জলবায়ু পরিবর্তনে লবণাক্ততা বৃদ্ধি

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: জলবায়ু পরিবর্তনে লবণাক্ততা বৃদ্ধি ও মাটিতে পুষ্টি উপাদানের ঘাটতিতে হুমকিতে মৃত্তিকা বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।

তিনি বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে লবণাক্ততা বৃদ্ধি, মাটির পুষ্টি উপাদানের ঘাটতির ফলে মৃত্তিকা এখন হুমকির মুখে রয়েছে। এর কারনে বছরে০.৪ শতাংশ ফসল উৎপাদন হ্রাস পায়। পাহাড়ি অঞ্চলে মৃত্তিকা ক্ষয়ের মাত্রা বেশি তা প্রায় ১২ শতাংশ।

আজ বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর, ২০১৯) বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস ২০১৯ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী এ মন্তব্যের পাশাপাশি এসব কথা বলে। এবারে দিবসের প্রতিপাদ্য ‘আমাদের ভবিষৎ#৩৯; #৩৯;মৃত্তিকার ক্ষয়রোধ#৩৯;।

রাজধানীর খামারবাড়ির আ. কা. মু. গিয়াস উদ্দিন মিলকী অডিটরিয়ামে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট দিবসটির আয়েজন করে। অনুষ্ঠানে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনষ্টিটিউটের প্রকাশিত souvenir এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমরা মাটিকে যথাযথ ব্যবহার না করে তার উর্বরতা শক্তি নষ্ট করে ফেলছি। ক্রমবর্ধমান নগরায়ন, শিল্পায়ন, দূষণ, ব্যাপক হারে বনভূমি ধ্বংস এবং অপরিকল্পিত চাষাবাদের ফলেও অনেক অঞ্চলের মাটি নষ্ট হচ্ছে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন কৃষক দরদি,আর বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্ণ হয়েছে কোন যাদুর বলে নয় ,কৃষক দরদি মনবতার মা মাননীয় প্রধানন্ত্রীর দুরদর্শী নেতৃত্বে ফসল।

মন্ত্রী বলেন; আমাদের কৃষি শিক্ষার্থীদের আধুনিক শিক্ষা৷ দিতে হবে। মটির ক্ষয়রোধের প্রযুক্তি নিয়ে আসতে হবে, টপ সয়েল ব্যবহারের উপযোগী করতে হবে। বর্তমানে মানব সৃষ্ট ও প্রাকৃতিক কারণে মাটি ধ্বংসের অন্যতম কারণ। যার কারণে উপরের মাটি নষ্ট হচ্ছে।

যদি আমরা আমাদের সন্তানদের জন্য বাসযোগ্য মাটি রেখে না যাই, তাহলে নগদ অর্থ ও ধনসম্পদ কোনো কাজে আসবেনা।

ভবিষৎ প্রজন্মের জন্য টেকসই কার্যক্রম হাতে নিতে হবে। ফসলের উৎপাদন কমে যাবে যার বিরুপ প্রভাব সারাবিশ্ব ব্যপী পরবে। আগামী প্রজন্মের জন্য সুন্দর পরিবেশে তৈরী করতে আমাদের সকলকে মাটি রক্ষায় সচেতন হতে হবে।

মাটির গুরুত্ব সম্পর্কে বুঝাতে হবে এবং মৃত্তিকা সম্পদ সংরক্ষণে জনগণকে উৎসাহ প্রদান করতে হবে। মাটির ক্ষয় ঠেকসই কৃষি উন্নয়নের প্রধান অন্তরায়। কৃষক ধানের মূল্য পাচ্ছে না মে কিথাবে তার পরিবকার নিয়ে চলবে কিভাবে তার সন্তানদের শিক্ষা দিবে কিভাবে। কি খাবে সে, পুষ্টিকর নিরাপদ খাবার দিবে সন্তানদের।

কৃষকদের লাভবান করতে হলে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ করতেই হবে। সরকার এক্ষত্রে প্রণোদনার দিচ্ছে। এসময় বিভিন্ন সারের মুল্য হ্রাসের উল্লেখ করেন।

মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক বিধান কুমার ভান্ডার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সচিব মোঃ নাসিররজ্জামান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুল মুঈদ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. মোঃ কবির ইকরামুল হক ও ফাও এর বাংলাদেশে প্রতিনিধি রবার্ট ডি সিম্পসন।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. এস.এম ইমামুল হক। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট এর প্রকল্প পরিচালক ড. মো. আব্দু বারী।

দিবসটি উপলক্ষে ৩ ক্যাটাগরীতে ৩ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে সয়েল কেয়ার এ্যাওয়ার্ড ২০১৯ সম্মাননা প্রদান করা হয়। সম্মাননা পেয়েছেন, বরিশালের মোঃ সুলতান হোসেন, নরসিংদির ড. মোঃ নুরুল ইসলাম ভূইয়া এবং সিলেটের মোঃ আব্দুল আহাদ শাহীন। সম্মাননা হিসেবে ছিলো একটি ক্রেস্ট ও নগদ ১৫ হাজার টাকা।

জলবায়ু পরিবর্তনে লবণাক্ততা বৃদ্ধি ও মাটিতে পুষ্টি উপাদানের ঘাটতিতে হুমকিতে মৃত্তিকা সংবাদটির তথ্য কৃষিমন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।