জৈব প্রযুক্তি উন্নয়নে জীব

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: জৈব প্রযুক্তি উন্নয়নে জীব বিজ্ঞানীদেরই অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেছেন, সবার জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিমান সম্পন্ন খাদ্য নিশ্চিত করতে সরকার অঙ্গিকারবদ্ধ। সে ক্ষেত্রে জৈব প্রযুক্তি ও টিস্যূ কালচার পদ্ধতি নিরাপদ।

আজ শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ৩ দিনব্যাপী ৯ম আন্তর্জাতিক প্ল্যান্ট টিস্যু কালচার অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী এ মন্তব্যের পাশাপাশি এসব কথা বলেন। এবারের সম্মেলনের মূল থিম হচ্ছে নিরাপদ খাদ্য ও টেকসই জলবায়ুর জন্য বায়োটেকনোলজি।

তিনি বলেন, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা ও ক্রমহ্রাসমান কৃষি জমির কথা মাথায় রেখে জিএম শস্য অপরিহার্য। দেশে খাদ্য চাহিদা মেটাতে কৃষিতে জৈব প্রযুক্তির ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উন্নতর জাত উদ্ভাবনের জন্য জিন প্রযুক্তি ভূমিকা পালন করে আসছে। আর এই কাজটি পিছনে রয়েছে জৈবপ্রযুক্তির ছোঁয়া।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তনে পরিবেশ এখন সবার দুশ্চিন্তার বিষয়। পরিবেশবান্ধব কৃষি এখন সময়ের জ্বলন্ত ইস্যু, পরিবেশবান্ধব কার্যক্রমের উল্লেখযোগ্য এক অংশ জৈবপ্রযুক্তি। জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ঝুকির প্রথম প্রভাব পরে কৃষির ওপর।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন জনিত সমস্যা মোকাবিলায় নতুন উন্নত ফসলের জাত উদ্ভাবন টেকসই খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিত করবে। জৈব প্রযুক্তি ও খাদ্য নিরাপত্তায় এই সম্মেলন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। জৈব প্রযুক্তি উন্নয়নে জীব বিজ্ঞানীদেরই অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। উন্নত জীবনের জন্য পরিবর্তিত বাস্তবতাকে মেনে নিতে হবে।

তিনি জানান, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে জৈব প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। আমাদের কৃষি, স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য জৈব প্রযুক্তিকে আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। এই জৈব প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা করতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, লবনাক্ততা, খড়া মোকাবেলা করে খাদ্য উৎপাদন, উদ্ভিদের বংশ বিস্তার, রোগ নির্মূল এবং জীবদেহের রাসায়নিক রূপান্তরের ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি ও প্ল্যান্ট টিস্যু কালচার কৌশল বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। খাদ্য ঘাটতির দেশ আজ খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশ হিসেবে আত্ম প্রকাশে প্রযুক্তির ব্যবহার অন্যতম।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর প্ল্যান্ট টিস্যু কালচার অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি (বিএপিটিসিঅ্যান্ডবি) সভাপতি প্রফেসর ড. রাখা হরি সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- বিএআরসি’র নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. মোঃ আখতারুজ্জামান সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ।

বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর প্ল্যান্ট টিস্যু কালচার অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি (বিএপিটিসিঅ্যান্ডবি) আয়োজিত সম্মেলনে থিম পেপার উপস্থাপন করেন দিল্লির আইসিজিইবি’র  ড. নরেন্দ্র তেটুজা।

৩ দিন ধরে চলবে সান্টিফিক অধিবেশনগুলো। সম্মেলনের এই অধিবেশনগুলোতে শস্য উন্নয়ন, জীব প্রযুক্তি পরিবেশ, বায়োটেকনোলজি ব্যবহারসহ বিভিন্ন বিষয়ে দেশি-বিদেশি বিজ্ঞানীরা পেপার উপস্থাপন এবং তার ওপর আলোচনায় অংশ নেবেন।

সম্মেলনে ভারত,নেপাল,মালয়েশিয়া, কম্বোডিয়া,ফিলিপাইন ও কোরিয়ার মোট ১৬ জন বিদেশি এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা কেন্দ্র, তুলা উন্নয়ন বোর্ডসিলেটসহ শতাধিক বিজ্ঞানী অংশ নিচ্ছেন।

আরও পড়ুন: বিষমুক্ত সবজি গ্রাম গড়ে উঠেছে কুমিল্লায়