নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: নওগাঁর ধামইরহাটে সাড়া ফেলেছে ব্রিধান-৪৮ অথচ ক’দিন আগে মাঠভরা সোনালী ধানে দুলছিলো কৃষকের হাসি। একদিকে লকডাউন অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় অম্পানের কারণে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ধানের সঠিক মূল্য পাবেন কিনা তা নিয়ে কৃষকের মাঝে একরকম হতাশা কাজ করছিল। কিন্তু এখন নতুনভাবে ব্রিধান-৪৮ রোপনে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন তারা।

উপজেলা কৃষি বিভাগ এবং প্রশাসনের কঠোর নজরদারিতে সারাদেশের মতো ধামইরহাটে ধানের ন্যায্য মূল্য পাওয়ায় কৃষকের মুখে ফিরে আসে সেই হাসি। আর সে কারণেই এবার ব্রিধান- ৪৮ রোপনে মাঠে ব্যাস্ত সময় পার করছেন কৃষক কৃষাণী।

উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে জানাযায়, উচ্চ ফলনশীল ব্রিধান- ৪৮ বীজতলা থেকে ধানকাটা পর্যন্ত পরিপূর্ণ হতে ১০০ থেকে ১১০ দিন সময় লাগে। অন্যান্য ধানের তুলনায় এ ধানে ৩০ থেকে ৪০ ভাগ সার ও পানি কম লাগে। উচ্চ ফলনশীল ব্রিধান- ৪৮ বিঘা প্রতি ৫৫ থেকে ৬০ মণ ফলন হয়। এই ধান দেখতে অনেকটা চিকন ও খেতে সুস্বাদু হওয়ায় চাহিদাও বেশি।

সেকারণে এ ধান রোপনে কৃষকের আগ্রহ বেড়ে গেছে। এবছর কৃষি বিভাগের নিজস্ব উদ্যোগে ৭শ ৫০ জন কৃষকের মাঝে প্রণোদনা হিসেবে মাথা প্রতি কৃষকের মাঝে ১০ কেজি এমওপি, ২০ কেজি ডিএপি সার ও ৫ কেজি করে ধানের বীজ প্রদান করা হয়েছে বলে কৃষিবিভাগ নিশ্চিত করেন।

শস্যক্ষেত নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলা। এ উপজেলায় সঠিক পরিচর্যা ও মানসম্মত চাষাবাদের কারণে কৃষকের উৎপাদিত ধান দেশে মানে ও গুনে সেরা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার নিরলস প্রচেষ্ঠায় কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার প্রদানের কারণে আগাম ব্রি-ধান ৪৮ রোপনে কৃষক কৃষাণীদের মাঠে ভীষণ ব্যাস্ত সময় পার করতে দেখা যায়। কৃষি বিভাগের উদ্যোগে বিভিন্ন প্রণোদনার কারণে ধামইরহাটে কৃষকের মাঝে ব্রিধান-৪৮ চাষে ব্যাপক সারা পেয়েছে। মাঠে নারী পুরুষের দল বদ্ধ ভাবে ধান চাষের দৃশ্য গ্রামবাংলার ঐতিহ্যকে স্বরণ করিয়ে দেয়।

দক্ষিণ চকযদু ৭ নং ওয়ার্ডের কৃষক সেকেন্দার আলী জানান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে এবারই প্রথম উচ্চ ফলনশীল ব্রিধান- ৪৮ মাঠে রোপন করেছি। তাছারা এর খরচ অনেক কম, অল্প সময়ে ধান ঘরে তুলতে পারবো। অন্যান্য ধানের তুলনায় এ ধানে ৩০ থেকে ৪০ ভাগ সার ও পানি কম লাগে। উচ্চ ফলনশীল ব্রিধান- ৪৮ বিগাহারীতে ৫৫ থেকে ৬০ মণ ফলন হয়। ব্রিধান-৪৮ দেখতে অনেকটা চিকন ও খেতে সুস্বাদু হওয়ায় চাহিদাও বেশি।

অপর কৃষক জয়মুত আলী বলেন, ব্রিধান- ৪৮ এর নাম আগে কখনো শুনিনি। একদিন উঠোন বৈঠকে লিফলেটের মাধ্যমে ব্রিধান- ৪৮ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরি এবং পরবর্তীতে কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে এ ধান রোপনে আগ্রহী হই। তাছাড়া উচ্চ ফলনশীল ব্রিধান- ৪৮ চাষ কার পরেও আমরা পরবর্তীতে তিনটি ফসল ঘরে তুলতে পারবো এমন সুজুক হাতছাড়া করতে চাইনি। কৃষি অফিসের প্রণোদনায় আমাকে ১০ কেজি এমওপি, ২০ কেজি ডিএপি সার ও ৫ কেজি করে ধানের বীজ দেওয়ায় আমি উপকৃত হয়েছি।

এ ব্যাপারে কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেলিম রেজার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এই করোনাকালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও কৃষি মন্ত্রীর আহ্বানে ইরি ধান কাটার পর উপজেলায় এক চুল পরিমান আবাদী জমি যেনো পড়ে না থাকে আমি এবং আমার পুরো টিম নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগের উদ্যোগে পথসভা, সমাবেশ, সেমিনার, উঠান বৈঠক, লিফলেট বিতরণ, প্রশিক্ষণ ও বিভিন্ন প্রণোদনার কারণে ধামইরহাটে কৃষকের মাঝে ব্রিধান-৪৮ চাষে ব্যাপক সারা পেয়েছে।

নওগাঁর ধামইরহাটে সাড়া ফেলেছে ব্রিধান-৪৮ অন্যদিকে জেলার রাণীনগরে লেবু চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা।