মেহেদী হাসান, নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী: জমে উঠেছে উত্তরাঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম আমের বাজার রাজশাহীর বানেশ্বর। এই বাজার ফজলি আমের হিসেবে বিখ্যাত হলেও এখন দেখা নেই ফজলি আমের। বেঁচাকেনা হচ্ছে গোপালভোগ, হিমসাগর (খিসারিপাত), ল্যাংড়া, লখনাসহ বিভিন্ন গুটি জাতের আম। মানভেদে এসব আম ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা।

মঙ্গলবার ৩১ মে ২০২২ বানেশ্বর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, আমের মোকামগুলো থেকে আম কিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। আমচাষি ও ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারে আসতে শুরু করেছে ল্যাংড়া ও হিমসাগর আম।

গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে আমের দাম বেশ ভালো। অনলাইনেও আম বিক্রি করছেন তারা। এসব আমের মধ্যে, ল্যাংড়া প্রতি মণ (৪০ কেজি) ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকা প্রায় একই দামে বিক্রি হচ্ছে হিমসাগর। গোপালভোগ ১৮০০ থেকে ২২০০ টাকা, লখনা ৮০০ থেকে ভালো জাতের ও আকারে বড় আম ১৪০০ টাকা এবং গুটি জাতের আম ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

পড়তে পারেন: রাজশাহীতে ’বাঘাশাহী’ জাতের নতুন আমের চাষ

আম ব্যবসায়ী সাহেব আলী এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে বলেন, আমের দাম ভালোই আছে। কিন্তু আঁটি জাতের আমের চাহিদা কমে গেছে। আম পাড়ার সময় ১ হাজার টাকা মণ গুটি আম বিক্রি করেছি। এখন মণে ২০০ টাকা কম। প্রতিবছর প্রাণ কোম্পানি আম কিনত, এবারও কিনেছে। আমের ফলন এবার কম হয়েছে। আর সাইজও ছোট।

আমচাষি জাহিদুল ইসলাম এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে জানান, আগের বছরের তুলনায় আমের দাম ভালোই পাচ্ছি। আগেই ভেবেছিলাম আমের দাম হবে। কারণ করোনার সময়ে আমার অনেক লোকসান হয়েছে। আম কেনার কেউ ছিল না। আম নিয়ে বসে থাকতে হয়েছে। আর এবার সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিস্থিতি। বাজারে আমের ক্রেতাও বেশি চাহিদাও বেশ।

পড়তে পারেন: রাজশাহীতে এবার সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার আম বাণিজ্যের সম্ভাবনা

তিনি আরোও বলেন, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গার বড় বড় পাইকাররা আসছেন। এখন বিক্রির পরিমান তুলানামূলক হারে একটু কম হলেও আগামী সপ্তাহের মধ্যে জমজমাট হয়ে উঠবে। এই সপ্তাহের মধ্যেই বাজারে ল্যাংড়া আমের পরিমান বৃদ্ধি পাবে। গোপাল আম ১৮০০ টাকা মন হিসেবে কয়েকমন বিক্রি করেছি।

বানেশ্বর আম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব সাইফুল ইসলাম এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে বলেন, চাঁপাইয়ের কানসাটের পরেই বানেশ্বর বাজার। প্রতিবছর কয়েক কোটি টাকার আম বেঁচাকেনা হয় এখানে। করোনার কারণে দু-বছর বাজার সেভাবে জমেনি। বাজারে আমচাষি, ব্যবসায়ীরা এবার বেশ উৎফুল্ল। ল্যাংড়া আসতে শুরু করেছে। দাম গতবারের তুলনায় এবার মণে ৫০০ টাকা বেশি।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে বলেন, বাজারে সর্বপ্রথম গুটি জাতের আম আগে আসে। পর্যায়ক্রমে গোপালভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি, আশ্বিনা আম বাজারে আসে। এখন বাজারে আসে খিরসাপাত, হিমসাগর ও লখনা। আমরা সকল তথ্য সংগ্রহ করছি। বানেশ্বর আমের হাট উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যের অর্ন্তভূক্ত। বিস্তারিত সেখানেই পাবেন।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ