সজিব ইসলাম, চারঘাট (রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর চারঘাটে গ্রীষ্মের রসালো ফল তরমুজের চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। বাজারে বাড়তি চাহিদা থাকায় ৭০ টাকার তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়।

সিন্ডিকেটের অপতৎপরতায় পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এই তরমুজ কিনতে বিপাকে পড়েছেন এ উপজেলার সাধারণ ক্রেতারা। তবে ক্রেতাদের সিন্ডেকেটের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন আড়তদার ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা।

জানা গেছে, গত বছর যে তরমুজ বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকা, এবার সেই তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা। এমনকি তরমুজ ব্যবসায়ীরা আগের সব নিয়ম ভঙ্গ করে পিস হিসেবের পরিবর্তে কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করছেন। লকডাউন ও ভালো ফলন না হওয়ার অজুহাত দেখাচ্ছেন তারা।

চারঘাট বাজারে তরমুজ কিনতে আসা উপজেলার বামনদিঘী গ্রামের শিমুল রানা বলেন, আকাশ ছোঁয়া দামের কারণে এখন আর তরমুজের স্বাদ নিতে পারছেন না নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষেরা । এত দাম হলে আমাদের মত সাধারন মানুষের কেনা সম্ভবই হবেনা।

সূত্রে আরও জানা গেছে, রাজশাহীর চারঘাটে এসব তরমুজ আসে নাটোর,বনপাড়া,লালপুরসহ বরগুনা, খুলনা ও চুয়াডাঙ্গা থেকেও। সেখান থেকে কিনে এনে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে পাইকারি দরে বিক্রি করছেন। খুচরা ব্যবসায়ীরা সেই তরমুজ কিনে বাজারে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন।

চারঘাট উপজেলার বিভিন্ন বাজার ও তরমুজের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, চলতি সপ্তাহে খুচরা বাজারে এক কেজি তরমুজের দাম চলছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। বেশি ভালো মানের তরমুজ ৬৫ থেকে ৭০ টাকাতে বিক্রি হচ্ছে। এতে ৫ কেজির একটি তরমুজের জন্য ক্রেতার গুণতে হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। অথচ এই তরমুজের দাম ১৫০ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সাধারন ক্রেতারা বলছেন, এত ভারি একটি ফল ছোট পরিবারের জন্য কিনতে গেলেও ৫ কেজির নিচে হয় না। কেজি দরে বিক্রির কারণেই এমন দাম উঠেছে। প্রতি তরমুজ কমপক্ষে ১০০ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চারঘাট বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘বাজারে তরমুজ নেই বললেই চলে। মোকামেই প্রতি কেজি তরমুজ ৫০ টাকা থেকে ৫২ টাকা কিনতে হচ্ছে আমাদের। সেই তরমুজ ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করাটা দোষের দেখছি না। আমরা কোনো সিন্ডিকেট করিনি।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার শলুয়া বাজার এলাকার এক তরমুজ ব্যবসায়ী বলেন, ‘এ বছর তরমুজের ফলন ভালো হয়নি। এর ওপর চৈত্রের শুরুতেই প্রচণ্ড গরম পড়তে শুরু করায় বেশি দাম পাওয়ার আশায় পরিপক্ক হওয়ার আগেই মাঠ থেকে তরমুজ তুলে বিক্রি করেছেন কৃষকরা। ‘লকডাউনের’ কারণে পর্যাপ্ত পরিমাণে তরমুজ আসতে পারছে না। এজন্য দাম একটু বেশি।

তবে ক্রেতাদের দাবি, দাম বাড়ানোর উদ্দেশ্যে কৃত্তিম সংকট তৈরি করছে ব্যাবসায়ীরা। অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থার দাবি চারঘাটের সাধারণ ক্রেতাগণদের।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ