প্রতিনিধি, বাঘা (রাজশাহী), এগ্রিকেয়ার২৪.কম: রাজশাহীর বাঘায় চিরকুট লিখে রাতের আধারে ৯ জন চাষির জমিতে রোপন করা ক্ষেতের পেয়ারা গাছ, আমগাছ, মরিচ, বেগুন হলুদসহ খেজুর গাছের রস সংগ্রহের পাত্র নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে চিরকুট আতঙ্কে রয়েছেন চাষিরা।

শনিবার (৫ নভেম্বর) রাতে কে বা কারা উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের টলটলিপাড়া ও ভেড়ালীপাড়া মাঠে রোপন করা এই আবাদ নষ্ট করে দিয়েছেন। এ সকল ক্ষেতে হাতে লিখা কাগজের চিরকুট পাওয়া গেছে।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার বাউসা ইউনিয়নে বাউসা টলটলিপাড়া মাঠে ৯ জন কৃষক কেউ নিজের জমিতে আবার কেউ বা অন্যর জমি লিজ নিয়ে পেয়ারা বাগান, আমবাগান মরিচ, হলুদ বেগুন চাষ করেন। এ সকল জমির কিছু গাছ কেটে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, আবার কিছু গাছ উপড়ে রাখা হয়েছে

। নষ্ট করা হয়েছে খেজুর গাছের রস সংগ্রহের পাত্র। আবার কিছু জমির হলুদ, পেয়ারা গাছ, আমগাছ মরিচ, বেগুনের গাছ কেটে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এ সকল জমিতে পলিথিনে মোড়ানো চিরকুট রাখা হয়েছে। এতে হাতে লিখা কাগজের চিরকুটে লেখা আছে মনি রতম শরিফুল শাকিম মেম্বার গাড়ি চাই।

সরেজমিনে রোববার সকালে বাউসা টলটলিপাড়া গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্থ চাষি আবুল কালাম ১৪টি ও সাহাবুদ্দিনের ৭টি পেয়ারা গাছ, শাহিন আলমের ২৫টি এবং মুনসাদ আলী ৫০টি মরিচ গাছ, বাবুল হোসেনের ৭ টি মেহগুনি, ইনছার আলীর ১০টি বেগুন ও ৫টি পেঁপে গাছ, আমিরুল ইসলামের খেজুর গাছের রস সংগ্রহের ২০টি মাটির পাত্র, আব্দুল মান্নানের ১টি আমগাছ, সইদুল ইসলামের এক কাঠা হলুদের খেত নষ্ট করা হয়েছে।

উপজেলার দিঘা গ্রামের সইদুল ইসলাম বলেন, কে বা কারা কি কারণে এমন ঘটনা করেছে সুনির্দ্দিষ্ট কোন কারণ জানাতে পারেনি। ক্ষেতের মালিকরা নিজ নিজ জমিতে কাগজের চিরকুট দেখেন। তাঁরা বলেন, কারো সাথে কোন শত্রুতা নেই, কে বা কারা এমন কাজ করেছে ভাবতে পারছিনা। এই মাঠে গত বছরও কয়েকজন কৃষকের জমিতে চিরকুট লিখে, এ ধরনের ক্ষতি করা হয়েছিল।

উপজেলার বাউসা টলটলিপাড়া মাঠে প্রতিবিঘা ২০ হাজার টাকা দরে পাঁচ বিঘা জমি পাঁচ বছরের জন্য পাঁচ লাখ টাকায় লিজ নিয়ে পেয়ারার বাগান করেছেন আবুল কালাম। তাঁর ক্ষেতে ১৪টি পেয়ারার গাছ কেটে নষ্ট করা হয়েছে। তিনি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে এই আবাদ করেছেন। এতে তার অনেক ক্ষতি হয়েছে। এমন ঘটনা আতংকিত বলে জানান তিনি। ক্ষতিগ্রস্থ চাষিরা এর সুষ্ঠ বিচার দাবি করেছেন।

উপজেলার বাউসা ভেড়ালীপাড়া গ্রামের মরিচ চাষি মুনসাদ আলী বলেন, ময়েন উদ্দিনের কাছে থেকে এক বিঘা জমি লিজ নিয়ে মরিচ চাষ করেছি। রাতে সেই জমির ৫০টি মরিচ গাছ উপড়ে দিয়েছে কে বা কারা। আমি এর বিচার দাবি করছি।

বাউসা ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ড়ের ইউপি সদস্য শাকিম উদ্দিন বলেন, চিরকুটে আমার নাম লিখে ক্ষতিগ্রস্থস্থানে রেখে আসা হয়েছে। ঘটনাটি দুঃখ জনক, আমি জনপ্রতিনিধি হিসেবে সুষ্ট তদন্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে উপজেলার বাউসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ তুফান বলেন, এই বিষয়ে চাষিরা আমাকে জানিয়েছেন। পাশাপাশি চিরকুট দেখিয়েছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, কৃষকরা এ বিষয়ে মুঠোফোনে জানিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের জমি পরিদর্শন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বাঘা থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বিষয়টি জেনেছি। তদন্ত করে অপরাধীকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ