মৎস্য ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: চলতি বছরে ইলিশ ধরা শুরু হয়েছে। শুধু ইলিশ নয়, চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকার শুরু হয়েছে গত শুক্রবার (৩০ এপ্রিল ২০২১) মধ্যরাত থেকে।

ইলিশ গবেষক ও মৎস্য কর্মকর্তারা বলছেন, দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে মাছ ধরতে নেমেছে জেলার অর্ধ লক্ষাধিক জেলে। তবে এবার করোনা মহামারির সুযোগে নদীতে প্রচুর জাটকা নিধন হয়েছে। তারপরও আগামীতে ইলিশের কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন ব্যাহত হবে না।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (নদী কেন্দ্র) ড. আনিছুর রহমান বলেন, একেকটি মা ইলিশ লাখ লাখ ডিম ছাড়ে। তাই মা ইলিশ প্রচুর ডিম ছাড়ার সুযোগ পেয়েছে। কোথাও কোথাও হয়তো জেলেরা জাটকা শিকার করে। তারপরও আমাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং পর্যবেক্ষণে আমরা আশা করছি কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ ইলিশ সামনে আমরা পাবো। ইলিশের সর্বোচ্চ সহনশীল উৎপাদন বজায় থাকবে। তবে জাটকা শিকার যদি না হতো তাহলে আশাতিরিক্তি ইলিশ পাওয়া যেত।

একই এলাকার জেলে জাহাঙ্গীর বলেন, অনেক দিন ধরে নৌকা ওপরে পড়েছিল। মাছ ধরার আশায় নৌকা-জাল ঠিকঠাক করেছি। নিষিদ্ধ সময়ে বেকার থাকা অবস্থায় এবং আগের ঋণ আছে। আশা করি, মাছ পাবো এবং ঋণ শোধ করতে পারবো।

সদর উপজেলার বহরিয়া এলাকার জেলে জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘রাতেই ইলিশ ধরতে নদীতে জাল ফেলবো। মাছ পেলে স্ত্রী-সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে পারবো। আর যদি মাছ না পাই তাহলে তো কিস্তি নিয়ে বিপদে পড়ে যাবো।’

হাইমচরের জেলে হাসানাত বলেন, ‘সরকার দু’ মাসের জন্য নদীতে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছিল, আমরা তা মেনেছি। তবে বহিরাগত জেলেরা এখানে এসে জাটকা শিকার করেছে।’

জেলা মৎস্য বিভাগ জানায়, জাটকা সংরক্ষণে মার্চ-এপ্রিল এ দু’মাসে জাটকা নিধন রোধে নদীতে ৫৮২টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে মাছ শিকারের অপরাধে ৯৮টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২৮৭ মামলায় ৩১০ জন জেলেকে আটকের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকী বলেন, জাটকা সংরক্ষণে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড এবং মৎস্য বিভাগ দিনরাত নদীতে অভিযান চালিয়েছে। তারপরও করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার কিছু অসাধু জেলে চুরি করে মাছ শিকার করেছে। তবে যে পরিমাণ জাটকা সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়েছে তাতে আগামী দিনে ইলিশ উৎপাদন স্বাভাবিক ব্যাহত হবে না।

 

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ