কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার সিদ্ধান্ত, তিন শ্রেণিতে ভাগ হবে কৃষক। আগামী মৌসুম থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই, ২০১৯) কৃষক পর্যায়ে ধান-চালের ন্যায্য মুল্য নিশ্চিত করণের নিমিত্তে সরকার গৃহীত পদক্ষেপের অংশ হিসেবে কৃষকদের নিকট হতে সরাসরি ধান সংগ্রহ/প্রক্রিয়াকরণ, মিলারদের মাধ্যমে ক্রাশিং ও সংরক্ষণ এবং চাল রপ্তানি বিষয়ক আন্ত:মন্ত্রণালয় সভায় এ তথ্য তুলে ধরেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রজ্জাক।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) এর সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, এখনও বাংলাদেশের কৃষি মুল অর্থনীতিতে ভালো অবদান রাখছে। আগামী মৌসুমে কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি সরকার ধান সংগ্রহ করবে। কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা হলে টাকা সরাসরি কৃষকের হাতে যাবে। কৃষকরা রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে ফসল ফলাবে, তারা ন্যায্য মুল্য পাবে না এটা হতে পারে না।

তিনি জানান, কৃষকদের লাভবান করতে প্রয়োজনে সারের দাম আরও কমানো হবে। কৃষি যন্ত্রে প্রণোদনা বৃদ্ধি করা হবে। চাল রপ্তানি করে বিশ্বের বাজারে অবস্থান তৈরী করতে হবে।

প্রতিযোগিতামুলক বিশ্ববাজারের টিকে থাকার মান সম্মত চাল আমাদের দেশে উৎপন্ন হয়। যদিও এই মুহুর্তে বিশ্ব বাজারে চালের মুল্য কম তার পরও আমাদের রপ্তানিতে যেতে হবে বলে মত দেন তিনি।

ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, চাল রপ্তানির ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ প্রণোদনা দেয়া হবে। কীভাবে কৃষকদের কাছ হতে ধান সংগ্রহ করা যায় এব্যাপারে সবার পরামর্শ চান কৃষিমন্ত্রী।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, আগামী মৌসুমে যেন ধানের মুল্যের ক্ষেত্রে বিরুপ ঘটনার উদ্ভব না হয় সে ব্যাপারে সরকার প্রস্তুত রয়েছে। কৃষিকে লাভ জনক করতে হলে এর উৎপাদন খরচ কমাতে হবে।

তিনি বলেন, উৎপাদন খরচ কমানোর জন্য শুধু ধান কাটার যন্ত্রই নয়, ধান বপন এবং মারাইয়ের যন্ত্রও কৃষকদের দেয়া হবে।

কৃষিমন্ত্রী জানান, ধান সংগ্রহের ক্ষেত্রে তিন শ্রেণীতে বিভক্ত করা হবে। প্রান্তিক চাষি, মাঝারি চাষি ও বড় চাষি। এছাড়া প্রত্যেক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার কাছে আর্দ্রতা মাপার যন্ত্র থাকবে, সে কৃষকদের বাড়িতে গিয়ে ধানের আর্দ্রতা পরিমাপ করবে।

সরকার ধান সংগ্রহ করে মিল মালিকদের মাধ্যমে ক্রাশ করে চাল করবে।

মিল মালিকদের সরকার লাভও দিবে এ প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে মিলাররা জানান, যে তারা সমস্ত দায়িত্ব নিতে চান। এছাড়া তারা কিছু প্রস্তবনা দেন। যেমন রপ্তানি বাজার উন্মুক্ত করা এবং চাল রপ্তানির ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ প্রণোদনা দেয়া।

কৃষকদের বিনা সুদে বা স্বল্প সুদে ঋণ দেয়া হলে এনজিওর ঋণ পরিশোধের জন্য তারাহুরা করে ধান বিক্রি করতে হবে না। ধান সংগ্রহ বৃদ্ধি করে ২০ লাখ মে:টন করা।

 সভায় জানানো হয় বিগত ১০বছরে ফসলের উৎপাদন বছরে ৬লাখ মে:টন করে বেড়েছে।

খাদ্য মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ২০১৭ সালে হাওরাঞ্চলের অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ফসলের যে ক্ষতি হয় সে সময় ৪০ লাখ মে:টন চাল আমদানি করা হয়, সে চাল এখনও রয়ে গেছে যার প্রভাব পরেছে এবারের বোরো মৌসুমে। সারা দেশে ১৬২টি খাদ্য গুদাম তৈরী করা হবে, যার মোট ধারণ ক্ষমতা ৭ থেকে ৮ লাখ মে:টন।

জমিতে সেচের জন্য বিদ্যুতে সরকার যে প্রণোদনা দেয় কৃষকরা তা পায় না। কৃষিতে লাখসই প্রযুক্তি নিতে হবে  বলে জানান খাদ্যমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, গত মৌসুমে আমাদের খাদ্য শস্য উৎপন্ন হয়েছিল ৪ কোটি ১৩ লাখ মে: টন, এর মধ্যে শুধু ধান উৎপন্ন হয়েছিল ৩ কোটি ৭৮ লাখ মে:টন।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: নাসিরুজ্জামানের সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মফিজুল ইসলাম, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিবসহ, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষি, খাদ্য, বাণিজ্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং চাল কল মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ ব্যবসায়ীসহ এফবিসিসিআই এর প্রতিনিধি।

কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার সিদ্ধান্ত, তিন শ্রেণিতে ভাগ হবে কৃষক  সংবাদটির তথ্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন: গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অবশ্যই জবাবদিহিতার আওতায় আনার নির্দেশ কৃষিমন্ত্রীর