কৃষি যন্ত্রপাতির প্রসারে ভর্তুকি

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: কৃষি যন্ত্রপাতির প্রসারে ভর্তুকি আরও বাড়ানো হবে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।

তিনি বলেছেন, দেশের কৃষি উন্নয়নে যান্ত্রিকীকরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যান্ত্রিকীরণের প্রসার ঘটাতে সরকার উন্নয়ন সহয়তা বা ভর্তুকি দিচ্ছে। কৃষি যন্ত্রপাতিতে ভবিষ্যতে ভতুর্কি আরও বাড়ানো হবে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) অডিটরিয়ামে তিনদিনের ‘জাতীয় কৃষি যন্ত্রপাতি মেলা ২০১৯’উপলক্ষ্যে ‘বাংলাদেশে কৃষি যান্ত্রিকীকরণে অর্জন, সমস্যা ও সম্ভাবনা’বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মন্ত্রী বলেন, দেশে এখনও কৃষির গুরুত্ব অনেক বেশি। জিডিপিতে কৃষির অবদান ১৭ থেকে ১৮ ভাগ। বর্তমান সরকার কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষিতে বাজেটে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, কৃষির যে অর্জন তা কোন যাদুর কাঠিতে অর্জন হয়নি। এখানে বর্তমান সরকারে অনেক অবদান রয়েছে। বর্তমানে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারও আগের চেয়ে অনেক বেশি কাজ করছেন।

তিনি আরও বলেন, কৃষিকে লাভজনক ও বাণিজ্যিকীকরণে যান্ত্রিকীকরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য সরকার কৃষি যান্ত্রিকীকরণের সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে। কৃষি উন্নয়ন কতো গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু প্রচার নেই। এই অনুষ্ঠানেও কয়েকটি মিডিয়া এসেছে। আমরা মিডিয়াকে আনতে পারি নাই। কৃষি উন্নয়নে সাংবাদিকদের কাছ থেকে যথেষ্ট সহয়তা প্রয়োজন।

সরকারের ধান ক্রয় প্রসঙ্গে কৃষিমন্ত্রী বলেন, সরকারিভাবে ধান ক্রয়ে কৃষকদের লাভ হয় না। লাভবান হয় মিলাররা। এজন্য কৃষি উপকরণের ওপর আরো বেশি প্রণোদনা ও সহায়তা দেয়ার চিন্তা করা যেতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় দেশ এখন সত্যিকার উন্নয়নের মহাসড়কে।

কৃষি যন্ত্রপাতির প্রসারে ভর্তুকি আরও বাড়ানো হবে উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, কৃষিকে সার্বিক উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত করতে যান্ত্রিকীকরণের কর্মকান্ডকে বেগবান করতে হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুল মুঈদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের প্রফেসর ড. মো. মঞ্জুরুল আলম।

মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন পরিকল্পনা কমিশনের প্রাক্তন সদস্য ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস প্রফেসর ড. এম এ সাত্তার মন্ডল, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. ওয়ায়েস কবীর, এসিআই মটরস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এফ এইচ আনসারী ও দেশি কৃষি যন্ত্রের উদ্ভাবক কৃষক মো. আনোয়ার হোসেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খামার যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প (২য় পর্যায়) এর প্রকল্প পরিচালক শেখ মো. নাজিম উদ্দিন।

কেআইবি চত্বরে ‘যান্ত্রিকীকরণই গড়বে আধুনিক ও লাভজনক কৃষি প্রতিপাদ্যে আয়োজিত এ মেলা উদ্বোধন করে বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন কৃষিমন্ত্রী।

এর আগে মেলা উপলক্ষ্যে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা থেকে শুরু হয়ে কেআইবি চত্বরে শেষ হয়।

মেলায় সরকারি ৮টি ও বেসরকারি ২১টি প্রতিষ্ঠানের ২৭ টি স্টল ৩টি প্যাভেলিয়ন রয়েছে। বিভিন্ন প্রকার আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ও ব্যবহার সম্পর্কে প্রযুক্তি নির্ভর প্রদর্শনী সাজিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো । সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য মেলা উন্মুক্ত থাকবে।

আরও পড়ুন: লাভজনক পর্যায়ে নিয়ে কৃষিকে সম্মানজনক পেশায় পরিণত’র আহ্বান

এ মেলার মাধ্যমে কৃষক ও কৃষি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ব্যয় সাশ্রয়ী, লাভজনক ও আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। দ্বিতীয়বারের মতো এ মেলার আয়োজনে রয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয় ও ডিএই’র খামার যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প।