ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: কৃষি প্রধান দেশে ঢেঁড়শকে আমরা খুব সহজলভ্য একটি সবজি হিসেবে চিনি। অন্যান্য সবজির পাশাপশি সঠিক নিয়ম মেনে ঢেঁড়শ চাষ করলে অধিক লাভবান হওয়া যায়।

চলুন ঢেঁড়শ চাষের সঠিক পদ্ধতি গুলো জেনে নিই:

মাটি: দোআশ ও বেলে দোআশ ঢেঁড়শ চাষের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। পানি নিষ্কাশনের সুবিধা থাকলে এটেল মাটিতেও চাষ করা যায়

জাত: শাউনি, পারবনি কানি-, বারী ঢেঁড়শ, পুশা সাওয়ানী, পেন্টা গ্রীন, কাবুলী ডোয়ার্ফ, জাপানী প্যাসিফিক গ্রীন এসব ঢেঁড়শের চাষ উপযোগী জাত। শেষের দুটো জাত সারা বছর চাষ করা হয়।

সময়: ঢেঁড়শ সারা বছরই চাষ করা যায়। তবে সাধারণতঃ গ্রীষ্মকালে এর চাষ করা হয়। ফাল্গুন চৈত্র ও আশ্বিন-কার্তিক মাস বীজ বোনার উপযুক্ত সময়।

আরও পড়ুন:আধুনিক পদ্ধতিতে কলা চাষ

বীজের পরিমাণ: প্রতি শতকে ২০ গ্রাম, হেক্টর প্রতি ৪- ৫ কেজি বীজ লাগে।

বীজ রোপণ: বীজ বোনার আগে ২৪ ঘন্টা ভিজিয়ে নিতে হয়। গভীরভাবে চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে চাষের জমি তৈরি করতে হয়। মাটি থেকে সারির দুরত্ব হবে ৭৫ সেমি.। বীজ সারিতে ৪৫ সেমি. দূরে দূরে ২-৩ টি করে বীজ বুনতে হয়।

জাত অনুযায়ী চারা থেকে চারা এবং সারি থেকে সারির দুরত্ব ১৫ সেমি. কমানো বা বাড়ানো যেতে পারে। শীতকালে গাছ ছোট হয় বলে দূরত্ব কমানো যেতে পারে। চারা গজানোর পর প্রতি গর্তে একটি করে সুস্থ সবল চারা রেখে বাকী চারা গর্ত থেকে উঠিয়ে ফেলতে হবে।

সারের পরিমাণ: সার এক শতকে হেক্টর প্রতি গোবর ৭৫ কেজি ১৮ টন, সরিষার খৈল ১.৭৫ কেজি ৪২৫ কেজি, ইউরিয়া ২৩০  গ্রাম, ৫৫-৬০ কেজি , টিএসপি ৩৫০ গ্রাম , ৮৫-৯০ কেজি, এমও পি ২৩০গ্রাম, ৫৫-৬০ কেজি।

সার প্রয়োগ: জমি তৈরি করার সময় ইউরিয়া সার বাদে বাকি সব সার মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। সার মেশানের ১০-১৫ দিন পর জমিতে ঢেঁড়শ বীজ বপন করতে হয়। ইউরিয়া সার সমান দু‘কিস্তিতে উপরি প্রয়োগ করতে হয়। প্রথম কিস্তিতে চারা গজানোর ২০-২৫ দিন পর এবং ২ য় কিস্তিতে দিতে হবে চারা গজানোর ৪০-৫০ দিন পর।

যত্ন: নিড়ানী দিয়ে মাটির উপরিভাগ মাঝে মাঝে আলগা করে দিতে হবে। জমি সব সময় আগাছা মুক্ত রাখতে হবে। মাটির প্রকার ভেদ অনুযায়ী ১০/১২ দিন পর পর সেচ দেয়া প্রয়োজন। প্রতি কিস্তিতে সার প্রয়োগের পর জমিতে সেচ দিতে হবে।

আরও পড়ুন:যেভাবে গাজর চাষে অধিক লাভবান হবেন

পোকামাকড় দমন: ঢেঁড়শের ফল ছিদ্রকারী পোকাই সবচে বেশি ক্ষতি করে। এ ছাড়া জাব পোকা, সাদা মাছি, ছাতরা পোকা, লাল গান্ধি ইত্যাদিও ক্ষতি করে।

রোগ ব্যবস্থাপনা: হলদে শিরা স্বচ্ছতা ঢেঁড়শের প্রধান ক্ষতিকর রোগ। এ ছাড়া মোজেইক ও পাতায় দাগ রোগও দেখা যায়।

ফসল সংগ্রহ: বীজ বোনার ৬-৮ সপ্তাহের মধ্যে এবং ফুল ফোটার ৩-৫ দিনের মধ্যে ফল আসা শুরু হয়। জাত ভেদে ফল ৮-১০ সেমি. লম্বা হলেই সংগ্রহ করতে হয়।

যেভাবে ঢেঁড়শ চাষে অধিক লাভবান হবেন শিরোনামে লেখাটি কৃষি তথ্য সার্ভিস থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

এগ্রিকেয়ার / এমবি