ফসল ডেস্ক, এগ্রিকেয়ার২৪.কম: পানিবন্দি জমিতে কাঁদার মধ্যেই আলু তুলছেন জয়পুরহাটের আলুচাষিরা। পানি জমার কারণে আলু নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় পড়েছেন চাষিরা। তবে কৃষি কর্মকর্তা বলছেন, জমে থাকা পানি দ্রুত অপসারণ করলে আলুর তেমন ক্ষতি হবে না।

গতকাল শুক্রবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জয়পুরহাট সদর, ক্ষেতলাল ও কালাই উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

মাঘ মাসে হঠাৎ বৃষ্টিতে শঙ্কিত জয়পুরহাটের আলুচাষিরা। বৃষ্টি বেশি হলে জমিতে পানি জমে আলু নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

ক্ষেতলালের বিনশিরা মাঠে পাকরি আলু তুলছেন রফিকুল ইসলাম ও তার মা। রফিকুল ইসলাম বলেন, টানা গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির কারণে জমিতে পানি জমে গেছে। এই আলু তোলার এখনো সময় হয়নি। কিন্তু বৃষ্টির পানি বের করে দেওয়ার কোনো উপায় নেই। পানি জমিতে থাকলে আলু পচে নষ্ট হয়ে যাবে। এজন্য কাঁদার মধ্যে আলু তোলা হচ্ছে। পরে তা পানিতে ধুয়ে নিতে হবে।

কালাইয়ের থুপসারা গ্রামের আলুচাষি রবিউল ইসলাম, রনি হোসেন বলেন, এমনিতেই বাজারে আলুর দাম কম। প্রতি বিঘায় ২ থেকে ৩ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। তার ওপর বৃষ্টির পানি। আলুর খেত নিমজ্জিত হওয়ায় জমিতে পানি জমেছে। আলুর জমিতে পানি জমে থাকলে পচন ধরবে। এতে আলুর ব্যাপক ক্ষতি হবে।

সদরের বম্বু ঘোনাপাড়া গ্রামের আলুচাষি আবদুল খালেক বলেন, নিজের ২ বিঘা এবং বর্গা নেওয়া ৩ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। ইতোমধ্যে এক বিঘা জমির আলু বিক্রি করে প্রায় ৩ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। এখন বৃষ্টির কারণে আলুতে পচন ধরলে পথে বসতে হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় এবার ৪০ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আলু রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৭ হাজার ১০০ হেক্টর, পাঁচবিবিতে ৭ হাজার হেক্টর, কালাইয়ে ১১ হাজার ১০০ হেক্টর, ক্ষেতলালে ৯ হাজার হেক্টর ও আক্কেলপুরে ৬ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ৩টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত জেলায় ১৭.৬ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। রাত থেকে বৃষ্টি হওয়ায় জমিতে পানি জমেছে।

তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে মাঠ থেকে কিছু আলু তোলা হয়েছে। বৃষ্টির হওয়ায় আলুর জমিতে পানি জমেছে। তবে কৃষকরা পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করছেন। জমে থাকা পানি দ্রুত অপসারণ করলে এবং বৃষ্টি না হলে তেমন ক্ষতি হবে না।

 

এগ্রিকেয়ার/এমএইচ