নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: মানুষের খাদ্য নিশ্চিত করার বিষয়টি অধিকারভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে দেখা প্রয়োজন। ‘খাদ্য অধিকার আইন’ প্রণয়ন হতে পারে একটি অন্যতম পদক্ষেপ। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে হবে সরকারকেই।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে সকল রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারেও এ সংক্রান্ত অঙ্গীকার থাকতে হবে।

আজ বুধবার (২৫ জুলাই) ঢাকার জাতীয় জাদুঘর প্রধান মিলনায়তনে ‘খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ’ আয়োজিত দেশব্যাপী জুলাই-ডিসেম্বর ২০১৮ জুড়ে ‘খাদ্য ও পুষ্টি অধিকার ক্যাম্পেইন আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সারা দেশের ৫০ এর অধিক জেলা থেকে আসা নেটওয়ার্কের প্রতিনিধিরা এসব বলেন এসব কথা বলেন।

এ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে নির্বাচনী ইশতেহারে খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের অঙ্গীকারের দাবিতে সংগ্রহ করা হবে ২৫ লাখ স্বাক্ষর।

বক্তারা বলেন, সরকারের একটি খাদ্য নীতি, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিসহ খাদ্য নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম থাকা সত্ত্বেও দেশের অতিদরিদ্র ১২.৯ শতাংশসহ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী ৪ কোটি মানুষ দৈনিক ২ হাজার ১২২ কিলো ক্যালরি বা প্রয়োজনীয় খাদ্য পায় না।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ ও পিকেএসএফ-এর চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, যাদের কাছে উন্নয়ন এখনও পৌঁছায়নি, যারা খাদ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা প্রভৃতি অধিকার থেকে বঞ্চিত তাদের জন্যই আমরা খাদ্য অধিকার আইন চাই। তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই এ ক্যাম্পেইনের আয়োজন।

অনুষ্ঠানে সম্মানীয় অতিথির বক্তব্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন-এর চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক ‘খাদ্য ও পুষ্টি অধিকার ক্যাম্পেইনে’ বিভাগ ও জেলা পর্যায়ের মানুষকেও সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানান।

গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, সব কাজ সরকার করে দেবে তা ভেবে যেন আমরা বসে না থাকি।

খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ-এর ভাইস-চেয়ারম্যান খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ বলেন, আইন হলেই কি সবাই খাদ্য পাবে? সকল আইন কি এদেশে যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়? তবে ক্যাম্পেইনের ফলে মানুষ খাদ্য অধিকার সম্পর্কে জানবে, সংগঠিত হবে এবং সর্বোপরি আইন হলে তার অধিকার আদায়ে সোচ্চার হবে।

পিকেএসএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুল করীম বলেন, সকলের ঐকমত্যের ভিত্তিতেই খাদ্য অধিকার আইন হওয়া উচিত।

 দৈনিক ইত্তেফাক ও পাক্ষিক অনন্যার সম্পাদক তাসমিমা হোসেন বলেন, আইন হলেও তা যাতে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হয় সে ব্যাপারে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে।

একশনএইড-এর দেশীয় পরিচালক ফারাহ কবীর বলেন, শুধু স্বাক্ষর সংগ্রহ নয়, সকল মানুষকে খাদ্য ও পুষ্টি অধিকার বিষয়ে যথাযথভাবে অবহিত করতে হবে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইসিসিও ইন্টারন্যাশনালের দেশীয় প্রতিনিধি টেসা স্কেমেলজার, কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনালের চিফ অব পার্টি এলি ভ্যালেনটাইন, কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইডের কর্মসূচি পরিচালক হেলেন ওয়ার, এটিএন বাংলার উপদেষ্টা (অনুষ্ঠান) নওয়াজিশ আলী খান প্রমুখ।

ক্যাম্পেইনের প্রেক্ষাপট আলোচনা ও কর্মসূচি উত্থাপন করেন খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ-এর সাধারণ সম্পাদক ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী।

তিনি দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি ও লক্ষ্য, খাদ্য ও পুষ্টি পরিস্থিতি, দারিদ্র্য ও বৈষম্যের চিত্র, লক্ষ্য অর্জনে করণীয়, ‘খাদ্য অধিকার’ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহের ভূমিকা, ক্যাম্পেইনের প্রধান প্রধান কর্মসূচি তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, বর্তমানে শীর্ষ ১০ ভাগ ধনী পরিবারের আয় মোট জাতীয় আয়ের ৩৮ শতাংশ এবং নিম্ন অবস্থানকারী ১০ ভাগ অতি দরিদ্রের আয় মোট জাতীয় আয়ের ১ শতাংশ।