জেলা প্রতিনিধি, নাটোর: ছয় বিঘা জমিতে ২০০ খেজুর গাছ লাগিয়েছেন কৃষি উদ্যোক্তা গোলাম নবী। আশা নিয়ে গাছ লাগিয়েছিলেন আর সেই গাছে গাছে ঝুলছে আজোয়া, বারহী, শিশির, সুককাইসহ অন্তত ১০ প্রজাতির খেজুর। গাছ রোপণের চার বছরের মাথায় এবারই প্রথম সাফল্য পেয়েছেন তিনি।

নাটোর হর্টিকালচার সেন্টার ও কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, মরুভূমির এ খেজুর নাটোরে আশা জাগালেও এটিকে আরো পর্যবেক্ষণে রাখলে বাণিজ্যিক সম্ভাবনা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। পরিকল্পিত গবেষণার পর এ দেশের মাটিতে আরবের খেজুর চাষাবাদ করা গেলে এটিও হতে পারে অন্যতম লাভজনক ফসল।

পড়তে পারেন: কোটি টাকা লাভের আশায় ইউটিউব দেখে সৌদি খেজুরের চাষ

নাটোরের মাঝদিঘা এলাকায় গড়ে তুলেছেন এই বাগান। দেখা যায়, ২০১৮ সালে নানা বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে সুদূর সৌদি আরব থেকে গাছগুলো সংগ্রহ করেন নাটোরের কৃষি উদ্যোক্তা গোলাম নবী। গত বছর কিছু গাছে খেজুর ধরলেও এ বছর পুরোপুরি সফলতা আসে।

কৃষি উদ্যোক্তা গোলাম নবী জানান, সৌদি আরব ও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে তিনি ১০টি উন্নত জাতের ২০০টি খেজুর গাছ সংগ্রহ করেন। গত বছর কয়েকটা গাছে খেজুর ধরলেও এ বছর অন্তত ৮০টি গাছে কাঁদি ভরে খেজুর এসেছে। প্রতিটি গাছে পাঁচ-ছয়টি বড় বড় কাঁদি এসেছে। একেকটি কাঁদির ওজন অন্তত ১০ কেজি করে হবে। নাটোরে মাটিতে এমন সাজানো-গোছানো আরবের খেজুর বাগান একমাত্র তারই বলে দাবি করেন তিনি। প্রতিদিন অনেকে খেজুর বাগান দেখতে এসে মুগ্ধ হন বলে জানান এ কৃষি উদ্যোক্তা।

পড়তে পারেন:সৌদি খেজুর, ভিয়েতনামী নারিকেল চাষে ৫০ লাখ টাকা ঋণ দেবে ব্যাংক

এছাড়া সদর উপজেলার করোটা গ্রামের আরেক চাষী মোবারক হোসেনও বীজ থেকে আরবের খেজুর গাছের ৬০০টি চারা উৎপাদন করে সফলতা পেয়েছেন। এক বছরের মাথায় তার বাগানেও এ ফলের দেখা মিলছে। খেজুর চাষী মোবারক হোসেন জানান, তিনি সৌদি খেজুরের বীজ থেকে ৬০০টি চারা করেছিলেন। চারাগুলো এখন গাছে রূপান্তরিত হয়েছে।

এসব গাছের বয়স সাড়ে তিন বছর। তার বাগানের বেশকিছু গাছে এবার খেজুর ধরেছে। তার ধারণা, বাংলাদেশে সৌদি খেজুর চাষে অপার সম্ভাবনা রয়েছে। আগে অনেকেই ধারণা করত, এ দেশের মাটিতে মরুর খেজুর গাছ টিকবে না। যেহেতু তার বাগানে ফলন এসেছে তাই তিনি মনে করেন চেষ্টা করলে এ দেশের মাটিতে সফলভাবে খেজুরের চাষ সম্ভব। বাংলাদেশের মাটিতে মরুভূমির এ ফল চাষে খুশি স্থানীয়রাও।

পড়তে পারেন: ঘাস চাষ করেই কোটিপতি গফুর!

নাটোর হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক ড. মো. জাহাঙ্গীর ফিরোজ এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে জানান, রমজান ছাড়াও সারাবছরই বাংলাদেশে খেজুরের চাহিদা রয়েছে। দেশে যেসব খেজুর খাওয়া হয় তা আমদানিনির্ভর। গাছগুলোয় ঠিকমতো  ফলন আসে কিনা, এ জন্য আরো দুই-তিন বছর অপেক্ষার পর প্রান্তিক পর্যায়ে চাষাবাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। গাছ লাগানোর পর ব্যাপকভাবে ছড়িতে দেয়ার জন্য আরো গবেষণার প্রয়োজন।

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ