ইউসুফ আলী সুমন, মহাদেবপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার এমপি বলেছেন, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ না করলে মানুষের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। পৃথিবী ও মানুষের অস্তিত্ব রক্ষায় পরিযায়ী পাখির অভয়াশ্রমসহ জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, আমরা যে বিশ্বে বাস করি, সেখানে প্রতিটি প্রাণী পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল, এই বাস্তুতন্ত্রে প্রতিটি প্রজাতির আলাদা আলাদা ভূমিকা আছে। শুক্রবার সকাল ৯ টায় নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার আত্রাই নদীর মধুবন এলাকায় পরিযায়ী পাখির অভয়াশ্রম পরিদর্শনে এসে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, পরিবেশ ও পর্যটনকে উৎসাহিত করার জন্য পরিযায়ী পাখি ও আবাসস্থল সংরক্ষণে সরকার কাজ করে যাচ্ছ। নিজ নিজ অবস্থান থেকে স্থানীয় ও পরিযায়ী পাখি সংরক্ষণের গুরুত্ব সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে হবে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় পরিযায়ী পাখির ইতিবাচক ভূমিকা সম্পর্কে বিজ্ঞানি ও পরিবেশবিদসহ স্থানীয় সকলকে সোচ্চার হতে হবে। পাখি শিকার, পাচার ও নিধন বন্ধ না করতে পারলে অনেক প্রজাতির পাখি বিলুপ্ত ও বিপন্ন হয়ে যাবে।

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলা করে উন্নত দেশ গড়ার প্রত্যয়ে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে উপমন্ত্রী বলেন, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মৌলিক নীতি হিসেবে সংবিধানে স্বীকৃত। বর্তমান সরকার বন্যা, ঘূর্ণিঝড়সহ বিভিন্ন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সফলতার সাথে কাজ করছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি হ্রাসেও সরকার বিভিন্ন ধরণের অভিযোজন ও প্রশমনমূলক কার্যক্রম নিরলসভাবে বাস্তবায়ন করছে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন নওগাঁ-৩ (মহাদেবপুর-বদলগাছী) আসনের সংসদ সদস্য ছলিম উদ্দীন তরফদার সেলিম, আঞ্চলিক বন সংরক্ষক ছানাউল্যা পাটওয়ারী, পরিবেশবাদী সংগঠন বিবিসিএফ এর প্রতিষ্ঠাতা ও আঞ্চলিক বন সংরক্ষক মোল্যা রেজাউল করিম, বিবিসিএফ এর সভাপতি ড. এসএম ইকবাল, উপজেলা চেয়ারম্যান আহসান হাবিব ভোদন, ইউএনও মিজানুর রহমান মিলন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসমা খাতুন, কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায়, স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠন প্রাণ ও প্রকৃতি’র সভাপতি কাজি নাজমুল হক প্রমুখ। পরিযায়ী পাখির অভয়াশ্রম পরিদর্শন শেষে উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে মুজিববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ বিষয়ক আলোচনা সভায় উপমন্ত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।

উল্লেখ্য, আত্রাই নদীর মধুবন ও কুঞ্জবনসহ কয়েকটি এলাকার প্রায় তিন কিলোমিটার জুড়ে ২০১২ সাল থেকে শীতকালে অল্পসংখ্যক পরিযায়ী পাখি আসতে থাকে। মানুষের মাঝে সচেতনতা না থাকায় কিছু মানুষ প্রথম বছর বিভিন্নভাবে পাখি শিকারের চেষ্টা করে। কিন্তু ২০১৩ সালে আবারও পাখিরা আসতে শুরু করলে ‘প্রাণ ও প্রকৃতি’র সভাপতি কাজি নাজমুল হকসহ স্থানীয় কিছু প্রকৃতি প্রেমী যুবক স্বেচ্ছাশ্রমে পাখিদের জন্য বাঁশ, কচুরিপানা, গাছের ডালপালা দিয়ে অভয়াশ্রম গড়ে তোলেন। প্রতি শীতে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি এখানে আশ্রয় নেয়।

 

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ