জিএমও প্রযুক্তির মত উন্নত

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: জিএমও প্রযুক্তির মত উন্নত প্রযুক্তিতে সঠিক জ্ঞানের পাশাপাশি প্রয়োগে সুনিয়ন্ত্রিত হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষি মন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক।

তিনি বলেছেন, খাদ্য নিরাপত্তা রক্ষার্থে জিএমও প্রযুক্তির মত উন্নত প্রযুক্তির সম্ভাবনা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান এবং সেই জ্ঞানের সুচিন্তিত, সুনিয়ন্ত্রিত প্রয়োগ ও প্রসার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।



রোববার (২৭ অক্টোবর ২০১৯) রাজধানীর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘জিএমও ফসল: দক্ষিণ এশিয়ায় নীতি ও অনুশীলন’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারটির আয়োজনে ছিলো বিশ্ববিদ্যালয়টির সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্স বিভাগ।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থপানের সময়ে জিএমও সম্পর্কে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে সচেতন করতে হবে মন্তব্য করেন চিকিৎসায় নোবেলজয়ী স্যার রিচার্ড জে রবাট।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হলে সর্বশেষ এবং সর্বোত্তম উন্নত  প্রযুক্তি ব্যবহারের কোন বিকল্প নেই। সেক্ষেত্রে আধুনিক জীবপ্রযুক্তি তথা জিএম (জেনেটিক্যালি মডিফায়েড অর্গানিজম) প্রযুক্তির ব্যবহার শ্রেয়, যার ফলে ক্রমেই এ প্রযুক্তি ব্যবহার বেড়ে চলেছে।

কৃষি মন্ত্রী বলেন, জিএমও শস্য চাষাবাদ শুরুর প্রথম দিকে উন্নত দেশগুলোতে উৎপাদনের পরিমাণ তুলনামূলক বেশি হলেও বর্তমানে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জিএমও শস্য উৎপাদনের মোট পরিমাণ উন্নত দেশগুলোকে ছাড়িয়ে গেছে। সরকার নীতিগতভাবে Biotechnology ও GMO প্রযুক্তিকে সমর্থন করে।

কৃষি মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশে গত কয়েক দশকে আধুনিক সংকরায়ন বা hybridization পদ্ধতি ব্যবহার করে নানাধরনের উচ্চফলনশীল, রোগ প্রতিরোধী এবং অন্যান্য আকাঙ্খিত বৈশিষ্ট্যের হাইব্রিড ফসলের জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে।

এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে অনুমোদনপ্রাপ্ত একমাত্র জিএম শস্য হচ্ছে বিটি বেগুন। ২০১৩ সালের ৩০ অক্টোবর বাংলাদেশ সরকার বিটি বেগুনের চারটি জাত সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনার আওতায় মাঠ পর্যায়ে সীমিত আকারে চাষাবাদের অনুমতি দেয়।

মাঠ পর্যায়ে বিটি বেগুন চাষাবাদের মাধ্যমে বাংলাদেশ ২৯তম দেশ হিসেবে জিএমও শস্য উৎপাদনকারী দেশের খাতায় নাম লেখে। বাংলাদেশে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে টমেটো ও তুলার নতুন জাত উদ্ভাবনের কাজ চলছে।

আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত বিটি তুলা চাষের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে বেশ লাভবান হয়েছে। ভারত জিএমও শস্য চাষাবাদের ফলে আর্থিক ও সামাজিকভাবে লাভবান হয়েছে।

জিএমও সম্পর্কে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে সচেতন করতে হবে। জিনগত পরিবর্তনের মাধ্যমে শস্য উৎপাদন করলে প্রচুর ফলন পাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেলজয়ী ব্রিটিশ বিজ্ঞানী স্যার রিচার্ড জন রবার্টস।

তিনি বলেন, জিএমও শস্যের রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও বেশি। এ পদ্ধতিতে চাষাবাদের ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরও বাড়বে। অপুষ্টিজনিত রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। ভিটামিন এ এর অভাবে বছরের অনেক শিশু মারা যাচ্ছে। বাংলাদেশ ভিটামিন এ সমৃদ্ধ গোল্ডেন রাইস উদ্ভাবন করেছে, গোল্ডেন রাইস দ্রুত উন্মুক্ত করা প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান বেনজির আহমেদ, প্রফেসর তৌফিক এম হক-পরিচালক; সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি  অ্যান্ড গভর্নেন্স । সমাপনী বক্তব্য রাখেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি  প্রফেসর আতিকুল ইসলাম।

জিএমও প্রযুক্তির মত উন্নত প্রযুক্তিতে সঠিক জ্ঞানের পাশাপাশি প্রয়োগে সুনিয়ন্ত্রিত হতে হবে সংবাদটির তথ্য কৃষিমন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ র্কমর্কতা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন এগ্রিকয়ার২৪.কম কে নিশ্চিত করেছেন।

আরও পড়ুন: ট্রান্সফর্মিং রাইস ব্রিডিং পদ্ধতি আধুনিক, উদ্ভাবনী এবং ভোক্তাবান্ধব ধান প্রজনন কৌশল