নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ক্ষতির আশঙ্কায় নেত্রকোনা হাওরাঞ্চলের ধান দ্রুত কাটার পরামর্শ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের আশঙ্কা ছাড়াও কালবৈশাখী ঝড় ও আগাম বন্যায় যেন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য এ পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

গতকাল সোমবার ( ১৯ এপ্রিল ২০২১) সকালে নেত্রকোনার মদন ও খালিয়াজুরীর হাওরাঞ্চলে কৃষকদের ধান কাটা পরিদর্শন করে তাদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান।

জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে হাওরাঞ্চলে অপেক্ষাকৃত নিচু জমিতে শতাধিক কম্বাইন্ড হারভেস্টারের মাধ্যমে দ্রুত গতিতে চলছে এই ধান কর্তন।

জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে হাওরাঞ্চলে ৭০ শতাংশ ধান কর্তন সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া পর্যাপ্ত সংখ্যক শ্রমিক হাওরাঞ্চলে ধান কাটছেন। এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি অনুকূলে রয়েছে।

ধান কর্তন পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এমএল সৈকত, মদন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বুলবুল আহমেদ, খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এসএম আরিফুল ইসলাম প্রমুখ।

ব্রি উদ্ভাবিত নতুন ধানের ফলন হেক্টরে ৬ টন!

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল সুগন্ধি জাতগুলো ৫-৬ টন ফলন দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মেসবাহুল ইসলাম।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) কর্তৃক উদ্ভাবিত নতুন নতুন অভিঘাত সহনশীল ও উচ্চ ফলনশীল জাতগুলো দেশের খাদ্য নিরাপত্তা কে টেকসই করবে এবং ভবিষ্যতে খাদ্য উৎপাদনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে।

আজ সোমবার (১৯ এপ্রিল ২০২১) ব্রি উদ্ভাবিত উচ্চ তাপ সহনশীল ধানের প্রস্তাবিত জাত এবং বাসমতি টাইপ ধান, হাইব্রিড ধানের গবেষণা ও বিভিন্ন পুষ্টিগুণ সম্পন্ন জাতের প্লটসমূহ পরিদর্শন শেষে ব্রি প্রশিক্ষণ কমপ্লেক্সে এর মিলনায়তনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা জানান। পরিদর্শনকালে ব্রির মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর সচিব কে বিভিন্ন গবেষণা প্লট সর্ম্পকে ব্রিফ করেন।

এসময় সিনিয়র সচিব বলেন, আমাদের দেশের কৃষকরা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী চাষাবাদ প্রক্রিয়ায় রূপান্তর বা পরিবর্তন নিয়ে আসছেন। ধানের জমি অনেক ক্ষেত্রে হাই ভ্যালু ফসলের জন্য ছেড়ে দিতে হচ্ছে। এখন আমাদের কে অল্প জমিতে অধিক ধান ফলাতে হবে। এজন্য অভিঘাত সহনশীল ও উচ্চ ফলনশীল জাত ব্যবহার করতে হবে।

তিনি বলেন, মানুষের রুচির পরিবর্তন হচ্ছে। এখন মানুষ সরু চাল খেতে পছন্দ করে। আগে সরু ও সুগন্ধি ধানের জাতগুলো যেখানে হেক্টর প্রতি ২-৩ টন ফলন দিত এখন ব্রি উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল সুগন্ধি জাতগুলো ৫-৬ টন ফলন দিচ্ছে যা অত্যন্ত আশা ব্যঞ্জক। এ সময় তিনি ব্রির বিজ্ঞানীদের উচ্চ তাপমাত্রা সহিষ্ণু জাত উদ্ভাবনের গবেষণা কার্যক্রমের অগ্রগতি দেখে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।

পরিদর্শনকালে ব্রির মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর ছাড়াও কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) ওয়াহেদা আক্তার, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) এর নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আসাদুল্লাহ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. নাজিরুল ইসলাম, জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমীর মহাপরিচালক ড. আখতারুজ্জামান, ব্রি’র পরিচালক (গবেষণা) ড. কৃষ্ণপদ হালদার, পরিচালক (প্রশাসন ও সাধারণ পরিচর্যা) ড. মো. আবু বকর ছিদ্দিক এবং বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।

ব্রি উদ্ভাবিত নতুন ধানের ফলন হেক্টরে ৬ টন! শিরোনামের সংবাদটির তথ্য ব্রি’র সিনিয়র লিয়াজোঁ অফিসার কৃষিবিদ মো. আব্দুল মোমিন নিশ্চিত করেছেন।

 

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ