এগ্রিকেয়ার প্রতিবেদক: শতাধিক সবজির সমাহার, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিষমুক্ত সবজি কেনার সুযোগ, প্রচলিত, অপ্রচলিত সবজির সাথে পরিচিতসহ নানা আয়োজনে ভরপুর থাকা জাতীয় সবজি মেলা শেষ হয়েছে। এছাড়া সবজি চাষে অবদানেও দেয়া হয় স্বীকৃতি ও পুরুস্কার।

রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ চত্বরে তিনদিন ব্যাপি এ ‘জাতীয় সবজি মেলা ২০১৮’ গত রোববার শুরু হয়ে মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) হয়।

মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ্ বলেন, জাতীয় সবজি মেলা সবার মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। সবজি উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে এ মেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এ মেলায় প্রায় ৬০ লাখ টাকার সবজি বিক্রি হয়েছে।

তিনি বলেন, সংরক্ষণের কারণে আমাদের অনেক সবজি নষ্ট হয়ে যায়। এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। ফসল বিন্যাসের মাধ্যমে নতুন প্রযুক্তি দিয়ে আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। মানসম্পন্ন সবজি উৎপাদন করে সবজি রপ্তানির আহবান জানান তিনি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পিপিসি) মোহাম্মদ নজমুল ইসলাম বলেন, আমাদের সবজির বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৩কোটি মেট্রিক টন, উৎপাদন হচ্ছে  ১কোটি মেট্রিক টন। উন্নতজাত ও গবেষণার মাধ্যমে উৎপাদন বাড়িয়ে এ চাহিদা পূরণ করতে হবে। 

সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সবজি চাষে অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ ব্যাক্তি, প্রতিষ্ঠান, জেলা ও মেলায় অংশগ্রহনকারী স্টলের মধ্যে পুরষ্কার বিতরণ করেন। পুরষ্কার হিসেবে ছিলো ক্রেষ্ট, সনদ ও নগদ টাকা।  জাতীয় পর্যায়ে ২০১৭ সালে শাকসবজি আবাদে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার মোছাঃ নূরুন্নাহার বেগমকে প্রথম পুরস্কার প্রদান করা হয়।

দ্বিতীয় হয়েছেন বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মোঃ মিজানুর রহমান। তৃতীয় হয়েছেন খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার নবদ্বীপ মল্লিক। বিশেষ পুরস্কার পান ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ উপজেলার মোছাঃ মনোয়ারা বেগম ও সিরাজগঞ্জ সদরের মোঃ আব্দুস সাত্তার।

এছাড়াও বাড়ির ছাদে শাকসবজি আবাদে বিশেষ অবদানের জন্য ব্যক্তি পর্যায়ে ঢাকার ধানমন্ডি এলাকার ডা. ফেরদৌস আরা চৌধুরী, মোহাম্মদপুরের মোহাম্মদ লুতফর রহমান ও  মোঃ মোশারফ হোসেনকে বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হয়।

শাকসবজি উৎপাদনে হেক্টর প্রতি গড় ফলন সর্বোচ্চ ও দেশের সবজির চাহিদা পূরনে বিশেষ অবদান রাখায় মুন্সীগঞ্জ জেলাকে প্রথম, দ্বিতীয় জয়পুরহাট ও গাইবান্ধা জেলাকে তৃতীয় পুরস্কার প্রদান করা হয়।

স্টলের যথার্থতা, সাজসজ্জা, প্রদর্শিত দ্রব্যের মান ও পরিমান, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা ও স্টলের উপস্থাপন করে জাতীয় সবজি মেলা ২০১৮ এ অংশগ্রহনকারী স্টলগুলোর মধ্যে সরকারি পর্যায়ে প্রথম হয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, যৌথভাবে দ্বিতীয় হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) এবং তৃতীয় হয়েছে হর্টেক্স ফাউন্ডেশন। বেসরকারি পর্যায়ে প্রথম হয়েছে মেটাল এগ্রো লিমিেিটড,  দ্বিতীয় হয়েছে লাল তীর সীড লিমিটেড এবং যৌথভাবে তৃতীয় হয়েছে ব্রাক সীড এন্ড এগ্রো এন্টারপ্রাইজ ও সোলারগাও। মেলায় অংশগ্রহনকারী অন্যান্য সকল প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়।

মেলায় মোট ৫৭টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহন করে। এবারের মেলার প্রতিপাদ্য ছিলো সারা বছর সবজি চাষে, পুষ্টি-স্বাস্থ্য-অর্থ আসে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. আব্দুল আজিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হর্টিকালচার উইং এর পরিচালক মিজানুর রহমান। কৃষি মন্ত্রণালয়ের আয়েজনে তৃতীয়বারের মতো এই মেলা অনুষ্ঠিত হলো।

 

বাংলাদেশ সময়: ঘণ্টা, ১৭ জানুয়ারি ২০১৮