নিজস্ব প্রতিবেদক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে স্ফীত জোয়ারের পানিতে পটুয়াখালীতে ভেসে গেছে ৫৫ কোটি টাকার মাছ। প্রায় ছয় হাজার পুকুর ও এক হাজার ৬৮১টি ঘেরের মাছ ভেসে যাওয়ায় এ ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লাহ।

জেলার সাগর সংলগ্ন তিন উপজেলা কলাপাড়া, রাঙ্গাবালী ও গলাচিপার বিস্তীর্ণ এলাকার বেড়িবাঁধ উপচে জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে এবং পুকুর মাছের ঘেরও প্লাবিত হয়েছে।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে স্ফীত জোয়ারে পটুয়াখালীর বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জেলার প্রধান প্রধান নদীগুলো বিপৎসীমার ৭৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে, যা গত বছরের ঘূর্ণিঝড় আম্পানের চেয়েও বেশি।

জেলা মৎস্য অফিস জানায়, কলাপাড়া উপজেলায় এক হাজার ৭৪২টি পুকুর ও ৬০৫টি ঘের, দশমিনায় এক হাজার ১৬৭টি পুকুর ও ৬৩টি ঘের, বাউফলে এক হাজার ১৪২টি পুকুর ও ১২৩টি ঘের, সদর উপজেলায় ৭৫৫টি পুকুর, রাঙ্গাবালীতে ৩০৮টি পুকুর ও ৮৫০টি ঘের, মির্জাগঞ্জে ১৮৫টি পুকুর ও ৪০টি ঘের, গলাচিপায় ১০৫টি পুকুর, দুমকিতে ৫০০টি পুকুর প্লাবিত হয়েছে।

রাঙ্গাবালী উপজেলার চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের চরলতা গ্রামের মাছের ঘের মালিক দবির গাজী বলেন, ‘এ বছর ঋণ নিয়ে মাছের ঘের করেছি। ঘেরে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ছয় লাখ টাকার মাছ ছিল। কিন্তু ইয়াসের প্রভাবে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে আমার ঘেরের সব মাছ ভেসে গেছে।’

চালিতাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহিদুর রহমান জানান, চালিতাবুনিয়া একটি ভাঙন কবলিত ও বেড়িবাঁধ হীন এলাকা। অনেক আগে এ এলাকার বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়েছে। বেড়িবাঁধ মেরামত বা সংস্কার না করায় জোয়ারের পানিতে পুরো ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। পুকুর ও ঘেরের মাছ ভেসে গেছে।

যোগাযোগ করা হলে রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাশফাকুর রহমান জানান, অতিরিক্ত জোয়ারের চাপে বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি লোকালয় প্রবেশ করেছে। এতে অনেক পুকুর ও মাছের ঘের তলিয়ে গিয়ে মাছ ভেসে গেছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লাহ জানান, ‘পটুয়াখালীতে ইয়াসের প্রভাবে উচ্চ জোয়ারের পানিতে পুকুর ও ঘের প্লাবিত হওয়ায় মাছ চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত মাছ চাষিদের তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে তা চাষিদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।’

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ