নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম:  রাজশাহীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারে দেশি ও ব্রয়লার মুরগি ছাড়াও সব ধরণের  মুরগির দাম কমেছে।

রাজশাহীর সাহেববাজার মাষ্টারপাড়া কাঁচাবাজারের পাইকারি মুরগি বিক্রেতা মিঠু এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, সব ধরনের মুরগির দামই কমেছে। কদিন আগে সোনালী মুরগির দামটা বেশ চড়া ছিল। এখন সব ধরনের মুরগি মোটামুটি কম দামে বিক্রি করছি।

এই ব্যবসায়ী জানান, বড় ব্রয়লার ১৩৫ টাকা এবং ছোট ব্রয়লার ১৪৫ টাকা কেজি, সোনালী ২৭০ টাকা থেকে কমে এখন ২১৫ টাকা, লেয়ার সাদা ১৮০ টাকা, লেয়ার লাল ১৯০ টাকা যা আগে ছিল ২২০ টাকা এবং দেশী মুরগি ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এখন সাড়ে ৩’শ করে বিক্রি হচ্ছে।

আরেক ব্যবসায়ী নাদের হোসেন এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, মুরগির দাম আর বাড়বে বলে মনে হয়না। যা দাম আছে এই দামেই চলবে। আবার বলাও যায় না, বাজার টান পড়লে দাম বাড়ে। তবে মনে হচ্ছে আর দাম বাড়বে না।

বাজারের ডিম ব্যবসায়ী শামীম হোসেন এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, ডিমের দাম বাড়তে পারে। শীতে ডিমের দাম কিছুটা বাড়ে। কাঁচাবাজারের ঠিক নাই। মাল (ডিম) একটু টান পড়লে দাম বাড়ে আবার ক্রেতা কমে গেলে বা চাহিদা না থাকলে দাম কমে যায়। শীতের সময় বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ডিম বিক্রি হওয়ায় চাহিদা একটু বাড়তিই থাকে।

তিনি জানান, প্রতিহালি (৪টি) লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৩৪ টাকায়। সাদা ডিম ৩০ টাকা ও হাঁসের ডিম ৪৮ টাকা হালি দরে বিক্রি করছেন।

আজ মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর ২০২১) নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া যায়।

ডিমের দাম ও মুরগির দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, খাদ্যের এবং বাচ্চার দাম অত্যন্ত বেশি। বস্তাপ্রতি খাদ্যেও দাম ফের বাড়ানো হয়েছে ৫০-৭৫ টাকা। দাম বাড়ার কারণে মুলত বাচ্চা তুলছেন না খামারিরা। করোনার ভয়ে কয়েকমাস আগে খামারিরা বাচ্চা না তোলার কারণে এখন তৈরি মুরগি বাজারে টান পড়ে। এ কারণেই মূলত দাম বেড়ে ৩০০ টাকা কেজি লাগে। এখন মুরগির বাজার আস্তে আস্তে কমবে। তবে, এখন যে বাজার আছে তাতে আমাদের লাভ হচ্ছে। কমে গেলে লাভ থাকেনা।

রাজশাহী পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, রাজশাহীতে ৬০ ভাগ খামার ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল। বার্ড ফ্লু রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেক মুরগি মারা গেছে। ভয়ে আর নতুন বাচ্চা তুলেননি খামারিরা। যেসব খামার বন্ধ ছিল তারা উৎপাদনে ফিরেছেন তাই একটু দাম কমেছে।

ডিমের দাম আরো বাড়বে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডিমের দামও বাড়বে। অনেক লেয়ার খামারি মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন। খাদ্যের দাম বেড়েছে বস্তাপ্রতি ৪০০ টাকা। এই দাম বাড়ানো সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। সরকার সিন্ডিকেট ভাঙতে পারছে না। বৈশ্বিকভাবে দাম ১২ টাকা থেকে ১৩ টাকা বাড়লে বাংলাদেশে সিন্ডিকেটে দাম বাড়ায় ৭০-৮০ টাকা। এটা কোন নীতি নৈতিকতার মধ্যে পড়ে না। ডিমের দাম বাড়ানো প্রয়োজন। সর্বনিম্ন ৩৬ টাকা হালি লাল ডিম থাকা প্রয়োজন।

একইসাথে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় বাজারে দ্বিতীয় দফায় এসেছে ইলিশ। আমদানি বেশ ভালো হওয়ায় দামও তুলনামূলক কম। একদম ছোট সাইজের ইলিশ ৫০০ টাকা কেজি, এককেজি ওজনের ইলিশ ১ হাজার এবং দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১২’শ থেকে ১৩’শ টাকায়।

মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন মাছের আমদানি বেশ ভালো। বিক্রি হচ্ছে আগের তুলনায় বেশি। প্রতিকেজি রুই আকার ভেদে ছোট থেকে বড় সর্বনিম্ন ২০০ টাকা এবং ৩ কেজি ওজনের রুই বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা কেজি দরে। কাতল ২৮০, তেলাপিয়া ১৪০, চিংড়ি ৮০০, বোয়াল ৬০০, পাবদা সাড়ে ৪০০, সিলভার কার্প ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়াও বাজার তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, শীতকালীন সবজির দাম মধ্যম পর্যায়ে রয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, শীতকালীন সবজি বাজারে আসতে শুরু করেছে অনেক আগেই। আরো বেশি আমদানি হলে দাম আরো কমে যাবে। বাজারে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে শিম। প্রতিকেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি দরে। এছাড়াও লাল ক্যাপসিকাম ৬৫০ টাকা এবং সবুজ ক্যাপসিকাম ৩০০ টাকা।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ