দেশের কৃষি শিক্ষা, গবেষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: দেশের কৃষি শিক্ষা, গবেষণা ও সম্প্রসারণে কৃষিবিদদের ভূমিকা সর্বজন স্বীকৃত বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী কৃষিবিদ ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেছেন, এ দেশের কৃষি শিক্ষা, কৃষি গবেষণা ও কৃষি সম্প্রসারণে কৃষিবিদদের ভূমিকা আজ সর্বজন স্বীকৃত।

আজ বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) বঙ্গবন্ধু স্মৃতি চত্বরে  কৃষিবিদ দিবস-২০২০ এর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য ও এসব কথা বলেন। দিবসটির মূল স্লোগান ছিল “বঙ্গবন্ধুর অবদান কৃষিবিদ ক্লাস ওয়ান” যা কৃষিবিদদের সামাজিক ও পেশাগত শ্রেষ্ঠ অর্জন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, কৃষি গবেষণার বিভিন্ন ক্ষেত্রে নতুন নতুন কৃষি প্রযুক্তি ও কলাকৌশল উদ্ভাবন করে কৃষি উন্নয়নে অবদান রেখে যাচ্ছেন কৃষিবিদগণ। ফলশ্রুতিতে দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ।

তিনি বলেন, খোরপোষের কৃষি আজ বাণিজ্যিক কৃষিতে উপনিত হয়েছে, কৃষি আজ মর্যাদাপূর্ন পেশা। দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা কৃষিকে ঘিরে। কৃষির উৎকর্ষ ছাড়া জাতীয় উন্নয়ন সম্ভব নয়।

কৃষি গ্রাজুয়েটবৃন্দের নিরন্তর প্রচেষ্টা ও কর্মঠ কৃষক ভাইদের কঠোর শ্রম, সর্বপরি কৃষক দরদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ বলে উল্লেখ করেন কৃষিমন্ত্রী।

ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও কৃষিজমির ক্রমহ্রাসমান পরিস্থিতিতে কৃষির নানাবিধ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এটি অর্জন করা হয়েছে। এ অর্জনের পেছনে কৃষিবিদদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বাংলাদেশ আজ সমগ্র বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। কৃষক ও কৃষি বান্ধব সরকার কৃষকের প্রয়োজনের কথা চিন্তা করে সারের দাম কমিয়েছে।

দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে সকালে বাকৃবি হ্যালিপেড চত্বর থেকে এক বিশাল আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক এর নেতৃত্বে শোভাযাত্রায় নবীণ-প্রবীণ কৃষিবিদগণ অংশ নেয়। শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি চত্বরে জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের প্রধান আকাঙ্খা ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত ‘সোনার বাংলা’ গড়ার লক্ষ্যে ১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণির পদমর্যদা দিয়েছিলেন।

এটি দেশের কৃষি, কৃষক ও কৃষিবিজ্ঞানীদের জন্য ছিল এক ঐতিহাসিক মাইলফলক। ফলে অধিকতর মেধাবী শিক্ষার্থীরা কৃষি শিক্ষায় আগ্রহী হয়ে ওঠে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী জানান।

তিনি বলেন, জাতির জনকের দেয়া কৃষিবিদদের ঐতিহাসিক এ সম্মানকে স্মরণীয় করে রাখতেই প্রতি বছর ১৩ ফেব্রুয়ারি জাকজমকপূর্ণ ভাবে কৃষিবিদগণ দিবসটিকে ‘কৃষিবিদ দিবস’ হিসাবে পালন করে আসছে।

তিনি বলেছেন, কৃষিবিদরা বঙ্গবন্ধুর মুখ রক্ষা করেছে,খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্নতা অর্জন করেছে দেশ। বাংলাদেশ আর বিদেশী সাহায্য নির্ভর নয়। কৃষির বাণিজ্যিকীকরণ করা গেলে শুধু কৃষিই দেশকে এগীয়ে নিয়ে যাবে। এ সময়ে তিনি একটি শক্তিশালী অ্যালামনাই এসোসিয়েশন গড়ে তোলার তাগিদ দেন।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মোঃ আশরাফ আলী খান খসরু, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মোঃ শরীফ আহমেদ, ইকরামুল হক টিটু, মেয়র, ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন এবং সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অধ্যক্ষ মোঃ মতিউর রহমান। মূল প্রবন্ধকার হিসাবে উপস্থিত ছিলেন এমিরিটাস প্রফেসর কৃষিবিদ ড. এম এ সাত্তার মন্ডল।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অ্যালামনাই এসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা। আরও বক্তব্য রাখেন বাকৃবি’র প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ জসিম উদ্দিন খান, অ্যালামনাই এসোসিয়েশন এর কার্যকরি সভাপতি হামিদুর রহমান।

অনুষ্ঠানে বগুড়া-১ আসনের সংসদ সদস্য কৃষিবিদ মরহুম আবদুল মান্নান এর ওপর নির্মিত তথ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয় এবং মরণোত্তর সম্মাননা প্রদান করা হয়। এবারের কৃষিবিদ দিবস কৃষিবিদ মরহুম আব্দুল মান্নান এর প্রতি উৎসর্গ করা হয়।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত দুই হাজারেরও অধীক কৃষিবিদ অংশ নেন। সন্ধ্যায় লেজার শো এবং পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

দেশের কৃষি শিক্ষা, গবেষণা ও সম্প্রসারণে কৃষিবিদদের ভূমিকা সর্বজন স্বীকৃত শিরোনামের সংবাদটি কৃষিমন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছেন।