ইউসুফ আলী সুমন, মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা নওগাঁ। খাদ্য এবং মৎস্য উৎপাদনে উদ্বৃত্ত এই জেলায় চলতি রবি মৌসুমের অন্যান্য ফসলের ন্যায় ধানের ভালো দামে খুশি কৃষকরা ।

বিগত দু’তিন বছর ধরে কৃষকরা তাঁদের উৎপাদিত ধানের নায্যমূল্য ফিরে পেয়ে পুনরায় ধান চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। কৃষকদের উৎপাদিত ধানের নায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সরকারের নানামুখী উদ্যোগ সেই দিক উন্মোচিত করেছে।

চলতি আমন মওসুমে জেলায় ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ করেন কৃষকরা। পর পর দু’বারের বন্যায় ৫ হাজার ৮৬৫ হেক্টর জমির ধান সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট হয়ে যাওয়ায় মোট ১ লাখ ৯১ হাজার ৭৮৫ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ নিশ্চিত হয়। এর মধ্যে উন্নত ফলনশলি উফশি জাতের ১ লাখ ৬৪ হাজার ২৪৫ হেক্টর, স্থানীয় জাতের ২৭ হাজার ১৮৭ হেক্টর এবং হাইব্রীড জাতের ৩৫৩ হেক্টর।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নওগাঁর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ শামসুল ওয়াদুদ এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে জানিয়েছেন, চলতি আমন মওসুমে জেলায় ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ করা হয়েছে। এসব জমি থেকে প্রায় ৫ লক্ষ ৮৪ হাজার ৯৪৫ মেট্রিক টন চাল উৎপাদিত হবে।

ইতোমধ্যে জেলার বাজারগুলোতে আমন ধান বেচাকেনা শুরু হয়েছে। এসব বাজারে প্রতি মন ধান ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ১শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। কৃষকদের হিসেব অনুযায়ী বীজ, সার, কীটনাশক, জমিতে চারা রোপন, পরিচর্যা, কাটা ও মাড়াইসহ প্রতি বিঘা জমিতে মোট খরচ হয়েছে ১২ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি জমিতে এ বছর ধান উৎপাদিত হয়েছে কমপক্ষে ২০ মন হারে।

কমপক্ষে ১ হাজার টাকা হিসেবে এই ধানের মুল্য ২০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় সব খরচ বাদ দিয়ে কৃষকরা লাভ করছেন কমপক্ষে ৮ হাজার টাকা। যেখানে কৃষকদের উৎপাদন খরচ ঘরে তোলা অসম্ভব হয়েছিল সেকানে এখন লাভ করছেন। এর ফলে পুনরায় কৃষকরা ধান উৎপাদনে অধিক আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

অপরদিকে সরকার কৃষকদের ধানের নায্যমুল্য নিশ্চিত করতে মিলারদের মাধ্যমে কৃষকদের নিকট থেকে সরাসরি ধান ক্রয় কার্যক্রম শুরু করেছে। সরকার এ বছর সিদ্ধ চাল প্রতি কেজি ৩৭ টাকা, আতপ চাল প্রতি কেজি ৩৬ টাকা এবং ধান প্রতি কেজি ২৬ টাকা দরে ক্রয় করছে।

নওগাঁ জেলায় আমন মওসুমে সরকার ৩২ হাজার ২১৭ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল, ১২ হাজার ১৭৮ মেট্রিক টন ধান এবং ৩ হাজার ৫ মেট্রিক টন আতপ চাল ক্রয় করবে।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ