নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, নিরাপদ খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত করতে হলে কৃষিতে কীটপতঙ্গ ব্যবস্থাপনায় বিষাক্ত রাসায়নিক কীটনাশকগুলির উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে জৈব কীটনাশকের দিকে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। কেননা কৃষি হচ্ছে খাদ্য শক্তি, প্রাণশক্তি, শ্রমশক্তি, এবং বুদ্ধিবৃত্তিক শক্তির মূল উৎস যা অদ্বিতীয় ও আন্তঃসংযুক্ত।

সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে মঙ্গলবার (২৯ মে) সার্কভুক্ত দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত ‘regional training program on Integrated Pest Management (IPM) in SAARC Member States’ শীর্ষক   আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ নির্দেশনার পাশাপাশি কথাগুলো বলেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ ও দূরদর্শিত নেতৃত্বে খাদ্য উৎপাদনের জন্য আধুনিক, উন্নত ও টেকসই প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও ব্যবহার শক্তিশালী হয়েছে। এর ফলে খাদ্য উৎপাদনে স্বযংসম্পূর্ণ অর্জন করাসহ ইতোমধ্যে চাল রপ্তানিও করেছে বাংলাদেশ।

মতিয়া চৌধুরী জানান, কৃষিতে অভূতপূর্ব সাফল্যে বিশ্ব সম্প্রদায় স্বীকৃতি প্রদান করেছে এবং প্রধানমন্ত্রীকে সম্মানিত করেছে। যখনই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্র পরিচালনার আসনে থাকেন, তখন দেশ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যতা থেকে বেরিয়ে আসে।

মন্ত্রী আরও বলেন, সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন সময় পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে বাংলাদেশ খাদ্যশস্যের একটি দেশ হয়ে উঠেছে। এখন সরকার বর্তমানে টেকসই ও পুষ্টি নিরাপত্তা জন্য কাজ করছে। বাংলাদেশে ২০০৮ সালের আগে পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত সিনথেটিক রাসায়নিক কীটনাশক গুলির অপব্যবহারের ফলে অনেক উপকারী কীটপতঙ্গ ধ্বংসসহ সামগ্রিক উৎপাদন খরচ বৃদ্ধিও করে।

তিনি জানান, ২০০৯ সাল থেকে বর্তমান সরকার কীটপতঙ্গ ব্যবস্থাপনায় বিষাক্ত রাসায়নিক কীটনাশকগুলির উপর নির্ভরশীলতা কমানোর জন্য ইন্টিগ্রেটেড কীটপতঙ্গ ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএআরআই) ইতোমধ্যে বিভিন্ন ফসলের ধ্বংসাত্মক কীটনাশক নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন জৈব যৌক্তিক কীটপতঙ্গ ব্যবস্থাপনা কৌশল গড়ে তুলেছে।   

প্রসঙ্গত, সার্ক অঞ্চলের কৃষি অগ্রাধিকার খাত হিসেবে অব্যাহত রয়েছে যেখানে প্রায় ৬০ শতাংশে জনসংখ্যার জীবিকা হচ্ছে কৃষি । এবং আঞ্চলিক জিডিপি (মালদ্বীপের ৩.৫% থেকে নেপালের ৩৩.৭%) এ ১৮.২ শতাংশ।

বর্তমানে বাংলাদেশে, বিশেষ করে চাল উৎপাদন ৩.৫ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ১৯৭১-৭২ থেকে ২০১৫-১৬ পর্যন্ত গম উৎপাদন ১১ গুণ বেড়েছে। ২০১৬-১৬ মৌসুমে ভুট্টা উৎপাদন ২.৭৬ মিলিয়ন টন পৌঁছেছে। কৃষি জমি হ্রাস সত্ত্বেও খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বযংসম্পূর্ণতা অর্জন।

১৯৭১ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে আলু উৎপাদন ৩.৬ গুণ বেড়েছে। অন্য দেশগুলিতে আলু রপ্তানি হচ্ছে। ১৯৭১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত সবজি উৎপাদনের ৭৯ গুণ বেড়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন এগ্রিকেয়ার২৪.কম কে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ছবি: পিআইডি।