পরিবেশ ও জলবায়ু ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: বৈশ্বিক আবহাওয়া বাড়ছে প্রতিনিয়ত। প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও উষ্ণয়নের কারণে শীতকালের বিভিন্ন দেশের পাখি বাংলাদেশে আশে। হিমালয় থেকে নেমে আসা পাখিরা দলবেঁধে বসবাস করে দেশের বিল-হাওরের অঞ্চলে। তেমনই চট্টগ্রামের গুমাই বিলের ধানের টানে উদর পূরণ করতে মিছিল হয়ে এসেছে হাজার হাজার টিয়া পাখি।

টিয়া পাখির দলকে যেন আমন্ত্রণ জানিয়ে ডেকে এনেছে এই নবান্ন। বিলের আকাশে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ছে তারা। কখনো উড়োজাহাজের মতো বাঁ দিক ডান দিকে বাঁক নিচ্ছে।

কখনো নিম্নগামী মেঘের ওপরে, আবার কখনো নিচ দিয়ে উড়ে যাচ্ছে। মাঝেমধ্যে তাদের ওড়াউড়ি দেখে মনে হয়, নীল আকাশেই যেন সাগরের ঢেউ লেগেছে। উড়তে উড়তে অকস্মাৎ ডুব দেয় নুয়ে পড়া পাকা ধানের খেতে। ধানের শিষ ঠোঁটে নিয়ে মুহূর্তে উড়ে গিয়ে বসে কোনো গাছের ডালে। পেটপূজা শেষে আবার ওড়াউড়ি।

বিলের চার হাজার একর জমিতেই বলতে গেলে ধান চাষ হয়েছে। ফলনও ভালো হবে বলে কৃষকদের আশা। তবে তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে এই টিয়ার দল। দেড় শ শতক জমি চাষ করেছেন এবার কৃষক আবুল বাশার। বলছিলেন, ‘এক ঝাঁকে প্রায় ১৫-২০ হাজার টিয়া একসঙ্গে থাকে। যে জমিতে বসে, সেখানে সব শেষ করে দেয়।’

বিলের পাশের গাছের কাছাকাছি যেতেই কানে আসে কিচিরমিচির শব্দ। বিলের পাশের বড় বড় গাছে অস্থায়ী বাসা বেঁধেছে তারা। কয়েক বছর ধরেই গুমাই বিলে আসছে টিয়ার দল। টিয়া পাখিরা সাধারণত নিরুপদ্রব এলাকা পছন্দ করে। একবার বাধা পেলে সাধারণত আর ওমুখো হয় না। রাঙ্গুনিয়ার গুমাই বিল পাখিদের কাছে নিরুপদ্রব মনে হয়েছে।

সাধারণত ঘন গাছপালা, যেমন বড় বড় শিরীষ, নানা জাতের ফুল, আম, কড়ই ইত্যাদি গাছে তারা থাকতে পছন্দ করে। গুমাই বিলের পাশে এ ধরনের গাছের অভাব নেই।

পাখিগুলোর ঠোঁট লাল। আর লেজসহ পিঠ ও পাখা পুরোটা সবুজ। গাছে বসলে আর দেখা যায় না, কেবল লাল ঠোঁট ছাড়া। তখন দেখতে মনে হয় ফুল। একবার যে স্থানে গিয়ে টিয়া শান্তিতে সময় কাটাতে পারে, সেখানে বারবার যেতে বেশি পছন্দ করে। বানিয়ে তোলে অভয়াশ্রম। ধান কাটা শেষে এই অস্থায়ী আবাস ছেড়ে আবার ফিরে যাবে তারা। গুমাই বিলে টিয়া পাখির মিছিল সংবাদের তথ্য প্রথম আলো থেকে নেওয়া হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ