ডেস্ক প্রতিবেদন, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নাটোরে কৃষি জমিতে চলছে অবাধে পুকুর খনন। সরকারি অফিসের কিছু অসৎ কর্মকর্তাদের যোগসাজশে এমন কৃষি জমির ধ্বংসযজ্ঞ চললেও প্রশাসনের ভূমিকা রহস্যজনক। নামমাত্র কিছু অভিযান চললেও প্রভাবশালীরা থেকে যাচ্ছেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তাই দিনে-রাতে অবাধে চলছে পুকুর খননের কাজ। এতে করে শুধু কৃষি জমিই নষ্ট হচ্ছে না পরিবেশের উপরও বিরূপ প্রভাবের আশঙ্কা রয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে গুরুমশৌল গ্রামের মাঠেই আড়াইশ থেকে তিনশ’ বিঘা জমিতে চলছে অবৈধ পুকুর খনন। মাঠের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে তাকালেই শুধু পুকুর আর পুকুর।

এতে শুধু কৃষি জমিই কমছে না, মাটি কাটা ট্রলি চলাচলের কারণে সড়ক মহাসড়কেরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। দ্রুত এর অবসান না হলে জলাবদ্ধতাসহ পরিবেশে বিরূপ প্রভাব পড়ারও আশঙ্কা করছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা। তবে জেলা প্রশাসনের দাবি পুকুর খনন বন্ধে জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বিল চিনাডাঙ্গা, জোনাইল, ও বড়াইগামসহ গুরুমশৌল গ্রামের মাঠে এমন সবুজ ধান কেটে তিন ফসলি জমিতে এভাবেই চলছে অবৈধ পুকুর খনন। কৃষি জমিতে পুকুর খননে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছে না নাটোর জেলা জুরে পুকুর মালিকরা। পুকুর খননের ফলে একদিকে যেমন কমছে কৃষি জমি, তেমনি কমবে কৃষি উৎপাদন। এছাড়া অনেকেই আমবাগান ভিটেমাটিতেও সাময়িক লাভের আশায় পুকুর খনন করছে। মাঝে মধ্যে প্রশাসনের দুয়েকটি  অভিযান চললেও কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না কৃষি জমির এমন ধ্বংসযজ্ঞ। এরসঙ্গে উপজেলা প্রশাসনের কিছু অসৎ কর্মকর্তারা জড়িত থাকায় কোনও পদক্ষেপই কার্যকর হচ্ছে না। ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রভাবশালীরা সব সময়ই থেকে যাচ্ছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

এতে করে একদিকে যেমন পরিবেশ ও জলবায়ুর উপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে তেমনি জনজীবনে নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। মাটি বহনের জন্য অবৈধ ট্রাক্টর সড়ক মহাসড়কে অবাধে চলাচল করায় অল্পদিনেই নষ্ট হচ্ছে রাস্তাঘাট। এছাড়া অদক্ষ চালক দ্বারা গাড়ি চালানোও ঘটছে দুর্ঘটনাসহ প্রাণহানিও। একদিকে পুকুর খনন যেমন আইনবিরোধী তেমনি কৃষি ফসল বিনষ্ট করে পুকুর খনন করা আরও একটি বড় অপরাধ। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলেন জেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা সুব্রত কুমার উপ-পরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর,নাটোর।

এদিকে জেলা প্রশাসক, মোহাম্মদ শাহরিয়াজ, জানান, পুকুর খনন বন্ধে তারা জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। আর্থিক জরিমানার সঙ্গে জেল প্রদানও করছেন তারা। ভবিষ্যতে পুকুর খনন বন্ধে সরকারি নির্দেশ পালনে তারা তৎপর থাকবেন। শুধু আশ্বাস নয় কৃষিজমি বাঁচাতে ও খাদ্য উৎপাদনে বিরুপ প্রভাব ঠেকাতে পুকুর খনন বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি নাটোরবাসীর।