কৃষি যন্ত্র নিজেদের তৈরিতে

ফসল ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: কৃষি যন্ত্র নিজেদের তৈরিতে গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কৃষি ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহারে জোর দিয়ে তিনি নিজেদের কৃষি যন্ত্র তৈরির কথা বলেন।

কৃষি যান্ত্রিকীকরণটাকে আমরা আরও উৎসাহিত করতে চাই উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাইরে থেকে কিনে নিয়ে আসব না। আমাদের মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি আছে, ডিজেল প্ল্যান্ট আছে, সেখানেও কিন্ত আমরা এই কৃষি য়ন্ত্রগুলো এ্যাসেম্বল করতে পারি। কিছু পার্ট এখানে তৈরি করতে পারি।

তিনি বলেন, এজন্য গবেষণা করে করে কোন ধরনের কী দরকার, সেটা বের করা আমাদের প্রয়োজন। এজন্য এবার আমরা ৩ হাজার ১৯৮ কোটি টাকা কিন্তু বরাদ্দ রেখেছি কৃষি যান্ত্রিকীকরণের জন্য।

সোমবার (১৫ জুন, ২০২০) বিকালে বাংলাদেশ কৃষক লীগ আয়োজিত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্যের সময়ে তিনি এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

পরিবেশ রক্ষায় দেশবাসীকে বেশি করে গাছ গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার দলের কে কত গাছ লাগাল, তা তিনি দেখতে চান।

শেখ হাসিনা বলেন, অন্তত ১ কোটি গাছ আমরা লাগাবোই। একটা অস্বাভাবিক অবস্থার মধ্যেও এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিটা আমরা নিলাম।এখানে শুধু উদ্বোধন করলেই হবে না। কে কত গাছ লাগাল, এবার সেটাও দেখতে চাই।

এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী গণভবনে গাছের চারা রোপণ করেন।

গাছ লাগানোর পর তার যত্ন নেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি। বলেন, গাছ লাগালেই হবে না। গাছের কিন্তু পরিচর্যা করতে হবে। নিজের সন্তানকে যেমন লালন-পালন করতে হয়, একটা গাছ লাগালে তাকেও কিন্তু যত্ন করতে হবে। তাহলে সে ফল দেবে। আমি ফল খাব, যত্ন করব না, এটা তো হয় না।

উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে সবুজ বেষ্টনি তৈরির জন্য নারকেল, ঝাউ, খেজুর, তাল গাছ রোপণের পাশাপাশি ব্যাপকভাবে ফলের গাছ লাগানোর আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, কৃষি গবেষণায় আওয়ামী লীগই সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর কষি গবেষণার জন্য কোনো বরাদ্দ নেই দেখে সেখানে বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হয়।

করোনাভাইরাস সঙ্কটে সরকারের দেওয়া ১৯ প্রকারের প্রণোদনা প্যাকেজের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেখানে কৃষির জন্য আমরা আলাদাভাবে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের কৃষকরা মাত্র ১০ টাকায় ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারে। তাদের আমরা কষি উপকরণ কার্ড দিয়েছি। ভর্তুকির টাকাটা তাদের হাতে সরাসরি চলে যায়। এবারও আমরা ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা শুধু কৃষি ভর্তুকির জন্য আলাদা করে রেখেছি। কারণ পেটে খেলে পিঠে সয়।

করোনাভাইরাস মহামারীতে সারাবিশ্বে দুর্ভিক্ষ দেখা দেওয়ার আশঙ্কা জানিয়ে বাংলাদেশে যেন খাদ্যের অভাব না হয় সেজন্য বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়ার কথা বলেন সরকার প্রধান।

এবার বাজেটে আপনারা দেখেছেন, শুধু কৃষির জন্য আমরা বিশেষভাবে বরাদ্দ রেখেছি। ২২ শতাংশ বরাদ্দ শুধু এই কৃষিখাতে আমরা রেখে দিয়েছি।

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর দুই সদস্য সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধরী ও বর্তমান কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বক্তব্য রাখেন। কৃষিবিদ রাজ্জাক পহেলা আষাঢ় প্রতি বছর গাছ লাগানোর কর্মসূচি নিয়ে দেশের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার কথা বলেন।

আরও পড়ুন: জেনে নিন কখন ও কিভাবে করবেন আমের কলম

মতিয়া চৌধুরী বলেন, এই বৃক্ষরোপণ দিবস ভিন্ন প্রেক্ষাপটে হলেও এই কর্মসূচি খুবই গুরুত্ব পূর্ণ। বাংলাদেশ আজকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, তাছাড়া গাছ আছে বলেই আম্পান থেকে বাংলাদেশের রক্ষা হয়েছে।

ভিডিও কনফারেন্সের অন্য প্রান্তে আওয়ামী লীগ অফিস থেকে যুক্ত হন কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ ও সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতিসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

বৃক্ষরোপণ সম্পর্কে শেখ হাসিনা আরও বলেন, সারা বাংলাদেশে আমাদের বৃক্ষরোপণ করতে হবে। আমাদের যেখানে যত নেতা-কর্মী আছে আমাদের মূল দল আওয়ামী লীগের সাথে সাথে সকল সহযোগী সংগঠন প্রত্যেক সংগঠনের প্রতিটি সদস্য তিনটি করে গাছ লাগাবে। সেটা তার নিজের জায়গায় হোক, রাস্তার পাশে হলেও হোক।

আরও পড়ুন: বাড়ির ছাদে ড্রাগন ফলের চাষ পদ্ধতি

মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানেও বৃক্ষরোপণের কর্মসূচি ছিল বলে জানান প্রধানমন্ত্রী, বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে যে কর্মসূচি এখনও শুরু করা যায়নি।

কৃষি যন্ত্র নিজেদের তৈরিতে গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রী’র শিরোনামের সংবাদের তথ্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম সংবাদ মাধ্যম থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।