ঘূর্ণিঝড়ের কোন সতর্ক সংকেত

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: খেপুপাড়া দিয়ে দেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। বর্তমানে দেশের মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নং ও চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

আজ সোমবার (২৪ অক্টোবর) সকালে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় “সিত্রাং” আরও ঘণীভূত ও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আগামিকাল মঙ্গলবার ভোররাত অথবা সকাল নাগাদ খেপুপাড়ার নিকট দিয়ে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূলে আঘাত হানতে পারে।

আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত ৮ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় “সিত্রাং” এর অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। এর প্রভাবে ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্ষন্ত বাড়ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৪ (চার) নম্বর স্থানীয় হুশিয়ারী সংকেত সরিয়ে তার পরিবর্তে ৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেত (পুন:) ৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

এদিকে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সুমুদ্রবন্দরসমূহকে ৪ (চার) নম্বর স্থানীয় হুশিয়ারী সংকেত সরিয়ে তার পরিবর্তে ৬ (ছয়) নম্বর বিপদ সংকেত (পুন:) ০৬ (ছয়) নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৬ (ছয়) নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদীবন্দরসমূহকে ৩ (তিন) নম্বর নৌ-বিপদ সংকেত (পুন) ০৩ (তিন) নম্বর  নৌ-বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

পূর্ব-মধ্যবঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি পশ্চিম-মধ্যবঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় “সিত্রাং উত্তর- উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে পূর্ব-মধ্য বঙ্গপোসাগর ও এর আশপাশের পশ্চিম-মধ্যবঙ্গোপসাগর এবং উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ সোমবার সকাল ৬ টায়  চট্টগ্রাম সমদ্র্রবন্দর থেকে ৫৯০ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৩৫ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৯৫ কি.মি, দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশের আরো ১০০ কি.মি নাগালে এসেছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং

ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো বাতাস বয়ে যেতে পারে, সেইসাথে ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ, অমাবশ্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৮ ফুট অধিক উচ্চতায় বায়ু তাড়িত জলোচ্ছাসে প্লাবিত হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। খেপুপাড়া দিয়ে দেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং শিরোনামের সংবাদটি তৈরিতে বাসস সংবাদ মাধ্যমের তথ্য সহায়তা নেয়া হয়েছে।