ৪৯৭ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। কৃষক ও কৃষিখাতের উপকারভোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৮শ ১ জনে।

অংশগ্রহণকারী ব্যাংকসমূহ পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গ্রহণের দিন হতে ছয়মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ ১৮ মাসের মধ্যে আসল এবং সুদ পরিশোধ করবে।

ঋণ গ্রহিতাদের জন্যও একই বিধান রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গ্রাহককেও ঋণ গ্রহনের দিন হতে দেড় বছরের মধ্যে পুরো অর্থ পরিশোধ করতে হবে। গ্রেস পিরিয়ড পাবেন ছয়মাস।

২০২০-২১ অর্থবছরে কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালার আওতায় ২৬ হাজার ২৯২ কোটি টাকা কৃষি ঋণ বিতরণ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ বেশি।

চলতি অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো ৩ হাজার ১৯৫ কোটি টাকার কৃষি ঋণ বিতরণ করবে। অপর দিকে বিশেষায়িত দুটি ব্যাংক (বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক) বিতরণ করবে ৭ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা।

বেসরকারি খাতের ৪১টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে ৩৯টির জন্য ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ হাজার ৫৪৬ কোটি টাকা এবং বিদেশি খাতের ৯টি ব্যাংকের ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৭শ ১ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রণোদনা তহবিলের আওতায় ঋণ বিতরণের জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে সময় বাড়ানো হয়েছে। ব্যাংকগুলোর সময় বাড়ানোর জন্য সরকার পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।

কৃষকদের প্রণোদনা ঋণ বিতরণ মেয়াদ বাড়ল শিরোনামে সংবাদের তথ্য বাংলানিউজ থেকে নেওয়া হয়েছে।