নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমস বলেছেন, “আমার দেশের সমৃদ্ধির কারণে মাছের উৎপাদন বিশ্বের বুকে একটা চ্যালেঞ্জিং জায়গায় পৌঁছে গেছে। আজ দুধ, ডিমের উৎপাদনে অভাবনীয় সাফল্য এসেছে। আর এ উৎপাদিত দ্রব্য একদিকে খাদ্যের চাহিদা মেটাতে পারছে, অন্যদিকে পুষ্টির চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে। এসব কিছু সম্ভব হয়েছে দেশ স্বাধীন হয়েছে বলে।”

সোমবার (০৭ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে দুগ্ধ সপ্তাহ ২০২১ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

এ সময় মন্ত্রী বলেন,  “আজ বাংলাদেশ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে যে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে, যে বিপ্লব হয়েছে, সেই বিপ্লবের সৃষ্টি হতো না যদি দেশ স্বাধীন না হতো। আমার দেশের সম্পদের সমৃদ্ধির কারণে কোরবানির সময় এখন বিদেশ থেকে পশু আনতে হয় না।

প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে মন্ত্রী আরো যোগ করেন, “গ্রামের সাধারণ মানুষ যাদের গবাদিপশু আছে তারা যাতে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে চমৎকার ব্যবহার ও ভালো সেবা পায় সেটা লক্ষ্য রাখতে হবে। করোনাকে মাথায় রেখেই প্রাণিসম্পদ খাতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এ খাতের উন্নয়নে জীবনের ঝুঁকি নিয়েও লড়াই করতে হবে। সর্বোপরি সরকারি কর্মকর্তাদের মানুষের কল্যাণে, দেশের উন্নয়নে নিবেদিত রাখতে হবে।”

দুগ্ধ সপ্তাহ পালনে ভূমিকা রাখা সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে এসময় মন্ত্রী আরো যোগ করেন, “দুগ্ধ সপ্তাহে দেশব্যাপী একটা সাড়া জেগেছে। মানুষের ভেতর একটা উৎসাহ এসেছে, অনুপ্রেরণা এসেছে। তারা দুধ খাবার প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পারছে। দুগ্ধ খাতের উন্নয়নের সাথে সাথে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে, গ্রামীণ অর্থনীতি সচল হচ্ছে, পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা পূরণ হচ্ছে। এভাবে দুগ্ধ খাতসহ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সাথে সম্পৃক্ত সকল খাতকে বেগবান করতে হবে। এজন্য বেসরকারি খাতকে এগিয়ে যেতে হবে। বেসরকারি খাতকে সরকার বিভিন্নভাবে সহায়তা দিচ্ছে। বেসরকারি খাত বিকশিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী ১০২টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছেন। সরকারি ও বেসরকারি সকল খাত যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে বাংলাদেশকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না।”

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডাঃ শেখ আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদ। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মোঃ আবদুল জলিল। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রাণিসম্পদ ও ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোঃ আব্দুর রহিম এবং দুগ্ধ সপ্তাহের কার্যক্রম তুলে ধরেন একই প্রকল্পের প্রধান কারিগরী সমন্বয়ক ড. গোলাম রব্বানী। এছাড়া বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধি ক্রিশ্চিয়ান বার্গার ভার্চুয়ালী যুক্ত হয়ে অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শাহ্ মোঃ ইমদাদুল হক, শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, সুবোল বোস মনি ও মোঃ তৌফিকুল আরিফসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বর্তমান ও প্রাক্তন কর্মকর্তাবৃন্দ, ও গবেষকবৃন্দ, ডেইরি অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি এবং প্রাণিসম্পদ খাতের উদ্যোক্তা ও খামারিগণ সমাপনী অনুষ্ঠান ও সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য, ২০০১ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) ১ জুন তারিখকে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। একই বছর থেকে বৈশ্বিক খাদ্য হিসেবে দুধের গুরুত্ব তুলে ধরা এবং দৈনন্দিন খাদ্য গ্রহণে দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্য অন্তর্ভুক্ত করাকে উৎসাহিত করতে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী এ দিবসটি উদযাপন হয়ে আসছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এ বছর বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উদযাপনের পাশাপাশি ‘প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ পান করুন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করুন’-এ প্রতিপাদ্যে প্রথমবারের মতো দেশব্যাপী ১ জুন থেকে ৭ জুন পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দুগ্ধ সপ্তাহ উদযাপন করেছে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ